Logo
Logo
×

রাজনীতি

বড় পদের আ.লীগ নেতারা গ্রেপ্তার না হওয়ায় শঙ্কা

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম

বড় পদের আ.লীগ নেতারা  গ্রেপ্তার না হওয়ায় শঙ্কা

বড় পদের আ.লীগ নেতারা গ্রেপ্তার না হওয়ায় শঙ্কা

Swapno

নারায়ণগঞ্জকে আওয়ামীলীগের কোন কোন নেতা উপাধি দিতেন নারায়ণগঞ্জ হলো আওয়ামীলীগের সূতিকাগার, জন্মস্থান, আঁতুড়ঘর। আর এই উপাধির সাথে পালাক্রমে নারায়ণগঞ্জে তৈরী হয়েছিল আওয়ামীলীগের বহু প্রভাবশালী নেতা, এমপি, মন্ত্রী। গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারসহ গোটা আওয়ামী লীগ নেতার পলাতক রয়েছেন। তবে নানাসময়ে আড়ালে আবডালে থেকে সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে নানা ফন্দিফিকির করে যাচ্ছেন। নারায়ণগঞ্জের বেশিরভাগ শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতার নামেই হত্যা, হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। তবে ৫ আগস্টের পর এক বছর অতিক্রান্ত হলেও এখনো আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ, মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নারায়ণগঞ্জ মহানগর ও জেলার নেতাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভবপর হয়নি। ফলে এক এলাকার আওয়ামী লীগ নেতাকে আরেক থানায় দেখা যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে নানা অপকর্ম করার পায়তারা আটছে এমনটি জানিয়েছে বেশ কয়েকটি সূত্র। সূত্র জানিয়েছে, আগস্ট মাসকে ঘিরে সক্রিয় হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।


সোনারগাঁ, আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ এলাকার বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাকে গা ঢাকা দিয়ে নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জে চলাচল করতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে সূত্র। নারায়ণগঞ্জের একটা বিশাল অংশের আওয়ামী লীগ নেতারা কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, চাঁদপুর, ঢাকা ও কেরানীগঞ্জে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে সূত্র। মাঝে মাঝে বেশ কিছু নেতাকে আচমকা নারায়ণগঞ্জে ভীড়ে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে। শামীম ওসমানের বেশিরভাগ অনুসারি ভারত, দুবাই, মালেয়শিয়া, তুরস্কে অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে সূত্র। মধ্যসারি এবং নিচের সারির নেতারা শহর ও শহরতলীর আশেপাশেই গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। হোয়াটঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, ফেসবুকসহ সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে দেশের বাইরে থাকা পাওয়া নানা নির্দেশনায় নির্বাচনের আগে অস্থিতিকর পরিবেশ তৈরির ফন্দিফিকির আটছে বলে জানিয়েছে সূত্র। তাই নির্বাচনের আগে হত্যা মামলার আসামি, দমন, নিপীড়নে মোটা দাগে জড়িত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানোর দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।


জানা গেছে, ক্ষমতায় থাকাকালীন  নারায়ণগঞ্জের এসব শীর্ষ নেতারা শেখ মজিবুর রহমানকে তার মৃত্যুবার্ষিকীতে নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী নেতাদের সকল প্রভাবের সক্ষমতাকে জাহির করার সুযোগ হিসেবে দেখতেন। তবে টানা ১৭ বছর পর আওয়ামীলীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গত বছরের শোক দিবস পালন করেছিলেন নারায়ণগঞ্জ থেকে দুইজন নেতার নেতৃত্বে। ২০২৫ সালের ১৫ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা জুড়ে আওয়ামীলীগ নেতাদের তাদের আদর্শিক নেতার মৃত্যুবার্ষিকী পালনে কোন অস্থিত্বের দেখা মিলেনি। এতে তার প্রতিয়মান করেছে ক্ষমতার প্রভাবে এসকল নেতারা প্রভাবশালী হিসেবে নিজেকে জাহির করলেও ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভীত সংকিত হয়ে শোক দিবস পালনে রাজপথে নামার সাহসিকতা দেখানি। এরমধ্যে সোনারগাঁয়ে কায়সার হাসনাতের একজন সমর্থক অন্তু সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকায় কায়সার হাসনাতের ছবি সম্বলিত ১৫ আগস্টের একটি লিফলেটসহ রান্না করা খাবার রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে থামিয়ে বিতরণ করেছেন।


সূত্র বলছে, ২০২৪ সালে ছাত্র জনতার আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের নেতাদের থেকে শুরু করে এমপি, মন্ত্রীরা প্রকাশ্যে ছাত্র জনতার উপর অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। তাদের হামলায় বহু ছাত্র জনতা তাৎক্ষণিক মৃত্যুবরণ করেন। তবে ৫ আগস্টে আওয়ামীলীগের পতনে বিক্ষুদ্ধ জনতার প্রতিক্রিয়া দেখা নারায়ণগঞ্জের বহু আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা থেকে শুরু করে এমপি মন্ত্রী দেশত্যাগ করেন এবং আত্মগোপনে চলে যান। কারণ ২০২৪ সালে ছাত্র জনতার আন্দোলনে ছাত্র জনতার উপর অস্ত্র দিয়ে হামলায় বহু ছাত্র জনতার মৃত্যু ঘটে। আর এর দায় এড়ানো এবং ছাত্র জনতার হত্যার শাস্তি থেকে বাঁচতে দেশত্যাগ বা আত্মগোপনে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রভাবশালী নেতা থেকে শুরু করে এমপি মন্ত্রীরা।


কারণ ৫ আগস্টের পর থেকেই আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী এমপি মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দেন জুলাইয়ের আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জে নিহত স্বজনদের পরিবাররা। যার ফলে সেই ২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট এবং ২০২৫ সালের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত লাপাত্তা আওয়ামীলীগের অধিকাংশ এমপি মন্ত্রীরা। এরমধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই এবং সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো শহীদ বাদল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন,সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা,সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, মহানগর যুবলীগের সভাপতি সাজনু, মাহমুদা মালা, যুগ্ম সম্পাদক জি এম আরাফাত, সহ-সভাপতি বাবু চন্দন শীল এমন বহু আওয়ামীলীগ নেতা আত্মগোপনে রয়েছেন। এছাড়া সাংসদের মধ্যে শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু দেশত্যাগ করেছেন। গোলাম দস্তাগীর গাজী গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করছেন এবং কায়সার হাসনাত, সেলিম ওসমান ঢাকায় এখনো আত্মগোপনে রয়েছেন। তবে এসকল নেতা এমপিরা আওয়ামীলীগের শাসন আমলে জনসাধারণের উপর নানা ভাবে সুকৌশলে অত্যাচার নিপীড়ন করেছেন। এছাড়া জুলাই আন্দোলনে তাদের নেতৃত্বে বহু ছাত্র জনতা আহত এবং নিহত হয়ে। তাদের এসকল অপকর্মের দায়ে নিজেরাই এখন ভীত সংকিত হয়ে নিজেদের আত্মগোপন করে রেখেছেন। তবে আড়ালে থেকেই নির্বাচনের আগে নানা অপতৎপরতা চালানোর ফন্দিফিকিরের নির্দেশনা দিচ্ছেন নানাজনকে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন