-copy-68bad32128078.jpg)
চূড়ান্ত আসন পুনর্বিন্যাসে বেকায়দায় মান্নান
# সোনারগাঁ-সিদ্ধিরগঞ্জ একীভূত হওয়ায় মান্নান বলয়ে ভাঙন শঙ্কা
# সিদ্ধিরগঞ্জের জনসাধারণকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে বিপাকে
নির্বাচন কমিশন থেকে নারায়ণগঞ্জের তিনটি আসনের চূড়ান্ত পুনর্বিন্যাসে বেকায়দায় পড়েছে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি এবং নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী আজহারুল ইসলাম মান্নান। নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনটি সোনারগাঁ উপজেলা নিয়ে গঠিত ছিল আসন পুনর্বিন্যাসে সিদ্ধিরগঞ্জ নিয়ে গঠিত হয়েছে। ২০০৮ সালেও এই সংসদীয় আসনটি সোনারগাঁ-সিদ্ধিরগঞ্জ ছিল। তবে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি হয়ে মান্নান পুরো সোনারগাঁয়ের বিএনপিকে মুঠোবন্ধি করে সোনারগাঁজুড়ে মান্নানের একক নিয়ন্ত্রিত প্রভাব বিস্তার করে সোনারগাঁকে তার দুঃশাসনের সাঁজানো বাগান হিসেবে পরিচালিত করতে চেয়েছিলেন। কিš‘ চূড়ান্ত আসন পুনর্বিন্যাসের পরই মান্নানের সাঁজানো বাগানে বিস্ফোরণ ঘটে। কারণ সোনারগাঁ কেন্দ্রীক আসন থাকাব¯’ায় ঘৃণিত নিন্দিত ছিল তার কর্মকান্ডের ফলে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনটি সিদ্ধিরগঞ্জ নিয়ে গঠিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকাব¯’াতেই তিনি সিদ্ধিরগঞ্জের জনসাধারণকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে যার ফলে চূড়ান্ত আসন পুনর্বিন্যাসে বেকায়দায় পড়েছেন মান্নান। এছাড়া এবার তার বলয়ে রাজনীতি করা নেতারা তার বলয় ত্যাগ করতে পারেন। কারণ মান্নান ও তার পরিবার এবং কর্মকর্তাদের কর্মকান্ডে তেক্ত বিরক্ত ছিলেন।
সূত্র বলছে, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩৯টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন করে নতুন সীমানার খসড়া প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। খসড়া প্রকাশের পর ১০ আগস্ট পর্যন্ত আপত্তি জানানোর সুযোগ পান। পরবর্তীতে গত ১৮ আগস্ট নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়। নারায়ণগঞ্জের তিনটি আসনের সীমানা পুনর্র্নিধারণের শুনানি হয় গত ২৬আগস্ট নির্বাচন কমিশনে। ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্বাচন ভবন অডিটোরিয়ামে সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে নতুন সীমানার আপত্তির বিষয়ে অনুষ্ঠিত শুনানিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে পূর্বের সীমানা বহাল রাখার বিষয়ে নিজেদের যুক্তি ও ব্যাখ্যা তুলে ধরেন নারায়ণগঞ্জ-৩, নারায়ণগঞ্জ-৪ এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের আপত্তিকারীরা। ৩৯টি আসনের শুনানি শেষে জানানো হয় আগামী মাসের মাঝামাঝি সময় আসতে পারে আসন পুনর্নিধারণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কিš‘ ২৮আগস্ট ঘোষিত আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপে সীমানা জটিলতা নিরসন করে চূড়ান্ত ১৫ সেপ্টেম্বর সীমানার গেজেট প্রকাশের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনে সারাদেশের ৩০০ আসনের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে সেখানে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনে এবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা। এর আগে সিদ্ধিরগঞ্জ ছিল নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে। স্বাধীনতার পর থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা নিয়ে ছিল নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে সোনারগাঁও ও সিদ্ধিরগঞ্জ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন গঠন করা হয়। তবে পরের ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ এর নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩ ছিল শুধুমাত্র সোনারগাঁও নিয়ে। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন গঠন করা হয়েছে সিটি করপোরেশনের ১১ হতে ২৭নং ওয়ার্ড ও বন্দর উপজেলা নিয়ে। এ আসনে থাকা গোগনগর ও আলীরটেক ইউনিয়নকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ দুটি ইউনিয়নকে ফতুল্লায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন শুধুমাত্র ফতুল্লা থানা ও সদর থানার দুটি ইউনিয়ন এলাকা নিয়ে গঠন করা হয়েছে। এতে ফতুল্লা, এনায়েতনগর, বক্তাবলী, কাশীপুর, কুতুবপুর, গোগনগর ও আলীরটেক। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনটি সোনারগাঁ-সিদ্ধিরগঞ্জ নিয়ে আসনটি নিয়ে ছিল। চূড়ান্ত আসন পুনর্বিন্যাসের ফলে যেহেতু সোনারগাঁয়ের বাহিরে সিদ্ধিরগঞ্জে মান্নানের রাজনৈতিক ভিত্তি নেই সেহেতু আগামী সাংসদ নির্বাচনে মান্নানের ভরাডবি কথা ভেবে এখনই তার বলয় ত্যাগ করতে প্র¯‘ত হ”েছন তার সমর্থকরা। এছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জের জনসাধারণকে সন্ত্রাসী আখ্যা দেয়ায় সিদ্ধিরগঞ্জের মানুষও তাঁকে প্রত্যাখান করতে পারেন। তাই বলা চলে চূড়ান্ত আসন পুনর্বিন্যাসে বেকায়দায় মান্নান।