নির্বাচনী মাঠ কাঁপাচ্ছে গিয়াসউদ্দিন পরিবার
যৃুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম
নির্বাচনী মাঠ কাঁপাচ্ছে গিয়াসউদ্দিন পরিবার
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি মাত্র ৩ মাস। ইতিমধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড মনোনয়নের হিসেব-নিকেশে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। এর বাহিরে ও নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করার কড়া নির্দেশ দিচ্ছেন। এমতা অবস্থায় কেন্দ্রীয় নির্দেশনার আগে থেকেই বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষের প্রচারণায় নারায়ণগঞ্জের মাঠ ঘাট চষে বেড়াচ্ছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দিন পরিবার। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় প্রতিদিনই এই পরিবারের তিন সদস্য নারায়ণগঞ্জ-৪ আরেকদিন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের অলিগলি ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগসহ তারেক রহমানের রাষ্ট্র মেরামতের ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নে কাজ করছেন। এদিকে বর্তমানে সোনারগাঁয়ের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের দুই ছেলে জি. এম সাদরিল ও ছেলে কায়সার রিফাত। বর্তমানে পিতা গিয়াস উদ্দিনের পক্ষে মাঠ কাপাঁচ্ছেন তার এই দুই ছেলে। রাজনীতির মাঠে তাদের সরব উপস্থিতি ইতোমধ্যে সোনারগাঁজুড়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। জানা গেছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে তারেক রহমান ঘোষিত বিএনপির ৩১দফা সম্বলিত লিফলেট সোনারগাঁয়ের প্রতিটি এলাকায় বিরামহীনভাবে জনসাধারনের মাঝে বিতরণ করে যাচ্ছেন এ দুই সহদোর। শুধু তাই নয়, লিফলেট বিতরণকালে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কিভাবে নাগরিকদের অধিকার থেকে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র পরিচালনা করবে সেই কথাগুলো সাধারন মানুষের সামনে উত্থাপন করে যাচ্ছেন তারা। বর্তমানে গিয়াস পরিবারের মাঠ চষে বেড়ানোকে আতঙ্ক হিসেবে দেখছেন দুইটি আসনে বাকি মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।
জানা যায়, স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের আমলে নারায়ণগঞ্জের কুখ্যাত গডফাদার শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। এজন্য ওসমান পরিবারের প্রধান টার্গেট ছিলেন তিনি। তাছাড়া ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে গিয়াসউদ্দিনের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন শামীম ওসমান। তাই গিয়াসউদ্দিনের প্রতি তার ক্ষোভের মাত্রাটাও ছিলো বেশি। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর দেশ ছেড়ে পালিয়েছে ওসমান পরিবার কিন্তু বিদেশে বসেও তারা ষড়যন্ত্রের অংক কষছে। এবারেও তাদের প্রধান টার্গেট গিয়াসউদ্দিনকে ঠেকানো। গিয়াসউদ্দিন যাতে জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন না পায় সেজন্য নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে পিছন থেকে কলকাঠি নাড়ছেন গডফাদার শামীম ওসমান। এদিকে এসব ষড়যন্ত্রকে পাত্তা না দিয়ে ধানের শীষের পক্ষে নির্বাচনী গণসংযোগ ব্যস্ত সময় পার করছেন গিয়াস পরিবার।
এদিকে নেতাকর্মীরা বলছেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর থেকে সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন জাতীয় এবং দলীয় কর্মসূচিগুলো নিজ নেতাকর্মীদের নিয়ে একাই পালন করছেন। জেলা বিএনপির অনুষ্ঠানে খুব একটা তাকে দেখা যাচ্ছে না। তৃণমূল পর্যায়ে অসম্ভব জনপ্রিয় গিয়াসউদ্দিনের রয়েছে বিশাল কর্মী বাহিনী। এদেরকে নিয়ে প্রতিদিনই ছুটে বেড়াচ্ছেন তিনি। নিজ এলাকা ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জের পাশাপাশি সোনারগাঁ, সদর, বন্দর, এমনকি আড়াইহাজার, রূপগঞ্জেও যাচ্ছেন তিনি। কখনো দলীয় কর্মসূচি পালনে, কখনো অসুস্থ নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নিতে আবার কখনোবা সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। যেখানেই যাচ্ছেন গিয়াসউদ্দিন সেখানেই নেতাকর্মীদের ঢল নামছে। সেখানে তিনি ধানের শীষের পক্ষে ভোট চাইছেন। দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামী দিনে সুখী সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ধানের শীষকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে সকলের কাছে আহ্বান জানাচ্ছেন তিনি। এদিকে গিয়াসউদ্দিনের এই আহবান বেশ সাড়া ফেলেছে ভোটারদের মাঝে। কারণ এই এলাকার মানুষকে বিগত দিনে ফ্যাসিস্ট ওসমান বাহিনীর সন্ত্রাস আর জুলুমের নির্মম শিকার হতে হয়েছে। তাই তারা সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ চায়। এদিকে শিক্ষাখাত থেকে শুরু করে নারায়ণগঞ্জকে নিয়ে আগামী পরিকল্পনায় গিয়াস উদ্দিন ব্যাত্বিত কোন প্রার্থীকেই ৩ বা ৪ আসনে চোখে দেখছে না নারায়ণগঞ্জবাসী। এদিকে বাবা গিয়াস উদ্দিনের মতোই ব্যাপক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন দুই ছেলে জি.এম সাদরিল ও কায়সার রিফাত।
এদিকে জি. এম সাদরিলের রয়েছে সফল রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে পরপর দুইবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তরুণদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করা, সৎ ও শিক্ষিত নেতৃত্ব গড়ে তোলাই তার মূল লক্ষ্য বলে জানান স্থানীয় নেতারা। এর বাহিরে ও সাদরিলের রাজনৈতিক নানা ভূমিকা রয়েছে। তিনি ৫ আগষ্টের পূর্বে এবং পটপরিবর্তনের পরবর্তী সময়ে রাজপথে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছেন সাদরিল। কখনো ছিলেন ঢাকায় রাজপথে কখনো ছিলেন নিজ নারায়ণগঞ্জে তা ছাড়া বিগত দিনে নির্যাতিত কাউন্সিলর হিসেবে থেকে ও নিজস্ব অর্থে নানান কাজ করেছেন তিনি। যাকে ঘিরে বর্তমানে নগরবাসী সাদরিলকে আগামীর মেয়র হিসেবে বিবেচনায় রেখেছেন।
অন্যদিকে গিয়াস উদ্দিনের আরেক ছেলে কায়সার রিফাত তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সে সময় রিফাতের হাতেই শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলো কৃষকদল। এর বাহিরে ও এই দুই ভাই জনস্বার্থে কাজ করার লক্ষ্যে নিজস্ব এলাকায় কয়েকটি সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করছেন। বর্তমানে সামাজিক সংগঠন মনা হিসেবে পরিচিতি জি.এম সাদরিল। সোনারগাঁয়ের স্থানীয় জনগণ বলছেন সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিনের দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার সঙ্গে তার দুই সন্তানের তরুণ নেতৃত্বের সংমিশ্রন আগামী নির্বাচনে নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে। অনেকেই মনে করছেন, সাদরিল ও রিফাতের মতো প্রগতিশীল, শিক্ষিত ও উদ্যমী নেতৃত্বই আজকের দিনে দেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তা ছাড়া বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে কিছুদিন আবার নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে কিছুদিন গিয়াস উদ্দিন পথসভাসহ তারেক রহমানের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করছেন। দুই জায়গায় গিয়াস উদ্দিনের ব্যাপক জনপ্রিয়তার সাড়া পরেছে যাকে ঘিরে ইতিমধ্যে নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় গিয়াস উদ্দিন সংবিধান অনুযায়ী দুটি আসনকে একত্রিত করে এক আসন তৈরি করে হেমিলিউনের এই বাঁশিওয়ালা গিয়াস থাকতেন। তা ছাড়া বর্তমানে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিভিন্নস্থানে তারেক রহমানের ৩১ দফা পৌঁছে দেওয়ার কাজেই ব্যস্ত সময় পাড় করছেন গিয়াস পরিবার।


