না.গঞ্জ-৪ আসনের নির্বাচনের ঘোষণা গিয়াসউদ্দিনের

লিমন দেওয়ান
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
-copy-68bfe98f6648a.jpg)
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের রাজনীতিতে দিন দিন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াসউদ্দিন। স্থানীয় ভোটার, রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীদের মতে, অভিজ্ঞতা, জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক দক্ষতার দিক থেকে তিনিই এই আসনে বিএনপির যোগ্য প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন। এ ছাড়া বিগত দিনে এই আসনের সাবেক সাংসদ সদস্য গডফাদার শামীম ওসমানের আতঙ্ক হিসেবে সর্বদা প্রথম তালিকায় ছিলেন এই গিয়াস উদ্দিন। কারণ দলের দূসময়ে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলার মতো একজন সিংহ পুরুষ ছিলেন গিয়াস উদ্দিন। যাকে ঘিরে শামীম ওসমানের নানা ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছিলো গিয়াস উদ্দিনকে।
যাকে ঘিরে পটপরিবর্তনের পর আগামী এয়োদশ নির্বাচনে বিগত ২০০১ সালের মতো ২০২৬ সালের নির্বাচনে ও এই আসনটি গিয়াস উদ্দিনের হাতে তুলে দিলে ফতুল্লাবাসী আনন্দিতসহ সকল মুশকিল পরিহার পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘদিন নির্বাচনী হওয়া চলাকালে সোনারগাঁওবাসীর আমন্ত্রণে তিনি ৬/৭ মাস যাবৎ টানা সোনারগাঁও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে গণসংযোগ, উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন পোগ্রাম পরিচালনা করেন এবং সেই আসনে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এর বাহিরে ও নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের যে কোন আসনেই মনোনয়ন চাইবেন তিনি এমন বার্তা দিলে ও কোন আসন নিশ্চিত করেননি গিয়াস উদ্দিন যা নিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে পরেছিলেন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। এদিকে গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে নারায়ণগগঞ্জ ৩, ৪ ও ৫ আসনে সীমানায় পরিবর্তন এসেছে। যেখানে ফতুল্লার ৫টি ইউনিয়নের সাথে আলীরটেক ও গোগনগর ইউনিয়ন সংযুক্ত করে নারায়ণগঞ্জ-৪ গঠিত হয়। একই সাথে সোনারগাঁও ও সিদ্ধিরগঞ্জ একত্রিত করে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন গঠিত হয়। যাকে ঘিরে বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মনে করেন গিয়াস উদ্দিন ৩ আসনেই নির্বাচন করবেন। তা ছাড়া দীর্ঘদিন গিয়াস উদ্দিনের পাশে থেকে বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হওয়া ফতুল্লা বিএনপির বহু নেতাকর্মী অনেকটাই মনোমালিন্ন হয়ে পরেন নির্বাচনী পুনর্বিন্যাসে।
সকলেই মনে করেন ফতুল্লায় রাজনীতি করে তাদের নির্যাতনের খড়গেই থাকতে হবে। কিন্তু ফতুল্লায় জনগণের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে এবং সেখানে গিয়াসপন্থী নির্যাতিত নেতাকর্মীদের কথা চিন্তা করে এবার নির্বাচনী আসন ঘোষণা দিলেন গিয়াস উদ্দিন। গতকাল সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে ফতুল্লা থানা বিএনপির এক চায়ের আড্ডায় গিয়াস উদ্দিন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকেই নির্বাচন করবেন বলে ঘোষণা দেন। যাকে ঘিরে উৎফুল্ল হয়ে উঠে ফতুল্লা বিএনপির নেতাকর্মীরা তারই মাঝে ফতুল্লা রাজনীতিতে যুক্ত হলো নয়া সমীকরণ। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন থেকে ইউটান নিয়ে ঘুরে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের গিয়াস উদ্দিনের নির্বাচনী ঘোষণায় সীমানা পুনর্বিন্যাসের পরে মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেকের প্রায় ঘুম হারাম হয়ে উঠেছে।
সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন গিয়াসউদ্দিন। তিনি শুধু বিএনপির রাজনীতিতেই নয়, সামাজিক কর্মকাণ্ড ও জনসেবামূলক কার্যক্রমেও সুনাম কুড়িয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দলের প্রতি নিষ্ঠা প্রদর্শন করেছেন তিনি। ফলে স্থানীয় নেতাকর্মীদের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির সম্ভাবনাকে আরও শক্তিশালী করতে হলে গিয়াসউদ্দিনের মতো পরিপক্ক নেতৃত্বের বিকল্প নেই। কারণ তিনি তৃণমূলের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ বজায় রেখে দলের পক্ষের ভোটারদের একত্রিত করার সক্ষমতা রাখেন। এলাকার সাধারণ ভোটারদের ভাষ্য, গিয়াসউদ্দিন সবসময় সাধারণ মানুষের পাশে থাকেন। উন্নয়নমূলক কাজ হোক কিংবা সামাজিক সংকট তিনি এগিয়ে এসে সহযোগিতার হাত বাড়ান। ফলে জনগণের মধ্যে তার প্রতি আস্থার জায়গা দৃঢ়।
তা ছাড়া গতকাল চায়ের আড্ডায় গিয়াস উদ্দিন বলেন, আসন যেভাবেই পুনর্বিন্যাস হোক না কেনো, যে এলাকার মানুষের কাছে আমার স্নেহ ভালোবাসা আছে, আমার পেছনে যাদের অবদান আছে, আর যেভাবেই আসন পুনর্বিন্যাস হোক না কেন, আমি ফতুল্লার অংশেই থাকবো, এটা আমার সাজানো বাগান।
তিনি বলেন, আমি সংসদ সদস্য থাকাকালীন আলিরটেক, গোগনগর ইউনিয়নের এমন কোনো পাড়া-মহল্লা ছিল না যেখানে আমি বিচরণ করি নাই। আমি রাজনীতির চেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়ে এলাকার সার্বিক উন্নয়নে কাজ করেছি। মানুষের সুখ-দুঃখ খুঁজে বের করে তাদের সাথী হতে পেরেছি। এমন কোনো পাড়া-মহল্লা নেই, যেখানে আমি অতিথিয়তা গ্রহণ করি নাই। যাকে ঘিরে এই আসনে আমার শক্ত অবস্থান রয়েছে।
এদিকে পর্যালোচনায় এসেছিলো নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে সীমানা পুনর্বিন্যাসে যোগ্য প্রার্থীর সংখ্যা অনেকটাই কমে গেছে। যেখানে যোগ্য প্রার্থীর অভাব হয়ে পরেছিলো এমতা অবস্থায় পুনরায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে আবারো এই আসনের নির্বাচনী আলোচনা সজাগ করিয়ে দিয়েছেন।
এদিকে গিয়াস উদ্দিনের এই সিদ্ধান্তে বিএনপি নেতাকর্মীরাও একমত যে, আগামীর নির্বাচনকে ঘিরে গিয়াসউদ্দিনকে মনোনয়ন দিলে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে দলটি শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারবে।