সীমানা নিয়ে আপত্তি জানানো মনোনয়ন প্রত্যাশীরা শুনানির অপেক্ষায়

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম

সীমানা নিয়ে আপত্তি জানানো মনোনয়ন প্রত্যাশীরা শুনানির অপেক্ষায়
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩৯টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন করে নতুন সীমানার খসড়া প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। খসড়া প্রকাশের পর ১০ আগস্ট পর্যন্ত আপত্তি জানানোর সুযোগ পান। পরবর্তীতে গত ১৮ আগস্ট নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়। নারায়ণগঞ্জের তিনটি আসনের শুনানি করবে সীমানা পুনর্র্নিধারণের আগামী ২৬ আগস্ট শুনানি করবে নির্বাচন কমিশন। ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্বাচন ভবন অডিটোরিয়ামে সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
সূত্র বলছে, নতুন খসড়া সীমানা অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ ও বন্দর উপজেলা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন, ফতুল্লা থানার পাঁচ ইউনিয়নের সাথে গোগনগর ও আলীরটেক ইউনিয়ন যুক্ত করে নারায়ণগঞ্জ-৪ ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন গঠন করা হয়েছে। এভাবে আসন সিমানা নির্ধারণ বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বিভিন্ন রকম মতামত ব্যক্ত করেছিলেন। সেই সাথে এই সীমানা পরিবর্তনের বিপরীতি আপত্তিও জানান নারায়ণগঞ্জ জেলায় বিভিন্ন রাজনৈতিকদলের আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। সূত্র মতে, নির্বাচন কমিশনের খসড়া প্রকাশের পর নারায়ণগঞ্জের যেসকল রাজনৈতিক নেতারা আপত্তি জানান।
এরমধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সাবেক আমীর এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ঘোষিত প্রার্থী মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমাদ ৬ আগস্ট ইসিতে মতামত জমা দেন। তিনি বন্দর উপজেলাকে স্বতন্ত্র আসন ঘোষণার দাবি জানান এবং প্রয়োজনে সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়ন যুক্ত করার প্রস্তাব দেন। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কালামও বন্দরকে ভাগ করার সুপারিশে লিখিত আপত্তি দিয়েছেন। জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিও দলীয়ভাবে মতামত দিয়েছে বলে জানান দলটির জেলা সমন্বয় কমিটির প্রধান ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল আমিন। এছাড়া বন্দরকে দুইভাগ করার প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে লিখিত মতামত পাঠিয়েছেন মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ও নাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। বন্দর উপজেলার অন্তত ২০০ ব্যক্তির স্বাক্ষরসহ আপত্তিপত্র জমা দিয়েছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শরীফুল ইসলাম শিপলু। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বর্তমান সীমানা অপরিবর্তিত রাখার দাবি জানিয়ে ইসি সচিব বরাবর চিঠি দিয়েছেন বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলের ছেলে ব্যারিস্টার রিদওয়ানুর রহমান রিকু।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুলাই ইসি প্রকাশিত খসড়ায় দেশের ৩৯টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্র্নিধারণ করা হয়। প্রস্তাবিত খসড়ায় নারায়ণগঞ্জের তিনটি আসন— ৩, ৪ ও ৫-এর সীমানা পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছে। ইসির সুপারিশ অনুযায়ী, সোনারগাঁও উপজেলা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে বন্দর উপজেলা। এতে সোনারগাঁওয়ের দশটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার পাশাপাশি বন্দরের পাঁচটি ইউনিয়নও যুক্ত হবে। এ পাঁচটি ইউনিয়ন বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের আওতায় রয়েছে। নতুন খসড়ায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে বাদ পড়ছে সদর উপজেলার গোগনগর ও আলীরটেক ইউনিয়ন। তবে যুক্ত হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলের নয়টি ওয়ার্ড। ইসির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সবগুলো ২৭টি ওয়ার্ডকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। অন্যদিকে, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন গঠিত হবে সদর উপজেলার ফতুল্লা, কাশিপুর, কুতুবপুর, বক্তাবলী ও এনায়েতনগর ইউনিয়ন এবং নাসিকের সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলের নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে। তবে নতুন খসড়ায় এ আসনের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে সদর উপজেলার গোগনগর ও আলীরটেক ইউনিয়ন। এর ফলে সিদ্ধিরগঞ্জের নয়টি ওয়ার্ড বাদ যাবে, যা যাবে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের আওতায়।