শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১   ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

নৌযান নোঙর করে নদী দখল, ঘটতে পারে দুর্ঘটনা

স্টাফ রিপোর্টার

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ১২:২১ পিএম, ৭ এপ্রিল ২০২১ বুধবার

নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর গুরুত্বপূর্ন পয়েন্টগুলোতে নোঙর করে রাখা হয়েছে বিভিন্ন নৌযান। এলোপাথারী ভাবে বছরের পর বছর নৌযানগুলো নোঙর করে রাখায় নদীর দু’পাড়ের দীর্ঘ নৌপথ দখল হয়ে আছে। এতে সংকুচিত হয়ে পড়েছে শীতলক্ষ্যার নৌযান চলাচলের পথ। ফলে কিছু কিছু স্থানে নৌযান চলাচলে দূর্ঘটনার ঝুঁকি বিদ্যমান। পরিবেশবাদীরা বলছেন, এভাবে নৌযানগুলো দিনেরপর দিন একই স্থানে নোঙর করে থাকায় নদীর তলদেশে পলি জমে নাব্যতা কমে যাওয়ার আশঙ্কাও বিদ্যমান। ফলে সেখান থেকে নৌযানগুলো দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। যদিও নানাবিধ দূষণের ফলে ইতিমধ্যেই নাব্যতা হারিয়েছে শীতলক্ষ্যা।

 


 এদিকে, গত ৪ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের চরসৈয়দপুর কয়লাঘাট এলাকার শীতলক্ষ্যা নদীতে নির্মাণাধীন সেতুর সামনে দ্রুতগতির কার্গো জাহাজের ধাক্কায় মুন্সীগঞ্জগামী একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবির ঘটনায় ২৮ জনের মরদেহ উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। গতকাল এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আরো কয়েক জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে নৌপুলিশ। এদিকে, বিশ্লেষকরা বলছেন- নোঙর করে রাখা নৌযানের কারণে যেহেতু নদীর বিভিন্ন চ্যানেল সংকুচিত হয়ে পড়েছে, সেহেতু বড় নৌযান চলাচল বা ক্রসিংয়ের সময় আবারও বড় ধরনের দূর্ঘটনা ও প্রাণহানির আশংকা থেকে যাচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের উচিৎ এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া।  সরেজমিনে দেখা গেছে, হাজীগঞ্জ-নবীগঞ্জ খেয়াঘাট ও সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইলসহ বেশ কয়েকটি স্থানে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে সারবদ্ধভাবে নোঙর করে রাখা হয়েছে লাইটার কার্গো জাহাজ, বাল্কহেডসহ বিভিন্ন নৌযান। মাঝনদী পর্যন্ত মাসেরপর মাস শতাধিক নৌযান নোঙর করে রাখা। 

 


এ ছাড়া নদীর তীরে অবস্থিত সিমেন্ট কারখানাগুলোর সামনে বিভিন্ন স্থানে নোঙর করে রাখা হয়েছে নৌযান। এই নৌপথ দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য কার্গো ও জ্বালানি তেলের ট্যাংকার চলাচল করে। কিন্তু নদীপথ সরু হয়ে পড়ায় দুটি বড় নৌযান পাশাপাশি চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। একইভাবে এই নৌপথে নৌযান চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনারও আশঙ্কা আছে। এসব নৌযানের মধ্যে অনেকগুলো মরিচা ধরে নদীতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।নৌযানের চালকেরা জানিয়েছেন, ‘শীতলক্ষ্যার মাঝনদী পর্যন্ত এলোমেলোভাবে নৌযান বছরের পর বছর ফেলে রেখে নদী দখল করা হয়েছে। এতে নৌযান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।’সচেতন মহল বলছেন, এভাবে নদীর বিস্তীর্ণ জায়গাজুড়ে নৌযান ফেলে রাখার যৌক্তিকতা নেই। শিল্প ও বাণিজ্য নগরের গুরুত্বপূর্ণ নদী শীতলক্ষ্যা। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় গুরুত্ব হারাচ্ছে এই নদী। এই বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপ-পরিচালক মোবারক হোসেনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তাই তার পক্ষ থেকে কোন প্রতিক্রিয়া জানা সম্ভব হয়নি। তবে, নৌ পুলিশের ইনচার্জ মো. শহিদুল আলম দৈনিক যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘নৌ পথে নিরাপত্তা প্রদানের জন্য আমরা সচেষ্ট।’