সোনারগাঁয়ে সীমানা জটিলতার দ্বিধাদ্বন্দ্বে বিএনপি প্রার্থীরা

এম মাহমুদ
প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম

সোনারগাঁয়ে সীমানা জটিলতার দ্বিধাদ্বন্দ্বে বিএনপি প্রার্থীরা
সোনারগাঁয়ের বিএনপির রাজনীতিতে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান একক নিয়ন্ত্রক সাঁজলেও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনটি (সোনারগাঁ-বন্দর) উপজেলা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত খসড়া সীমানা পরিবর্তনের প্রস্তাবনা ঘোষিত হওয়ার পর থেকেই মান্নানের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। সেই সাথে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে শিক্ষাগত যোগ্যতা নূন্যতম ডিগ্রি পাশ করার জন্য স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন সুপারিশ করায় এখনো সেই সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে মান্নানের নির্বাচন নিয়ে অস্থিরতা কিছুতেই কমছে না স্বশিক্ষিত বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মান্নানের।
অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনটি সোনারগাঁ উপজেলা নিয়ে গঠিত হলেও সীমানা পরিবর্তন করে বন্দর উপজেলা ও সোনারগাঁ উপজেলার সাথে সংযুক্ত করায় অস্থিরতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে মান্নানের কারণ ভোটের মাঠে এবং মনোনয়ন দৌড়ে সোনারগাঁয়েই তার গ্রহণযোগ্যতা তলানীতে বন্দরে তার অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। যার কারণে মান্নানের রাজনৈতিক এবং নির্বাচনী প্রস্তুতি স্থবিরতা দেখা গিয়েছে। এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা পুরো দস্তরে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তাছাড়া সোনারগাঁয়ের সাথে বন্দর সংযুক্ত করে সীমানা পরিবর্তন চূড়ান্ত হয়ে গেলে এসকল প্রার্থীরা বন্দরেও নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিবেন।
সূত্র বলছে, ২০০৮ সালে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনটি প্রথমবারেরমত (সোনারগাঁ-সিদ্ধিরগঞ্জ) এলাকা নিয়ে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ২০১১ সালে সিদ্ধিরগঞ্জ সদর বন্দর এলাকা নিয়ে সিটি করপোরেশন গঠিত হলে এবং ২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন (সোনারগাঁ) আসনটি একক ভাবে আবারও দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই আলোকে ২০১৮ সালের একাদশ এবং ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে সোনারগাঁ উপজেলা এলাকা নিয়েই অনুষ্ঠিত হয়।
কিন্তু ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফের সীমানা পরিবর্তন নিয়ে ফের ধুম্রজাল সৃষ্ট হয়েছে। কারণ জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে দেশের ৩৯টি আসনে সীমানা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরমধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৩,৪,৫ আসনের সীমানা পরিবর্তনে চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশ করেন। সীমানা পরিবর্তনের খসড়ায় দেখা যায় নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনটি সোনারগাঁ-বন্দর উপজেলাকে একীভূত করা হয়েছে।
কিন্তু এভাবে সীমানা পরিবর্তনে খসড়া দেখে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আজহারুল ইসলাম মান্নানের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। কারণ তার সোনারগাঁ উপজেলায় বিএনপির হয়ে রাজনৈতিক ময়দানে গ্রহণযোগ্যতা থাকলেও ভোটের মাঠে গ্রহণযোগ্যতা নেই। এরমধ্যে বন্দরে তার রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা এবং ভোটে মাঠে পরিচিতি নেই বললেই চলে। তবে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সাংসদ বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী রেজাউল করিমের বন্দরেও তার রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা এবং ভোটের মাঠে পরিচিতি রয়েছে সোনারগাঁয়ে সাবেক সাংসদ হিসেবে।
অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের মনোনয়ন অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশী সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার আবু জাফর, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক এসএম ওয়ালিউর রহমান আপেল, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও জামপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শিল্পপতি আল মুজাহিদ মল্লিক তাদের জন্মস্থান বন্দর আসনের নিকটবর্তী এলাকার পাশে হওয়ায় বন্দর এলাকায় তাদের নুন্যতম পরিচিতি রয়েছে।
এছাড়া তারা বর্তমানে সোনারগাঁ উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় ৩১দফা লিফলেট প্রচার করে সাথে নির্বাচনী প্রচারও করছেন। তবে তারা চূড়ান্ত সীমানা পরিবর্তনের দিকে তাঁকিয়ে আছেন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যদি নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন (সোনারগাঁ-বন্দর) নিয়েই গঠিত হয় তারা বন্দর উপজেলা থেকে রাজনৈতিক কার্যক্রম এবং নির্বাচনী প্রচার করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিবেন।