মাসুদুজ্জামানকে এক হাত নিলেন বিএনপি নেতা টিপু

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম

মাসুদুজ্জামানকে এক হাত নিলেন বিএনপি নেতা টিপু
গতকাল সোমবার মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মাসুদুজ্জামান বিএনপিকে নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন। মাসুদুজ্জামান তার বক্তব্যে বলেন, আমার বিষয়ে অনেকেউ প্রশ্ন করেন আমি বিএনপি করি কিনা। চেয়ারে বসতে হলে চেহারা লাগে, যোগ্যতা লাগে। আন্দাজে বললেই হবে না। যারা এইসব কথা বলেন, তারা ইউনিয়ন পরিষদে মেম্বার নির্বাচন করে দেখেন, পাস করতে পারেন কিনা। মেম্বার অব পার্লামেন্ট ভিন্ন জিনিস। এইটার মানে আপনি যদি আমাকে বোঝাতে পারেন, তাহলে আসেন, আমি পেছনে চলে যাবো। ঢাল নাই তলোয়ার নাই নিধিরাম সরদার!
তিনি বলেন, আমাকে চাইলেই আপনারা মিশায়া দিতে পারবেন না। এই দেশ, শহর, জেলা ও নগর আমার। এটা আমার মা। এটা আমাদের শহর, আমাদের নগর, আমাদের বন্দর, আমরা স্থানীয়রাই পরিচয় দিবো ইনশাল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বলেছেন, রাজনৈতিক কোনো পরিচয় থাকা যাবে না। আপনার পরিচয় থাকতে হবে আপনি ডাক্তার, মাস্টার, ব্যবসায়ী। আপনারা যারা চব্বিশ ঘন্টা রাজনীতির হিসাব-নিকাশ করেন, আমাদের কাছে আসার স্থান নেই।
তিনি বলেন, গত (২২ সেপ্টেম্বর) দলীয় নির্দেশনা মোতাবেক নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দদের উপস্থিতিতে রাজধানীর ঢাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আমি নতুন সদস্য নবায়ন ফ্রম কিনে বিএনপিতে থাকার পর ও আবার নতুন করে যোগদান করি। সেদিনই এক সংবাদকর্মী নারায়ণগঞ্জের একজন বিএনপি নেতাকে ফোন করে এ বিষয় তার অনুভূতি চাইলে তিনি বলেন, বড় লোক মানুষ ঢাকায় চাইজিন খাইতে ইচ্ছা করছিলো তার চাইনিজ হোটেলে গিয়েছিলো। তারা কতটা বিএনপি মনা এটাই তার প্রমাণ তারা বিএনপির কার্যালয়কে চাইনিজ হোটেলের সাথে তুলনা করে দিলো।
তিনি আরো বলেন, তা ছাড়া ও আমি যোগদানের কিছুদিন পরপরই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির একজন নেতা যিনি বন্দরে একটি পোগ্রামে গিয়ে বিএনপির এই সদস্য ফ্রমকে ২০ টাকার রিসিটের সাথে তুলনা করেছেন। এটা কি রাজনৈতিক দলের নেতাদের বক্তব্য হতে পারে এ ধরনের নেতাদের নিয়ে সুষ্ঠ রাজনীতি ও উন্নয়ন হবে না।
মাসুদুজ্জামানের এমন বক্তব্যে (সদর-বন্দর) জুড়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। অনেকই বলছে, নব্য বিএনপিতে যোগদান করেই বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রকাশ্যে কড়া সমালোচনা করছেন। তার বক্তব্যে ভেসে উঠতে দেখা গিয়েছিলো ক্ষোভ ও আক্রোশ। তার এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে তাকে এক হাত নিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
গতকাল বন্দর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে তারেক রহমানের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বক্তব্যে মাসুদুজ্জামানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, একজন শিল্পপতি বিএনপিতে নতুন যোগদান করেই নমিনেশন নেবার জন্য পাগল হয়ে গেছেন তারা কিন্তু কোনো আন্দোলন-সংগ্রাম করেননি। আর আপনারা এমপি হতে চান কেন? আওয়ামী লীগের পারপাস সাফ করার জন্য! ওসমান ফ্যামিলির দালালি করার জন্য! আপনারা বিএনপির নাম বিক্রি করে এমপি হতে চাইছেন। সাবধান হোন ওসমান ফ্যামিলির পারপাস সাফ করার জন্য যদি বিএনপির নাম বিক্রি করেন, তাহলে আপনাদের আর ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, আমি সুবিধাবাদী, নমিনেশন প্রত্যাশী ব্যবসায়ীদের বলতে চাই আমার ৪৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে আমি মেম্বার, চেয়ারম্যান, এমপি থেকে শুরু করে মন্ত্রী পর্যন্ত তৈরি করেছি। ৫ই আগস্টের পরও আমি ছয়-সাতজনকে চেয়ারম্যান বানিয়েছি। আর আপনারা যারা শিল্পপতি, আপনারা সরকারের ট্যাক্স ফাঁকি দেন, বিদ্যুৎ বিল ফাঁকি দেন, গ্যাস বিল ফাঁকি দেন। আমরা যদি ৪৫ বছর মাঠে-ময়দানে রাজনীতি না করে আপনাদের মতো ব্যবসা করতাম, তাহলে আমরাও আজ শিল্পপতি হতে পারতাম। বর্তমানে দুই মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির নেতার পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে স্বগরম বিএনপির রাজনীতি।