শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১   ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

নারায়ণগঞ্জে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস পালিত

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ১০:৫২ পিএম, ২৮ এপ্রিল ২০২১ বুধবার

আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সম্মিলিত আয়োজনে গতকাল সকাল ১১টায় এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

 

করোনা পরিস্থিতির কারণে ভাচ্যুয়াল মাধ্যম জুম এ্যাপে অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মো. শামীম বেপারীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক উম্মে সালমা সুমি। অনুষ্ঠানে শব্দ দূষণের উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন।

 

এছাড়া, বিআরটিএ নারায়ণগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) সৈয়দ আইনুল হুদা চৌধুরী, জেলা শিক্ষা অফিসার শরীফুল ইসলাম, জেলা যুব উন্নয়নের উপপরিচালক শাহরিয়ার রেজা, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মোহাম্মদ সামছুল আলম, জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মুহাঃ জাকির হোসাইন, জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মো. সেলিমুজ্জামান, দৈনিক যুগের চিন্তা পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার তুষার আহমেদসহ অন্যান্য গণমাধ্যম কর্মী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং পরিবহন সেক্টরের নেতৃবৃন্দরা অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।   

 

শব্দ দূষণের উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা কালে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘মানুষ বা কোনো প্রাণীর শ্রুতিসীমা অতিক্রমকারী শব্দের কারণে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। মানুষ সাধারণত ২০ থেকে ২০ হাজার হার্জের কম বা বেশি শব্দ শুনতে পায় না। তাই মানুষের জন্য শব্দদূষণ প্রকৃতপক্ষে এই সীমার মধ্যেই তীব্রতর শব্দ দ্বারাই হয়ে থাকে। তীব্র শব্দ কানের পর্দাতে বেশ জোরে ধাক্কা দেয়, যা শ্রবণশক্তি নষ্ট করে দিতে পারে।’

 

এই ধরনের শব্দ দূষণ মানুষের স্বভাবেও পরিবর্তন বয়ে আনতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “শব্দদূষণের দ্বারা প্রভাবিত এলাকার মানুষের মেজাজ খিটখিটে হয়ে উঠে। স্বাভাবিক আচরণে অস্বাভাবিকতা ও মানসিক উত্তেজনা দেখা যায়। মানুষকে ক্লান্ত মানসিক অবসাদগ্রস্থ ও কাজে অমনোযোগী করে তোলে। বয়স্ক মানুষের স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বধির হওয়ার মতো খবরও পাওয়া যায়। শব্দদূষণের কারণে শ্রবণশক্তি হ্রাসের পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্য এবং আচার-আচরণ উভয় ক্ষেত্রেই সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে। এই শব্দদূষন যানজট, গাড়ি চালকদের অযথা হর্ণ বাজানো, কলকারখানা, নির্মাণ কাজ, সাউন্ড বক্স ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাইকসহ বিভিন্ন মেশিন বা যন্ত্র ব্যবহার থেকে উৎপত্তি হয়।

 

শব্দদূষণ প্রতিরোধে বিধিমালা রয়েছে। শব্দের তারতম্যের ক্ষেত্রে শহর, শিল্পাঞ্চল ও মফস্বলসহ পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, উপাসনালয়ের সামনে এবং আবাসিক এলাকায় হর্ন বাজানো, মাইকিং করা সেইসঙ্গে সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নামে জোরে শব্দ সৃষ্টি করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ।

  

শব্দদূষণ প্রতিরোধে ২০০৬ সালে শব্দদূষণ বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়। আইনে শব্দ দুষণকারীর বিরুদ্ধে অনধিক ১ মাসের সাজাসহ ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার বিধান রয়েছে। এছাড়া, পেনাল কোর্ডে জরিমানা করার বিধান রয়েছে বলেও তিনি জানান।

 

এর প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, শব্দ দূষণ রোধে সকলের সচেতনতা অবলম্বন করাসহ আইন ভঙ্গকারীকে বিধি অনুযায়ী শাস্তির আওতায় আনা গেলে শব্দ দূষণ রোধে সফলতা পাওয়া যাবে। তাই পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সেই আইন প্রয়োগের নির্দেশনা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।