বৃহস্পতিবার   ০৯ মে ২০২৪   বৈশাখ ২৬ ১৪৩১   ০২ জ্বিলকদ ১৪৪৫

স্বদিচ্ছা আর সৎ সাহস থাকলে সবাই উন্নতি করতে পারে: আচল আহমেদ

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৭:০৩ পিএম, ২১ আগস্ট ২০১৮ মঙ্গলবার

দীপা রহমান (যুগের চিন্তা ২৪): সখের বসে পার্লারের কাজ শিখেছেন নিজের বোনের কাছে। নিজের গায়ের রং পরিবর্তনের চেষ্টা করতে গিয়ে নিজে ব্যবহারের জন্যই তৈরী করেছিলেন একটি হারবাল প্যাক। নিজের জন্য বানালেও সেটা আর নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি। বর্ণ নিয়ে সমাজের দৃষ্টি ভঙ্গীর কারনে যারা নানান যায়গায় পিছিয়ে পরছিলেন তাদের কথা চিন্তা করে নিজের আবিস্কারকে ছড়িয়ে দেন মানুষের মাঝে। তিনি আচল’স বিউটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিষ্ঠাতা আচল আহমেদ। একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। যুগের চিন্তা ২৪ এর ঈদ আড্ডায় তিনি কথা বলেছেন নিজের নানান বিষয়ে। যুগের চিন্তার পাঠকদের জন্য এর অংশ বিশেষ তুলে ধরা হলো। 


নিজের আজকের এই অবস্থানে আসার গল্প শোনাতে গিয়ে বলেন, সময়টা ছিলো ২০১০। শখের বসেই বোনের পার্লারে কিছু কাজ শিখেছিলাম। যেন নিজের পার্লারের প্রয়োজনটা নিজেই মেটাতে পারি। যেহেতু আমার গায়ের রং কালো ছিলো তাই নিজে থেকেই বাসায় কিছু প্রাকৃতিক পন্য ব্যবহারে সহজে বানানো যায় এমন হারবাল প্যাক বানিয়ে নিজে ব্যবহার করলাম।


ব্যাবহারের পরে যখন নিজের পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম তখন ভাবলাম যে আমার মত অনেকেই নিজের বর্ণ নিয়ে মন খারাপ করে বা আমাদের সমাজে সুন্দর মানেই শুধু সাদা গায়ের রং বুঝায় যার কারনে অনেক মেয়ে ই তার অবস্থানে টিকে থাকতে পারেনা।


আমি নিজে এমন অবস্থা দেখেছি যে একটি মেয়ের বিয়ে হচ্ছিল না নিজের কালো বর্ণের জন্য ! মেয়েটা আমার কাছে কান্নায় ভেঙ্গে পরে। তাকে সান্তনা দিয়ে বললাম ভেঙ্গে পরো না সমাজের দৃষ্টিও হয়তো কখনো বদলাবে।


আমার বানানো হোমমেড প্রোডাক্ট তখন আমি তাকে ব্যবহারের জন্য দিই। সেটা ব্যবহারও করলো মেয়েটি। এবং খুবই ভালো সাড়া দিলো। আমিও উদ্বুদ্ধ হলাম ভালো কিছু করার জন্য। তারপর থেকে আমার বোনের পার্লারেও আমার বানানো প্রোডাক্ট দেয়া শুরু করলাম। কাছের দূরের পরিচিতরাও খুবই পছন্দ করলো।


পরিবারের সহায়তা সম্পর্কে বলেন, আমার স্বামী এবং শাশুড়ি উভয়ই আমাকে সব সময় সমর্থন করেন। স্বামীর সহোযোগীতায় ফেসবুকে ফেয়রিস স্কোয়াড গ্রুপের মাধ্যমে আমার উদ্যেগটি আরো কয়েকধাপ এগিয়ে নিয়ে এসেছি বর্তমানে।


নারায়ণগঞ্জের নারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাকে এবং আমার প্রডাক্ট গুলো যারা ভালোবাসে তাদের দোয়া এবং সহোযোগীতায় একটি শোরুম দেয়ার তোফিক মহান আল্লাহ্ আমাকে দিয়েছেন। আমি সব সময়ই তাদের কাছে কৃতঙ্গ যারা আমাকে এতো ভালোবেসেছেন তাদের কাছেও যারা আমার সমালোচনা করে আমাকে আরো বেশী সাহস যুগিয়েছেন।


সকল নারীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন , স্বদিচ্ছা আর সৎ সাহস থাকলে সবাই উন্নতি করতে পারে । শুধূ মেয়ে বলেই পিছিয়ে পরা চলবে না সকলকেই নিজের মত করে নিজের স্বপ্ন গুলোকে সাজানোর এবং বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। সকলকে ঈদের শুভেচ্ছা রইলো।