বন্দরে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজছে আওয়ামী লীগ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম
-copy-68b44a788df23.jpg)
বন্দরে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজছে আওয়ামী লীগ
শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ত্যাগের খবরের সাথেই নিপাত ঘটে ‘ওসমানীয় রাজত্বের’। তবে নারায়ণগঞ্জের দীর্ঘদিনের ওসমানীয় রাজত্বের নিপাত ঘটালেও তাদের অপরাধ জগৎতের ডেভিলরা ধরা ছোয়ার বাহিরে রয়েছেন। এদিকে পটপরিবর্তনের ১ বছর পেরিয়ে গেলে ও এখনো অধরা রয়েছেন ওসমানদের সাম্রাজ্যের সেনাপতিরা। আর এই সন্ত্রাসীর সেনাপতিদের ছাড় দেওয়ায় নারায়ণগঞ্জ জুড়ে দফায় দফায় ঘটছে নানান অপ্রতিকর ঘটনা। এরা বিএনপিসহ বিভিন্ন দলে ভোল পািল্টয়ে অংশ নিয়ে নানান বদনাম ছড়াচেছন।
এদিকে ইতিমধ্যে বন্দরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি চালিয়ে হত্যা মামলার বেশ কয়েকজন আসামী গ্রেপ্তার হলেও এখনো বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে বন্দরের ওসমান দোসরদের মাঠ পর্যায়ের চাঁদাবাজ, বালুদস্য, ভুমিদস্যুসহ চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে এরা আবারো ঘুরে দাঁড়ানোর পায়তারায় মগ্ন রয়েছেন। যাকে ঘিরে এবার ফ্যা'সিবাদী শেখ হাসিনার বি'রু'দ্ধে দা'য়ের হওয়া মা'ম'লাসহ গ্রে'প্তা'র আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে বন্দর উপজেলার মদনপুরে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে ঝটিকা মি'ছি'ল ও হুন্ডা মহড়া দিয়েছে দলটির নেতাকর্মীরা।
গত শুক্রবার (২৯ আগষ্ট) বিকালে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর বাস স্টান্ড থেকে শুরু হওয়া এ ঝটিকা মিছিল ও হুন্ডা মহড়া কেওঢালা, জাঙ্গাল, মালিবাগ, লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত প্রদক্ষিন করে। এ মিছিলে অংশ নেন মদনপুরের পলাতক যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদ, মদনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রশিদ, ধামঘর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুমসহ এদের সাথে যুক্ত ছিলো বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাসকুদ ও তার ছেলে শুভর অনুসারীরা। এদিকে পর্দার আড়াল থেকে ঝটিকা এ মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হা'ম'লাকারী হ'ত্যা মা'ম'লার আসামীরা। বিএনপির কতিপয় নেতার ছত্রছায়ায় মদনপুর থেকে শুরু করে মদনগঞ্জ এবং বন্দর ঘাট থেকে লাঙ্গলবন্দ ও কলাগাছিয়া পর্যন্ত সবক’টি অঞ্চলে আবারো দাবরিয়ে বেড়ানোর পায়তারায় নানান নকশা এঁকে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন এই আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। এ ছাড়া ও অনেকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিএনপির বহু নেতকার্মীদের কিনে ফেলছেন নিচ্ছেন শেল্টার। এদিকে কিছুদিন পূর্বে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর পরিচালিত অপারেশন ডেভিল হান্টের জালে বন্দর উপজেলার দুই চেয়ারম্যান আটকে পড়েছে। বুধবার গভীর রাতে সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির সহসভাপতি মাকসুদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন প্রধান গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। পরবর্তীতে তারা নানা কায়দায় ফের ছাড়া পেয়ে এলাকায় ঘুরাফেরা শুরু করেন।
এদিকে গত ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের দিন রাতেই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ রশিদের বাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুদ্ধরা। এরপর থেকে এম এ রশিদ বন্দর ও তার দুই ভাই (আওয়ামীলীগ-শ্রমিকলীগ নেতা) বন্দর ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন। একই দিনে হামলা অগ্নিসংযোগে বাড়ি ছাড়া হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম। তা ছাড়া জাতীয় পার্টির নেতা ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুম এলাকা থেকে গা-ঢাকা দিয়েছেন। অপরদিকে বন্দর উপজেলার পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সানাউল্লাহ সানু। বন্দরের কুখ্যাত যুবলীগ নেতা খান মাসুদ বর্তমানে এরা এলাকায় ফের প্রভাব বিস্তার করতে বিএনপির কিছু কতিপয় নেতাকর্মীদের আশ্রয় চাচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে এমতা অবস্থায় চলছে দেনদরাবার। যাকে গিরে বর্তমানে বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে বন্দর উপজেলাধীন ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য এবং বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম আহমেদ, মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম। তা ছাড়া বর্তমানে ভোল পাল্টিয়ে এলাকায় লুটপাট চালিয়েছেন বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদ ও তার ছেলে মাহমুদুর হাসান শুভ। এরা বিগত দিনে শামীম ওসমান এবং সেলিম ওসমানের মিটিং মিছিলে প্রচুর লোক নিয়ে যোগদান করতেন। ওসমাদের শেল্টারে তারা এলাকায় রাম রাজত্ব কায়েম করতো। পট পরিবর্তনের পর পরই তারা নিজেদেরকে বিএনপির নেতা-কর্মী হিসেবে বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে মিশে গেছেন। সকলেই বিগত দিনে বন্দর উপজেলা জুড়ে এমন কোন কর্মকাণ্ড নেই যে করে নাই। আর এদের শেল্টারেই বিগত দিনে সংবাদটির উপরে উলেখিত মেম্বাররা বহু অপকর্মে জড়িয়ে থাকতেন। তা ছাড়া রশিদ চেয়ারম্যান, গাজী এম এ সালাম, সানু, মাসুমের নেতৃত্বে জুলাই-আগষ্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে ছাত্র-জনতার উপরে অবাদে গুলি ছোড়া হয়েছিলো। কিন্তু ১ বছরে ও এই সন্ত্রাসীরা গ্রেফতারের আওতায় না আসায় এখনো আতঙ্ক বিরাজমান রয়েছে বন্দর উপজেলা জুড়ে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যার একাধিক মামলা থাকলে ও কারা এদের শেল্টার দিচ্ছেন। তা ছাড়া বর্তমানে দফায় দফায় নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের এই সন্ত্রাসীদের হুন্ডা মিছিল-ঝটিকা মিছিলের মতো একের পর এক অপ্রতিকর ঘটনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দূর্বলতা বর্তমানে বন্দরে ফের ঘুরে দাড়াঁনোর পথে আওয়ামী লীগ।