গোগনগরে সাবেক সাংসদ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন
সুবিধাভোগীরা দুর্দিনে মুখ লুকিয়ে পালিয়ে যায়
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
সুবিধাভোগীরা দুর্দিনে মুখ লুকিয়ে পালিয়ে যায়
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি বীরমুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেছেন, ‘আমাদের সমাজে কিছু সুযোগ-সুবিধাবাদী মানুষ আছে। যারা যখন সুদিন দেখে, তখন এসে ঝাপিয়ে পড়ে যে, কিভাবে দল থেকে বেনিফিট নিবে। আবার যখন দুর্দিন আসে, তখন মুখ লুকিয়ে পালিয়ে যায়, বিশ্বাস ঘাতকতা করে, বেঈমানী করে।
সমাজে এমন মানুষের অভাব নেই। অর্থবৃত্ত এবং ভোগ বিলাসী জীবন যাপন করে তারা। এরা সুযোগ বুঝে জনগণের কাছে আসে আর বলে যে, “আমাদেরকে সেবা করার সুযোগ দেন। আমরা সেবা করতে চাই।” তাহলে সারা বছর আপনি কোথায় ছিলেন!’ গোগনগর ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিএনপির চেয়ারপার্সন ও তিনবারের সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থ্যতা কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
বীরমুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আমরা যারা রাজনীতি করি, আমাদের জন্য কোনো সুদিন-কুদিন নেই। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, হেমন্ত নয়- সব সময়ই থাকি। যখন সুদিন তখনও থাকি, যখন দুর্দিন তখনও থাকি। কাজেই আপনাদের কাছে অনুরোধ করবো, সুবিধাবাদী মানুষ যেন আপনাদের আমাদেরকে কোনো ভাবে প্রভাবিত করতে না পারে। বিএনপির সুফল ভোগ করবে আর দুর্দিনে থাকবে না, জনগনের কল্যাণে কাজ না করে নিজের ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করবে, এমন মানুষকে কখনো ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচন করা যাবে না। বিএনপিকে দিয়ে যদি আমরা ভালো কিছু করতে চাই, তাহলে বিএনপির ভালো মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে হবে।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘যদি আমাদের দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে এবং নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোনো ভুল করে, তাহলে এর খেসারত বিএনপিকে দিতে হবে। আমরা তাই স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যখনই দূর্দিন হয়েছে, এই দূর্দিনে কে কান্ডারি হয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীর কে খোঁজ খবর নিয়েছে, মানুষের পাশে গিয়ে কে দাঁড়িয়েছে, মানুষের সুখ-দুঃখের সাথী সব সময় কে থাকে, সেরকম যাকে দিবে, তাকে নিয়েই আমরা নির্বাচন করতে চাই, তাকেই ভোট দিয়ে আমরা নেতা নির্বাচন করতে চাই। কোনো স্বার্থবাদীকে না।’
গোগনগর ও আলীরটেক ইউনিয়নটি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের মধ্যে অর্ন্তভুক্ত হওয়ায় শক্তি-সাহস বেড়েছে উল্লেখ করে গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন ছিলো। আলীরটেক গোগনগর ইউনিয়ন চলে গিয়েছিল নারায়ণগঞ্জ-৫ এর সাথে। দীর্ঘদিন পরে আমরা আবার এই দুটি ইউনিয়ন ফিরে পেয়েছি, এতে আমাদের শক্তি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ এই গোগনগর, আলীরটেক বক্তাবলী হলো বিএনপির ঘাঁটি। এতে আমাদের মন অনেক বড় হয়ে গেছে, আমাদের সাহস অনেক বেড়েছে। আগামী দিন ইনশাআল্লাহ আমরা একত্রিত হয়ে এই এলাকার উন্নয়ন করবো।
সাংগঠনিক ভাবে আপনারা নারায়ণগঞ্জ-৫ এর সাথে গিয়েছিলেন। আমি অনেকের সাথে কথা বলে দেখেছি যে, নারায়ণগঞ্জ-৪ এর সাথে থাকতে রাজনৈতিক ভাবে যেই আত্মতৃপ্তি পেতেন, কাজকর্ম করতে যেই তৃপ্তি পেতেন, সেটা এতদিন ছিলো না। এখন আবার বলি, যখন এই গোগনগর ও ফতুল্লা সিটি করপোরেশনের মধ্যে চলে যাবে, আমি কিন্তু সিটি করপোরেশনের নাগরিক, কাজেই আবার আমরা এক সাথে রাজনীতি করবো। একই ফর্মে আসবো। সেই বার্তাটা দিয়ে গেলাম। সেই দিন বেশি দূরে নয় যে, আপনারা আমরা একই ফর্মেটে এসে আবার আমরা রাজনীতি করবো।’
এদিকে, বক্তব্যের শুরুতে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থ্যতা কামনা করে তার গুনাবলি এবং অবদানের বিষয়গুলো শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন গিয়াস উদ্দিন। এসময় তিনি বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শাহাদাত বরণের পর এই বিশাল বিএনপির দায়িত্ব কাঁধে নিতে হয়েছে তার সুযোগ্য সহধর্মীনি ও আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। পারিবারিক জীবনে যিনি গৃহবধু ছিলেন, তাঁকে আসতে হয়েছে জাতীয় নেতৃত্বে।
আমরা যারা বিএনপি করি, এই দলের নেতাকর্মী অথবা এই দেশে যারা রাজনীতি করেন, তাদেরকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এমন একটি আদর্শ দিয়ে গেছেন, সেই আদর্শে রয়েছে দেশপ্রেম এবং দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করা। এই আদর্শের জন্যেই আজকে লাখো কোটি মানুষ বিএনপির পতাকাতলে এসেছেন। বিএনপির হয়ে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এই অবদান যেমন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের, তেমনই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার।’


