Logo
Logo
×

রাজনীতি

মনোনয়নের হিসেব নিকেশে বাদ পড়বেন কারা

Icon

যৃুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম

মনোনয়নের হিসেব নিকেশে  বাদ পড়বেন কারা

মনোনয়নের হিসেব নিকেশে বাদ পড়বেন কারা

Swapno

মনোনয়নের চূড়ান্ত সময়ে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে মনোনয়ন নিয়ে শেষ সময়ে স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। কে পাবেন মনোনয়ন সে হিসেব নিকেশ আগেই কষে রেখেছেন দলের হাই কমান্ড। এখন আসনভিত্তিক নেতাদের ডেকে দেওয়া হচ্ছে নানা ধরনের নির্দেশনা। নির্ধারিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার কঠোর নির্দেশের পাশাপাশি কোন ধরনের বিরোধ তৈরি না করতে বলা হয়েছে। এও বলা হচ্ছে নির্বাচন ঘিরে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, এখন বিরোধ থাকলে এটা দলের ভেতরে প্রভাব ফেলবে। বিপরীতে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনুসারী ‘আল হামদুলিল্লাহ’ লিখে পোস্ট করে নিজেদের পক্ষে জানান দিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে চলছে শেষ সময়ের হিসেব। এ সময়টাকে কঠিন সময় বলেও মনে করছেন অনেকে। তারা ভাবছেন এ সময়ে যারা দলকে ম্যানেজ করতে পারবে তারাই পাবেন মনোনয়ন। যদিও দল বলছে তারা বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত নিয়েই মনোনয়ন দিতে যাচ্ছেন।

এদিকে বর্তমানে দলীয় হাইকমান্ডের মনোনয়নের হিসেব নিকেশ থেকে বাদ পরতে পারে গত ৫ আগষ্টের পটপরিবর্তনের পর ক্লিন ইমেজ ধরে রাখতে না পারা অনেকেই। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের ডজনখানিক মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছে। যারা পটপরিবর্তনের পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের সাথে ব্যাবসা-বানিজ্যে আপোষ করেন। এদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি আসন থেকেই কয়েকজন করে মনোনয়ন প্রার্থী রয়েছেন যারা নানা কর্মকাণ্ডে বিতর্ক। তারা ইতিমধ্যে চিহ্নিত হয়ে গেছেন এদেরকে দল মনোনীত করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড। কিন্তু বিএনপি দলীয় মনোনয়নই নির্বাচনের শেষ লড়াই নয়। দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত হলেও অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে নির্বাচনের ফলাফল নিজের করে নিতে হবে। এই আসন এলাকার বিএনপির নেতাকর্মীরা বহুভাগে বিভক্ত। নেতাকর্মীদের মধ্যে বর্তমানে কেন্দ্রীয় হুঁশিয়ারী থাকায় অন্তঃকোন্দল প্রকাশে না আসলে ও সেটা বর্তমানে আবডালে রয়েছে। কিন্তু এবার মনোনয়নে বাদ পরবেন যারা তারা ইতিমধ্যে ধীরে ধীরে মাঠ ছাড়তে শুরু করেছেন।

সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিলো আওয়ামী লীগ। আর এই ক্ষমতায় থাকাবস্থায় নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা অনেক নির্যাতন নীপিড়নের শিকার হয়েছেন। দিনের পর দিন মাসের পর মাস এবং বছরের পর বছর বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে পরিবার পরিজন ছেড়ে দিন যাপন করতে হচ্ছে। সেই সাথে অনেক সময় তারা আন্দোলন সংগ্রামেও অংশ নিতে পারতেন না। ব্যবসা বাণিজ্যেও নানাভাবেই বাধার শিকার হয়েছেন। সব মিলিয়ে তাদের যেন স্বাভাবিক জীবন যাপন ছিলো না। দীর্ঘদিন ধরে কারাভোগ করতে হয়েছে। পরিবারের সদস্যদেরও অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে দিন পার করতে হচ্ছে। তাদের কারণে অনেক সময়ে পরিবারের সদস্যদের হেনেস্তার শিকার হতে হয়েছে। এর মধ্যে গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। আর এই পতনের সাথে সাথে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গাঁ ঢাকা দিয়েছেন। সেই সাথে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আলাপ আলোচনা শুরু হয়। আর এই আলাপ আলোচনায় নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা জায়গা করে নেন। ইতোমধ্যে অনেকেই এই আসনগুলোকে কেন্দ্র করে আলোচনায় চলে এসেছেন। আবার নতুন নতুন আরো কয়েকজন আসতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে নিজেকে নতুন করে ঘোষণা দিলেন সাবেক যুবদল নেতা মাকসুদুল খন্দকার খোরশেদ। এর আগে এই আসনে আরো একাধিক প্রার্থী চাইছেন মনোনয়ন এরা হলেন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াতহ হোসেন খান ও সদস্য সচিব, এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, সাবেক সাংসদ সদস্য আবুল কালাম, দুই শিল্পপতি আবু জাফর আহম্মেদ বাবুল ও মাসুদুজ্জামান মাসুদ। এদের মধ্যে মাসুদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের আমলের ওসমান লিয়াজুর মতো নানা অভিযোগ রয়েছে। তা ছাড়া আরেক শিল্পপতি আবু জাফর বাবুল তিনি বিগত দিনে শামীম ওসমান দ্বারা নির্যাতিত হলে ও রাজপথের কোন ভূমিকা নেই তার। এর বাহিরে আবুল কালাম যিনি তার পরিবারসহ গত ৫ আগষ্টের পূর্বে প্রতিটি আন্দোলনে ঘরবন্দি ছিলেন। তা ছাড়া নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির দুই নেতা সাখাওয়াত ও টিপু মাঠে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন বলে আলোচনা রয়েছে পাশাপাশি শহরের নানা মিডিয়া কর্মীর মঠোফোনে বা ক্যামেরায় এদের ফটো রয়েছে। কিন্তু ৫ আগষ্টের পরবর্তী সময়ে এদের সকলের বিরুদ্ধেই কিছু কিছু না কিছু অভিযোগ রয়েছে যাকে ঘিরে দল বিবেচনায় (সদর-বন্দর) আসনে কে দলের যোগ্য তালিকায় থাকে সেটাই দেখার বিষয়। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের দুই মনোনয়ন প্রত্যাশী মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু ও কাজী মনিরুজ্জামান মনির এরা দুইজনই বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য। এরা বিগত দিনে যেমনটাই রাজপথ বিমুখ ছিলেন ততটাই ছিলেন নিশ্চুপ।

এই দুই গ্রুপের দুই মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা বিগত দিনে যেমন মাঠে ছিলেন না তেমনই ৫ আগষ্টের পরবর্তীতে তাদের কর্মীরা তাদের নামে পুরো রূপগঞ্জ তছনছ করে দিয়েছেন। যাকে ঘিরে নেই এদের আর সেই ক্লিন ইমেজ। এদিকে নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ ও সহ অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুল হক সুমন। এদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে একাধিক অভিযোগ রয়েছে আড়াইহাজারের আধিপত্য বিস্তারকে ঘিরে সংঘর্ষের। তা ছাড়া থানা কন্ট্রোল করে মামলা বানিজ্যেসহ আড়াইহাজার জুড়ে একাধিক অভিযোগ রয়েছে এই দুই গ্রুপের শত শত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে দুই মনোনয়ন প্রত্যাশী তারা হলো-বিএনপির নির্বাহী কমিটির দুই সদস্য আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও আজহারুল ইসলাম মান্নান।

এদিকে গিয়াস বিগত আন্দোলন সংগ্রামের একজন লড়াকু সৈনিক হিসেবে থাকলে ও ৫ আগষ্টের পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে সত্যতা ছাড়া অনেক অভিযোগ তুলেছিলেন বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী যা পুরোই আক্রোশ হিসেবে বলে জানা যায়। এদিকে আজহারুল ইসলাম মান্নানের বিরুদ্ধে ডজনে ডজনে অভিযোগ রয়েছে ৫ আগষ্টের পর এর আগেসহ বর্তমানে নানা বিতর্ক চলমান। তা ছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বর্তমানে একাধিক মনোনয়ণ প্রত্যাশী দৌড়ঝাঁপ করলে ও শেষ পর্যন্ত এই আসন জোটে যেতে পারে বলে উঠছে নানা আলোচনা। তা ছাড়া ইতিমধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় গুলশানের অফিসে ইতিমধ্যে প্রতিটি আসনের নেতাকর্মীদের নিয়ে আলোচনা চললে ও এখনো ৪ আসনের নেতাকর্মীদের নিয়ে কোন প্রকারের আলোচনা উঠছে না। এদিকে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মনোনয়নের হিসেব নিকেশকে ঘিরে ইতিমধ্যে সমীকরণ থাকলে ও চলতি মাসেই সেই সমীকরণ সুরাহা হতে চলেছে বলে জানিয়েছে সূত্র।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন