Logo
Logo
×

রাজনীতি

শেষ মুহূর্তে ভোটের সমীকরণে তিন প্যানেলের ৪৭ প্রার্থী

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম

শেষ মুহূর্তে ভোটের সমীকরণে তিন প্যানেলের ৪৭ প্রার্থী

শেষ মুহূর্তে ভোটের সমীকরণে তিন প্যানেলের ৪৭ প্রার্থী

Swapno

আজ নারায়ণগঞ্জ আইনজীবি সমিতির নির্বাচনের প্রচারনার শেষ দিন। এই শেষ সময়ে ভোটারদের নিকটে গিয়ে ভোট চেয়ে প্রচারনা চালাচ্ছেন তিনটি প্যানেলের আইনজীবি ৪৭ জন প্রার্থী। এছাড়া নিজেদের দলীয় ভোটের বাইরে যে সকল ভোটাররা রয়েছে তাদের নিয়ে হিসেব-নিকেষ করছে বিএনপি জামায়াত সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা। এছাড়া একপক্ষ আরেক পক্ষকে করা হুমকি-ধমকি নিয়ে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন বলে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছে। বিশেষ করে জামায়াত ও বিএনপির আরেকটি প্যানেল থেকে অভিযোগ তুলে বলছেন, একটি প্যানেলের লোকজন আইনজীবিদের চোখ রাঙাচ্ছেন। যদিও এমন অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে তোলা হয়েছে তারা তা অস্বীকার করে বলছেন, তাদের লোকজনকে ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে। সব কিছু মিলিয়ে   এদিকে  দীর্ঘ এক যুগ পর নারায়ণগঞ্জ আইনজীবি সমিতিতে স্বতস্ফূর্তভাবে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। যেখানে সকল আইনজীবিরা উৎসব মুখর পরিবেশে আগামী ২৮ আগষ্ট ভোট প্রদান করে তাদের নেতৃত্ব বেছে নিবে। সেই হিসেবে বিএনপি সমর্থিত এড.হুমায়ুন আনোয়ার প্রচারণা পাশাপাশি  ভোটারদের সাথে যোগ্যাযোগ বাড়িয়েছেন। অপরদিকে জামায়াত সমর্থিত প্যানেলের এড. হাফিজ-মাইন উদ্দিন পরিষদের প্রার্থীরা সাধারণ ভোটারদের প্রতি নজর দিয়েছেন। এছাড়া আদালত পাড়ায় সাবেক এমপি আবুল কালাম ও তৃণমূল বিএনপির তৈমুর আলমের  একটি বলয় রয়েছে। তাদের ভোট নিয়ে সমীকরণ করছেন বিএনপির জামায়াত নীল সবুজ প্যানেলের আইনজীবি প্রার্থীরা। তাদের সাথে পাল্লা দিয়ে বিএনপির আরেকটি অংশ এড. রেজাউল করীম খান রেজা ও এড. গোলাম মোর্শেদ গালিবের নেতৃত্বে প্যানেলের প্রার্থীরাও ভোটারদের কাছে টানছেন। এই তিন প্যানেলকে জয়ী হতে হলে নিজেদের প্যানেলের বাহিরে আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবি ভোটারদের পাশাপাশি এড.তৈমুর আলম বলয়ের আইনজীবি ভোটার নিয়ে সমীকরণ করছে। কেননা তাদের ভোটগুলো যেদিকে যাবে ধারণা করা হচ্ছে জয়ের মোড় সেদিকে যেতে পারে। এজন্য সাধারণ আইনজীবি ভোটারদের সাথে অন্যান্য দলের আইনবজীবি ভোট নিয়ে বিশ্লেষণে তিন প্যানেলের প্রার্থীরা।
 
অপরদিকে আজ প্রচার প্রচারণায় শেষ মুহূর্তে তিন প্যানেলর আইনজীবি প্রার্থীরা ব্যস্তময় সময় পার করছেন। সেই সাথে নিজেদের জয়ের ব্যাপারে ভোটার জরীপ নিয়ে সমীকরণে কেউ কারো থেকে পিছিয়ে নেই বলে দাবি প্রচারনায় থাকা প্রার্থীরা। তবে বিএনপির এড. রেজা-গালিব প্যানেলের প্রার্থীরা অনেকটাই নিরবে প্রচারনায় রয়েছেন। এছাড়া নানাভাবে আইনজীবিদের থেকে ভোট টানার চেষ্টা করছেন। তবে শেষ পর্যায়ে এসে তারা কতটুকু মাঠে টিকে থেকে ভোটার টানতে পারবে সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে আইনজীবিরা। নির্বাচিত হলে আইনজীবিদের নিয়ে কি ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে তা নিয়ে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তাছাড়া বিগত এক যুগেও এত উৎসব মুখর নির্বাচনি পরিবেশ দেখা যায় নাই আদালতপাড়ায়। এবারের নির্বাচনে তিনটি প্যানেল থেকে ৪৭ জন প্রার্থী থাকায় আদালতপাড়ায় নিবার্চনে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে ।

বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেলের এড. হুমায়ুন-আনোয়ার পরিষদের প্রার্থীরা ভোটের ধারে ধারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করে যাচ্ছেন। অন্্যদিকে তাদের সাথে পাল্লা দিয়ে পিছিয়ে নেই জামায়াত সমর্থিত সবুজ প্যানেলে এড. হাফিজ-মাইন উদ্দিন পরিষদের প্রার্থীরা। তারাও ভোটারদের মনজয়ে কোন অংশে পিছিয়ে নেই। এছাড়া বিএনপির আরেকটি অংশ এড. রেজাউল করীম খান রেজা-দুলাল মোর্শেদ গালিব প্যানেলের প্রার্থীরাও ভোটারদের কাছে ছুটছেন। আদালত পাড়ায় এখন ভোটারদেরও গুরুত্ব বেরেছে। তাছাড়া গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটদানের পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় ভোটাররাও খুশি। তিনটি প্যানেলের প্রচারণায় সারাক্ষণ মুখর থাকছে নারায়ণগঞ্জের আদালতপাড়া। দলবদ্ধভাবে মিছিল করেও ভোট চাইছেন তারা।  কিন্তু তাদের প্রচারনা আজকেই শেষ হতে যাচ্ছে। আইনজীবীদের মধ্যেই বিরাজ করছে উৎসবমুখর আমেঝ। প্রায় সকল আইনজীবীরাই নির্বাচনকে স্বাগত জানাচ্ছেন। সকলেরই প্রত্যাশা যেন নির্বাচন হয় এবং সকলেই যেন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন। আগামী ২৮ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
 
জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ফোরামের সভাপতি প্রার্থী এড. সরকার হুমায়ুন কবির বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর উৎসব্ মুখর পরিবেশে নারায়ণগঞ্জ আইনজীবি সমিতিতে নিব্র্চান হতে যাচ্ছে। বিগত সরকারের আমলে এত উৎসব মুখর ভাবে নির্বাচন হয় নাই। কেননা তারা তখন একক ভাবে প্যানেল দিয়ে জোর করে ব্যালট বাক্স বরে পাশ হয়ে যেতেন। কিন্তু এবারের নির্বাচন অনেক ভিন্ন রকম হতে যাচ্ছে। এবার আইনজীবি পরিষদে স্বচ্ছ নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। আর এই নির্বাচনে আমরা আইনজীবিদের কাছে গিয়ে ভোট চেয়ে তাদের আস্থা অর্জন করছি। তাই তারা আমাদের প্যানেলকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে বলে বিশ্বাসী।’

বিএনপি বিদ্রোহী প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী এড.রেজাউল করীম খান রেজা বলেন, ‘আমাদের প্যানেলে যেই কয়জন রয়েছে তাদেরকে নিয়েই নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত থাকবো। আইনজীবীদের কাছ থেকে আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। আমরা কোন রক্তচক্ষুকে ভয় করিনা। নির্বাচনেরে শুরু থেকে সকল স্তরের মানুষের ভালোবাসা ও সমর্থন আমরা পাচ্ছি। আশা করি আমাদের প্যানেলের সকলেই ভালো ফলাফল করবে। নির্বাচনী যেই আমেজ তৈরি হয়েছে এটি আইনজীবী সমিতির সকলের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল। প্রার্থী বেশি হলেও ভালো ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থীরাই নির্বাচনে জয়ী হবে। আমাদের  জয়ী হওয়ার মতো সকল যোগ্যতা রয়েছে, ভোটাররা আমাদের উপর আস্থা রাখবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি।’

জামায়াত সমর্থিত সবুজ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী এড. মঈন উদ্দীন মিয়া বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত ভোটারদের কাছ থেকে অভিযোগ পাচ্ছি তাদেরকে টেলিফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছে ভোট না দেওয়ার জন্য। কিন্তু আইনজীবি সমিতি নির্বাচনে হুমকি ধমকি দিয়ে কেউ টিকে থাকতে পারবে না। বিগত আওয়ামী লীগের পতন মানুষ দেখেছে। একটি প্যানেল একের পর এক আচরণবিধি লঙ্ঘন করে যাচ্ছে কিন্তু নির্বাচন কমিশনকে জানানোর পরেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। আমরা আইনজীবিদের থেকে ভালো সারা পাচ্ছি, তারা আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার আশ্বাস দিচ্ছে। আশা করি আমাদের প্যানেল জয়ী হবে।’

জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী এড. এইচ এম আনোয়্রা প্রধান বলেন, ‘আমি আইনজীবিদের সাথে দীর্ঘপথ একসাথে থেকেছি। আমি যখন জেল জুলুম নির্যাতন রিমান্ডে থেকে নানা অত্যাচার সহ্য করেছি তখন আইনজীবিরাই আমার পাশে ছিল। এই আইনজীবিরা আমাকে সহ আমাদের পুরো প্যানেলকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন