আগের গতি হারিয়েছে জেলা যুবদল-স্বেচ্ছাসেবকদল

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম

আগের গতি হারিয়েছে জেলা যুবদল-স্বেচ্ছাসেবকদল
নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবকদলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা গ্রুপিং বলয় ভিত্তিক রাজনীতিকে প্রাধান্য দিয়ে সংগঠন পরিচালনা করায় নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদল-স্বেচ্ছাসেবকদলের গতি হারিয়েছে। উভয় সংগঠনেই দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন শীর্ষ নেতা থাকা সত্ত্বে একে অপরের বলয় ভিত্তিক প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছেন। কেননা যুবদল-স্বেচ্ছাসেবকদলের দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন নেতাই পৃথক পৃথক গ্রুপিং বলয় ভিত্তিক রাজনীতিকে স্বীকৃতি দিতে গিয়ে সংগঠন হয়েছে তছনছ।
সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের তিন পদ বিশিষ্ট তিন নেতায় আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হলেও কমিটির বছরের অধিক অতিক্রম করে এখনো তিনজনে সীমাবদ্ধ রয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদল। নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক, সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক খাইরুল ইসলাম সজীব। তারা প্রত্যেকেই যুবদল ব্যতীত নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী বিএনপির তিন নেতার বলয়ে বিভক্ত হয়ে রাজনীতি করছেন। যেমন: সাদেকুর রহমান সাদেক বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের নেতৃত্বে রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। মশিউর রহমান রনি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূইয়ার বলয়ে থেকে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত রয়েছেন রনি। খাইরুল ইসলাম সজীব বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ এবং তার পিতা আজহারুল ইসলাম মান্নানের বলয়ে থেকে যুবদলের রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন।
এই তিন নেতা নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাদের বলয় ভিত্তিক রাজনীতিকে যুবদলের সাংগঠনিক রাজনীতিতে প্রবেশ করানোয় সংগঠনে গতি হারিয়েছে। তাছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদল দুর্বল সংগঠনে পরিণত হচ্ছে। তাছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদল দীর্ঘসময় অতিক্রম করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে ব্যর্থ হওয়ায় কেন্দ্রীয় যুবদলের আহ্বাক মোনায়েম মুন্না এবং নরুল ইসলাম নয়নের বরাতে একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৭দিনের মধ্যে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করে কেন্দ্রে জমা দেয়া কথা থাকলেও পরবর্তীতে নানা অযুহাতে ফের সময় নিয়ে কালক্ষেপণ করে। এখনো নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের ৫১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণ কমিটির খসড়া জমা দিতে পারেনি। যার কারণে জেলা যুবদল বর্তমানে ভঙ্গুর দশায় রয়েছে। যেকোন বর্তমান জেলা যুবদল কমিটি বিলুপ্তি ঘটতে পারে।
অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবদলের কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন মাহাবুব রহমান, সদস্য সচিব সালাউদ্দিন সালু, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রফিক। তারা প্রত্যেকেই পৃথক পৃথক বলয়ে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকায় স্বেচ্ছাসেবকদলের কমিটি হওয়ার পর থেকেই জেলা স্বেচ্ছাসেবকদল দুভাগে বিভক্ত। সূত্র বলছে, মাহাবুব রহমান হচ্ছেন রূপগঞ্জের কাজী মনিরুজ্জামান বলয়ের এবং সালাউদ্দিন সালু রূপগঞ্জের মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূইয়া বলয়ের রফিকুল ইসলাম রফিকও মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূইয়ার বলয়ের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকার কারণে সালু-রফিক দিপু বলয়ের হয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে রাজনীতি করলেও মাহাবুব রহমান প্রতিপক্ষ বলয়ের হওয়ার সংগঠন পরিচালনায় তাদের রয়েছে চরম বিভক্তি । শুধু সংগঠনই নয় রাজনৈতিকভাবে একে অপরের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছেন।
কেননা সম্প্রতি রূপগঞ্জে মামুন নামে যুবদল নেতার ভাই নিহত হওয়ার ঘটনায় মাহাবুবের ভাতিজা পরিচয়ে ছাত্রদল নেতা বাবুকে আখ্যায়িত করে হত্যায় হুকুম দাতা হিসেবে জাহির করতে চেয়েছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূইয়ার বলয়ের নেতাকর্মীরা। হত্যায় হুকুম দাতা হিসেবে মাহাবুবকে জাহির করাতে অন্যতম ভূমিকা রাখছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রফিক এমনটাই মাহাবুবসহ কাজী মনিরুজ্জামানের বলয়ের নেতারা দাবি করছেন। যেটা মাহাবুবকে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ফাঁসানোর প্রেক্ষিতে একটি মানববন্ধন স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতাকর্মীরা করলে সেখানে রফিককে কেন্দ্র করে নানা রকম বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতারা এবং রফিকের বহিষ্কারের দাবি করেন। মূলত, একই সংগঠনে বলয় ভিত্তিক রাজনীতির প্রভাব এবং দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিভাজনে হত্যা নিয়ে বলয় ভিত্তিক রাজনীতি করেছে দাবি স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতাদের। তাছাড়া বর্তমানে জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলে কমিটি গঠনের পর পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি গঠন ছাড়া কোন প্রকার অর্জন নেই। তাছাড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের বর্তমান নেতৃত্বে থাকা নেতাদেও বলয় ভিত্তিক প্রভাবে জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলে সাংগঠনিক গতি বাড়াতে কেন্দ্র থেকেও তেমন নির্দেশনা দিচ্ছে না। জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের অগ্রভাগের নেতাদের দাবি, এই বলয় ভিত্তিক রাজনৈতিক প্রভাবে কেন্দ্রীয় যে টিম নারায়ণগঞ্জ জেলা নিয়ে কাজ করছে। তারাও বলয় ভিত্তিক রাজনীতির প্রভাবে তটস্থ হয়ে যায়। যার ফলে কেন্দ্র জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের বর্তমান কমিটির নেতৃত্ব পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছেন।