মামুনুল হকের বিরুদ্ধে যা বললেন সেই নারীর ছেলে
যুগের চিন্তা অনলাইন
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০২:৪৩ পিএম, ৬ এপ্রিল ২০২১ মঙ্গলবার
যুগের চিন্তা রিপোর্ট : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে নারীসহ আটক হয়েছিলেন হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুল হক। তাকে আটক করার পর হেফাজত ইসলামীর কর্মীরা পুলিশের কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে যান। আটক হওয়ার পর তিনি পুলিশের কাছে বলেছিলেন ঐ নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। মানবিক কারনে তালাক প্রাপ্তা ঐ নারীকে তিনি বিয়ে করেছেন। মাইন্ড রিফ্রেসের জন্য তিনি দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে রিসোর্টে উঠেছিলেন। পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর মামুনুল হক ও তার প্রকৃত স্ত্রী, আবার মামুনুল হকের বড় বোনের সাথে স্ত্রীর অডিও রেকর্ড ফাস হয়েছে।
এবার মামুনুল হকের সাথে যে নারী আটক হয়েছিলেন সেই নারীর বড় ছেলে ফেস বুক লাইভে এসে মামুনুল হক ও তার মায়ের বিষয়ে মুখ খুলেছেন। কিভাবে একটি সাজানো ঘুছানো সংসারকে মামুনুল হক কৌশলে ধ্বংস করেছেন সেই চিত্র পুরো ভিডিওতেই ঐ নারীর ছেলে আব্দুর রহমান তুলে ধরেছেন। তার এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে মামুনুল হকের চরিত্র নিয়ে। তিন মিনিট দুই সেকেন্ডের বক্তব্যে আব্দুল রহমান বলেন মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ঝেড়ে বলেন, মামুনুল হকের কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার দুই সন্তান আবদুর রহমান ও তামিম তাদের বাবার সঙ্গে খুলনায় থাকেন।
ভিডিওতে আবদুর রহমান বলেন, আমি তো অলরেডি বড় হয়ে গেছি, অনেক কিছু শিখছি,জানছি, ম্যাচুরিটির একটা ভাব আইছে। আমি কিছুটা সহ্য করে নিতে পারি,কিন্তু আমার তো একটা ছোট ভাই আছে,১৩-১৪ বছর বয়স। কেবল উঠতি বয়স। এইসময়ে মানুষের কত কথা শোনা লাগতেছে। সমাজের সামনে আইসা মুখ দেখাইতে পারতেছি না। আমার ছোট ভাইটা কাল রাতে যখন এই ঘটনাটা ঘটলো,ও কোনোদিন আমি দেখি নাই রাত ৩-৪টা পর্যন্ত জাইগা রইছে। কাল দেখি ওর চোখে কোনো ঘুম নাই। ও বিষয়টা নিয়ে টোটালি মেন্টালি শকড হইছে। ও বাসা থেকে বের হয়ে গেছিল। বাসায় থাকলে কি উল্টা-পাল্টা করবো আমি নিজেও জানি না,এইটা বইলা বের হয়ে গেছে। লাইভে আব্দুর রহমান এমন ঘটনার জন্য মামুনুল হকের প্রতি তার বাবার অন্ধবিশ্বাসকে দায়ী করেন। তিনি বলেন,‘আমার বাবা মানুষকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে। পাগলের মতো ভালোবাসে। ওই মামুনুল (হক) লোকটার কিছু দিন আগে মোল্লারহাটে একটা মাহফিল ছিল। সেখানে পুলিশ তাকে করতে(মাহফিল) দেবে না। সে একটা জায়গায় লুকায়া ছিল। আমার বাবা সেটা দেখে আইসা কীভাবে যে কানছে।
তার আগেই বিষয়টা আমি জানছি যে, আমার মায়ের সঙ্গে তার একটা সম্পর্ক ছিল। আমি তখন হাসতে ছিলাম যে,এই লোকটা যার জন্য অঝোর ধারায় কানতেছে আর ওই লোকটা (মাওলানা মামুনুল হক) এই লোকটার (বাবা শহীদুল ইসলাম) সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতেছে। তারপরে যখন ওনাকে জেলে নিলো, মাওলানা মামুনুল হককে জেলে নিলো,তখন আমার বাবা থানার ওসি কামরুজ্জামানকে বলে যে, আমাকে রেখে ওনাকে ছেড়ে দেন। কতটা ভালোবাসলে একটা মানুষকে এই কথা বলতে পারে। আর সেই লোকটা কীভাবে গাদ্দারি করলো।’ আবদুর রহমান বলেন, আরো আগের ঘটনা যখন ডিভোর্স হয়নি,আমি তখন অনেক ছোট। আমার ছোট ভাই আরও অনেক ছোট,দুগ্ধ শিশু ছিল। তখন আমার বাবা বাসায় ছিলেন না। তখন আমি ছিলাম। আমি ঘুমায়া ছিলাম নাকি বাইরে ছিলাম। আমার মা নাকি আমার ছোট ভাইকে দুগ্ধ পান করাচ্ছিল,তখন উনি(মামুনুল হক) আমার মায়ের রুমে ঢুকে গিয়ে একটা কু-প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আমার মা সেটা প্রত্যাখান করেছিল, না এটা কোনোদিনই সম্ভব না। আপনি তো ঠকাচ্ছেন, আপনার কাছের বন্ধুকে,মানুষটাকে। সে তখন ফিরে এসেছিল। কিন্তু তার একটা তখনই মনে কামভাব ঢুকে গেছে।
সে লোভ সামলাইতে পারতেছিল না। সে একটা সুযোগে ছিল, কিন্তু এত তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে সে এইটা বুঝতে পারে নাই। আবদুর রহমান আরো বলে, যখনই সুযোগ পাইছে এনাদের মধ্যে(বাবা-মায়ের) ডিসট্যান্স বাড়াইয়া দিছে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তো ঝগড়া হবেই। সে তখনই নক করছে। তখন দুই জনের মধ্যে আরও ডিসট্যান্স বাড়াইয়া দিছে। এইভাবে করে সে একটা পরিবারের খুশি,ভালোবাসা,একটা পরিবারের মধ্যে যে মিলমিশ সম্পর্ক পুরোপুরি সে ধ্বংস করে দিছে। আরো যে এভাবে কতো মানুষের, কতো পরিবারের ভালোবাসা যে ধ্বংস করে দিছে এর কোনো ঠিক নাই। মামুনুল হকের এমন কান্ডে দেশবাসীর কাছে বিচার চান আবদুর রহমান। তিনি আরো বলেন,আমি বাংলাদেশের মানুষের কাছে আশা করবো,এর যেন সঠিক বিচার হয়। আপনারা কারো অন্ধ ভক্ত হয়েন না। কাউকে অন্ধভাবে বিশ্বাস কইরেন না। কারণ সবারই আড়ালে আরেকটা চেহারা থাকে। এই লোকটা আলেম নামধারী মুখোশধারী একটা জানোয়ার। তার মধ্যে কোনো মনুষ্যত্ব নেই। সে সুযোগের অপেক্ষায় থাকে কাকে কিভাবে দুর্বল করা যায়। আমার আর কিছু বলার ভাষা নাই।