ঢাকায় আ.লীগ নেতাদের মিছিল কুতুবপুরের বিএনপি নেতারা গ্যাঁড়াকলে

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম
-copy-68ada67f03a93.jpg)
ঢাকায় আ.লীগ নেতাদের মিছিল কুতুবপুরের বিএনপি নেতারা গ্যাঁড়াকলে
রাজধানীর মাওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়াম এলাকায় রোববার (২৪ আগস্ট) আকস্মিক এক মিছিলকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। সাধারণ পথচারীর ছদ্মবেশে অবস্থান নিয়ে হঠাৎ করে স্লোগান শুরু করে একদল লোক। প্রথমে সাধারণ স্লোগান দেওয়া হলেও কিছুক্ষণ পর তারা একযোগে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে শুরু করলে ঘটনাস্থলে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত ধাওয়া দিয়ে তিনজনকে আটক করে। এর মধ্যে দুই জনই ফতুল্লার কুতুবপুরের। তারা হলেন ফতুল্লা থানা এক রাসেল ক্রীড়া পরিষদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাঈদ। এই ঘটনার পরই বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। আটক হওয়া এবং মিছিলে যোগ দেওয়া বেশিরভাগ লোকই নাকি ফতুল্লার কুতুবপুর এলাকা থেকে গিয়েছিলেন। এবং এরা ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল ও কুতুবপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মীর হোসেন মিরুর অনুসারি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এদের মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু বিতর্কিত চরিত্র ও নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি।
বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ দেখে মিছিলে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। তারা হলেন, ফতুল্লা থানা শেখ রাসেল পরিষদের সভাপতি রকিবুল ইসলাম রকি (মীর হোসেন মিরু ও মীর সোহেলের ঘনিষ্ঠ অনুসারী), মিরুর ভাগিনা রিয়াজ, কুতুবপুর ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা ও আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী মালেক,কুখ্যাত চাঁদাবাজ আসলাম,মিরুর বডিগার্ড মুক্তার,সাঈদসহ আরও অনেকে।
এদের অধিকাংশের বিরুদ্ধেই রয়েছে নানা অভিযোগ।কখনও মাদক ব্যবসা, কখনও চাঁদাবাজি, আবার কখনও প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় রাজনীতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এত বিতর্কিত চরিত্রদের ঢাকায় নিয়ে গিয়ে হঠাৎ মিছিল করাল কার নির্দেশে। এই মিছিলে অংশ নেওয়া অধিকাংশ ব্যক্তি কুতুবপুরের বলে জানিয়েছে সূত্র। সবচেয়ে বড় আলোচনার জন্ম দিয়েছে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতির নিজ ইউনিয়ন হচ্ছে কুতুবপুর। আর সেই ইউনিয়নের অসংখ্য ব্যক্তি মিছিল করতে ঢাকায় গিয়ে ধরা পড়েছেন। তাহলে কি কুতুবপুরে আওয়ামী লীগের দোসরা নিরাপদে আছেন? তীব্র সমালোচনা, উত্তপ্ত আলোচনায় এখন কুতুবপুর। ঘটনার পর থেকে কুতুবপুরসহ ফতুল্লার সর্বত্র চলছে তীব্র সমালোচনা। রাজনৈতিক মহলে তোলপাড়।
এই বিষয়ে ফতুল্লা থানা বিএনপি'র সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু জানান, শুধু কুতুবপুর থেকেই নয়, গোটা ফতুল্লা থেকেই তারা গিয়েছিল। আমরা এই বিষয়ে প্রশাসনের সাথে ইতিমধ্যে বসেছি আবার বসবো। গতকালও আমরা দুইজন আওয়ামী দোসরকে ধরে পুলিশে দিয়েছি। তারা হলেন হোসেন ও ইসহাক।শুধু কুতুবপুর নয় গোটা ফতুল্লায় যারা যারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার পরিকল্পনা করছে তাদেরকে আমরা চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। প্রশাসন কে জানিয়েছি তাদের বিরুদ্ধে যেন কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়।
এই বিষয়ে ফতুল্লা থানা বিএনপির সহ-সভাপতি হাজী শহীদুল্লাহ জানান, যারা ঢাকায় মিছিল করেছিল তাদের মধ্যে অনেকেই কুতুবপুড়ের ছিল বলে আমরা জেনেছি। তবে তারা কেউ কুতুবপুরে থাকে না। তারা কেউ ঢাকায় কেউ কেরানীগঞ্জ বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। কুতুবপুরের আওয়ামী লীগের দোসর ও ষড়যন্ত্রকারী ৫ আগস্টেই পালিয়ে গিয়েছে।
এ বিষয়ে কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজরুল ইসলাম মাদবর বলেন, কুতুবপুরের বলে যাদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে মিছিলে তারা কেউ এখন আর কুতুবপুরে থাকে না। যারা আওয়ামী লীগের শাসনামলে সাধারণ মানুষদেরকে অত্যাচার নিপীড়ন করেছে তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।কুতুবপুর বিএনপির ঘাটি।আমরা প্রশাসনকে অবগত করেছি তারা যেন আরো কঠোর হন এ ব্যাপারে।