Logo
Logo
×

রাজনীতি

মান্নানের বেফাঁস মন্তব্য খেঁপেছেন বন্দরবাসী

Icon

লতিফ রানা

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম

মান্নানের বেফাঁস মন্তব্য  খেঁপেছেন বন্দরবাসী

মান্নানের বেফাঁস মন্তব্য খেঁপেছেন বন্দরবাসী

Swapno

# সন্ত্রাসীদের সাথে সোনারগাঁয়ের মানুষ ভোটে অংশ নিবে না বলে মন্তব্য

# ভুল স্বীকার করে বন্দরবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি

# জনাব মান্নান আপনার লজ্জিত হওয়ার প্রয়োজন : শান্ত

# আপনার মতো লোক এর চেয়ে ভালো কিছু বলতে পারে না : নাজমুল

# বিনোদনের জন্য আপনার মতো রাজনীতিবিদকে দেখলেই চলে : সৌরভ

# সোনারগাঁ হলো ডাকাতদের উপজেলা : রক্সি

 

বিভিন্ন কারনে বিভিন্ন সময় আলোচনা সমালোচনার খোড়াক হন সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান। কখনও বেফাঁস মন্তব্য, বেফাঁস কথাবার্তা, বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও আইন বিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে এ ধরণের ট্রলের শিকার হন তিনি। অনেকেই আবার মান্নানের এসব বিষয়কে অভিজ্ঞতা ও শিক্ষার অভাব বলে কটুক্তি করতেও ছাড়েন না। তবে এবার বন্দর উপজেলাকে সন্ত্রাসী এলাকা হিসেবে দাবি করেছেন তিনি। মঙ্গলবার ২৬ আগস্ট নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নারায়ণগঞ্জের তিনটি আসনের পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাবনার বিষয়ে শুনানির জন্য ঢাকা আগারগাও নির্বাচন অফিসে শুনানি শেষে সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার সময় এ ধরণের মন্তব্য করেন তিনি। বিএনপি নেতা মান্নান বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে সবগুলো সংসদ নির্বাচনে সোনারগাঁ এককভাবে একটি আলাদা নির্বাচনী আসন হিসেবে ছিলো। সব সময় সোনারগাঁয়ের মানুষ একসাথে মিলেমিশে বসবাস করেছি। আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করবো পূর্বের ন্যায় সোনারগাঁকে এককভাবে নির্বাচনী আসন হিসেবে রাখার জন্য। শীতলক্ষ্যার পশ্চিমপাড়ের সন্ত্রাসীদের সাথে সোনারগাঁয়ের শান্তিপূর্ণ মানুষ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। যদিও মান্নানের বক্তব্যে ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম পারের পরিবর্তে শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পারের কথা বলা হয়েছে। তবে বন্দরবাসীর দাবি বিষয়টি যেহেতু বন্দরকে নিয়ে এবং আসন পরিবর্তনের সমস্যাও সোনারগাঁ এবং বন্দরের একটি অংশ নিয়ে তাই এখানে শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পারের কথা বলতে তিনি বন্দরকেই বুঝিয়েছেন।

 

অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে বেশ ক্ষেপেছেন বন্দরবাসী। তাদের মতে আজহারুল ইসলাম মান্নান বন্দরবাসীর চরিত্র হনন করেছেন। কোন অবস্থায়ই তার এ ধরণের মন্তব্য করা উচিৎ হয়নি। বিষয়টি রাজনৈতিক নাকি ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে করেছেন তা বুঝা না গেলেও তিনি যে একজন অনভিজ্ঞতার ও মূর্খতার পরিচয় দিয়েছেন তা নিয়ে একমত বন্দরবাসী। বিষয়টি নিয়ে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বেশ আলোচনা সমালোচনা জন্ম দেয়। অনেকেই ওনাকে অশিক্ষিত ও মূর্খ উল্লেখ করে তার কমিটি বাণিজ্য, মামলা বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, স্বজনপ্রীতি এবং তার পরিবারের অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিষয়ে পোস্ট মর্টেম করতে শুরু করেন। তার মতো একজন নেতার কাছ থেকে এরচেয়ে ভালো কিছু আশা করা যায় না বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে। তার এ ধরণের অপরিপক্ক এবং বেফাঁস মন্তব্য ও কর্মকাণ্ডের জন্য তার এলাকার মানুষ, তার এলাকার মানুষও তাকে ভালো চোখে দেখে না বলে জানান অনেকে। নিজ এলাকায়ও দিন দিন তার জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করেছে বলে মনে করেন অনেকে। তবে বিষয়টি এই বিষয়টির দুঃখ প্রকাশ করে বন্দরবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার দাবি করেন বন্দরের জনগণ।

 

এই বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আজহারুল ইসলাম মান্নানের বিরুদ্ধে অনেকেই কড়া মন্তব্য লিখতে শুরু করেছেন। শান্ত হাসান মাহাদী লিখেন, জনাব মান্নান আপনার লজ্জিত হওয়ার প্রয়োজন। শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পারের বন্দরবাসী নাকি সন্ত্রাসী! সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে বন্দর বাসীদের পরিচয় দেয়াটা যথেষ্ট নিন্দনীয় ও ঘৃণিত। সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, আপনি উত্তর দক্ষিণ ভাল করে চিনেন কিনা আমার সন্দেহ। যাই হোক, শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব পাড়ের মানুষকে বন্দরবাসী বলা হয়। আপনার বক্তব্যের (সন্ত্রাসী ও পশ্চিম পার) শব্দটি সংশোধন করে দিবেন। কারন, আপনি যেই দলের বড় পদ দখল করে আছেন, আপনার অসত্য ও কান্ডজ্ঞানহীন কথা বার্তায় আপনার নিজের মূর্খ ভাবমূর্তির পরিচয়ই দিয়েছেন। আপনি নারায়ণগঞ্জের একটি উপজেলার বাসিন্দা হয়ে অন্য কোন উপজেলাকে অসম্মান করে কথা বলতে পারেন না।

 

নাজমুল হাসান লিখেন, আপনার মতো লোকের কাছ থেকে এর চাইতে ভালো কিছু আশা করা যায় না। সৌরভ নামের একজন লিখেন, নেতায় যেহেতু বলেছে সেহেতু ঠিকই আছে... তারপরও বলতে হয়, পাগলে কি না বলে, ছাগলে কি না খায়। বিনোদনের জন্য এখন আর অভিনেতাদের দেখতে হয় না। (আপনার মতো) রাজনীতিবিদদের দেখলেই চলে। রক্সি লিখেন, সোনারগাঁ হলো ডাকাতদের উপজেলা। এভাবে আজহারুল ইসলাম মান্নার এ ধরণের মন্তব্যে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেও বন্দরের সচেতন মহলের মতে মান্নান সাহেবের আমলনামা খুবই খারাপ, অথচ উনি একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের দায়িত্বপূর্ণ একটি পদে বহাল আছেন। দলের উচিৎ তার এধরণের মন্তব্যের জন্য তার কাছে কৈফিয়ত চাওয়া। একই সাথে বন্দরের যারা বিভিন্ন দলের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে আছেন, তাদেরও আজহারুল ইসলামের এধরণের মন্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়ে বন্দরবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা। কারণ যেহেতু তিনি এই সন্ত্রাসীদের সাথে তাদের শান্তিপ্রিয় মানুষ নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি নয় বলে জানিয়েছেন এখানে স্পষ্টতই তিনি বন্দরবাসীকে বুঝিয়েছেন বলে তারা মনে করেন।


Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন