বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৫ ১৪৩১   ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ঈদের পরে কিছু মানুষের মুখোশ উন্মোচন করবো: শামীম ওসমান

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৩:৩৯ পিএম, ১ মে ২০২১ শনিবার

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান বলেছেন,  নারায়ণগঞ্জের বিষয়ে অনেকদিন ধরেই অনেকে অনেক কিছু বলে যাচ্ছেন। এখন রমজান মাস ও মহামারি করোনা পরিস্থিতি চলছে। কবে চলে যাই জানি না। মৃত্যু যদি না হয়, তাহলে ঈদের পরে নারায়ণগঞ্জের ব্যাপারে কিছু সত্য কথা বলবো ও সত্য বিষয় তুলে ধরবো। কিছু মানুষের মুখোশ উন্মোচন করবো। দেখি আল্লাহ কতোদিন বাঁচিয়ে রাখে। রাজনীতিতে এসেছি সরবে মনে হয় চলে যাবো নিরবে। রাজনীতি থেকে অবসর নেয়ার আগে কিছু অসৎ মানুষের মুখোশ উন্মোচন করে যাবো।


গতকাল বাদ জুমা নারায়ণগঞ্জ- ৫ আসনের প্রয়াত সাংসদ, জাতীয় পার্টির সাবেক প্রসিডিয়াম সদস্য ও বড় ভাই নাসিম ওসমানের সপ্তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে শহরের মাসদাইর কবরস্থানে জিয়ারত শেষে শামীম ওসমান এসব কথা বলেন।


এদিকে, খানপুর করোনা হাসপাতালে রোগি ভর্তির ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শামীম ওসমান বলেন, আমি এই কবরস্থানে দাঁড়িয়ে, আমার মা-বাবা ভাই শুয়ে আছে, তাদেরকে উপস্থিত রেখে আল্লাহর এই ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে বলছি, আমার ক্ষুদ্র ক্ষমতার বলে চেষ্টা করবো যারা এই ধরনের ঘটনা ঘটায়, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কিংবা আমরা ব্যবস্থা গ্রহন করবো ইনশাআল্লাহ। আমরা সবাই সবার জন্য কিছু করবো। সবাই সবার জন্য দোয়া করবো। সবাই সবার পাশে দাঁড়াব। সেখানে যদি এই ধরনের প্রশ্ন আসে, তাহলে এই যে শত শত ডাক্তার মার গেলেন, একজন রোগীকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন দিয়ে দিলেন, তাহলে এই অবদানটা নষ্ট হয়ে যায়। এক মন দুধের মধ্যে এক ফোঁটা চুন হলে যা হয়। আমি অনুরোধ করবো এইটা রমজান মাস, আসলেই অবাগ ব্যাপার পৃথিবীর অন্য দেশ গুলো যখন উৎসবের আমেজ হয় তখন ওই সব দেশে ৫০% সাশ্রয়ী দামে জিনিসপত্র বিক্রি করে দেয়। আর আমরা রমজান মাস আসলে জিনিস পত্রের দাম বাড়িয়ে দেই। এই টাকা-পয়সা আমরা কোথায় নিয়ে যাবো, টাকা কি আমার কোনো উপকারে আসবে। টাকা কামানোটা অপরাধ না। তবে মানুষকে জিম্মি করে টাকা কামানোটা  আল্লাহ তায়ালা বরদাস করবে না।


হেফাজত ইস্যুতে শামীম ওসমান বলেন, যখন হেফাজতের নেতারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার কথা বলেছিলেন, আমি তখন অবাগ ও বিস্ময়ের মতো দেখেছি। আমার মনে হয় সর্বপ্রথম যারা এবিষয় নিয়ে প্রতিবাদ করেছিল তার মধ্যে আমি মনে হয় একজন। টেলিভিশনে বলেছি, রাস্তায় দাঁড়িয়েও বলেছি, কারও ক্ষমতা থাকলে ভাঙো। কে কিভাবে চিন্তা করে আমরা জানি না। আমি রাজনীতি করি আমার কথা আমার বলা উচিৎ।  
কতিপয় লোকের অপরাধের জন্য ঢালাওভাবে সমগ্র আলেম সমাজকে আপরাধী না করার আহ্বান জানিয়ে শামীম ওসমান বলেন, ‘কোন ব্যক্তি অপরাধ করতে তার জন্য পুরো আলেম সমাজ অপরাধী না। এসব কথা আল্লাহর রাসুল (সাঃ) পনের বছর আগেই বলে গেছেন, এধরনের ব্যক্তিরা আসবেন। এরা আসার পরে একটা পর্যায়ে দারজাল আসবে। এখন দেখতে হবে কারা সঠিক কারা বেঠিক।’
 
তিনি বলেন, ‘মামুনুল হক সাহেবের কী হয়েছে তা আমার দেখার বিষয় নয়। আমরা যেনো তার জন্য পুরো আলেম সমাজকে দোষারোপ না করি। আমাদের দেশের মানুষ টাকা দিয়ে আলেমদের নিয়ে আসে ওয়াজের জন্য, আলেমরা বক্তব্য দেন। আমি নিজে অনেক ওয়াজে গিয়েছি। আমি দেখেছি তারা যখন বক্তব্য দেন তখন মানুষের চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরে এবং মানুষ তা গ্রহণ করে। সেই ব্যক্তির এহেন কার্যকালাপ যখন মানুষ দেখে তখন তারা কষ্ট পায় এবং এটা যে কোনো ধর্মে জন্যই খারাপ।
 

তিনি বলেন, মৌলবাদ সব ধর্মেই আছে। আশেপাশের দেশে দেখুন সব জায়গায় আছে। আমি মনে করি রাসূল (সাঃ) এর বিদায় হজ্জে যা বলে গেছে সেটুকুই যদি আমরা প্রচার করি তাই যথেষ্ট নতুন প্রজন্মকে ইসলাম সম্পর্কে বোঝাতে, ভালো মানুষ হিসেবে তৈরি করতে।


 
সোনারগাঁ থানার মামলার বিষয়ে শামীম ওসমান বলেন, এটা নতুন কোনো ঘটনা নয়। একাত্তরে দুই লাখ মা-বোনের  সমভ্রম হারিয়েছে। ত্রিশ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিলো। আমরা এ ঘটনায় কষ্ট পেয়েছি। যিনি নিজেকে আলেম দাবি করেন তিনি এমন কাজটা করেন কীভাবে । এরকম ঘটনা নতুন না এবং এটাও শেষ নয়। এমন ঘটনা আরও ঘটবে। আর যখন ঘটনা শেষ পর্যায়ে আসবে তথন আল্লাহ প্রত্বত রোজ কিয়ামত আমাদের সামনে আসবে তখন আমাদের কেউ থাকবে না আমাদেও সাক্ষী আমাদেরকেই দিতে হবে।