বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১   ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সিদ্ধিরগঞ্জে মেয়র আইভীর ব্যাপক উন্নয়ন

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৪:৪৫ পিএম, ৫ মে ২০২১ বুধবার

ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা নিয়ে সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন গঠিত। আর এই দুটি থানা এলাকার মাঝে সিদ্ধিরগঞ্জ আবার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভূক্ত। ফলে সিদ্ধিরগঞ্জের উন্নয়নের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভীর উপর। সেখানকার উন্নয়নে শামীম ওসমানের কোনো ভূমিকা নেই বা তার কোনো দায়িত্বও নেই। কিন্তু ফতুল্লা থানা এলাকার উন্নয়নের সম্পূর্ণ দায়িত্ব হলো শামীম ওসমানের। আর এই দায়িত্ব অনেকটা জোর করেই ধরে রেখেছেন শামীম ওসমান। কারণ ফতুল্লাকে মেয়র আইভী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আওতাভূক্ত করতে চাইলেও শামীম ওসমানের বাধার কারনে সেটা সম্ভব হচ্ছে না।

 

কিন্তু ফতুল্লাবাসী জানিয়েছেন, তাদের জন্য দুঃখের বিষয় হলো ফতুল্লার তেমন কোনো উন্নয়ন করছেন না শামীম ওসমান। ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সেখানে উন্নয়নের নামে যা হচ্ছে তার পুরোটাই হচ্ছে অপরিকল্পিতভাবে। গোটা ফতুল্লার উন্নয়ন নিয়ে শামীম ওসমানের কোনো মাস্টার প্ল্যান নেই। একই এলাকার কোনো রাস্তা উঁচু আবার কোনো রাস্তা নিচু। আর ফতুল্লার সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো জলাবদ্ধতা সমস্যা। বর্ষা শুরু না হতেই এরই মাঝে ফতুল্লার অনেক এলাকায় তীব্র জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এনায়েতনগর ইউনিয়নের মাসদাইর এলাকা এবং ফতুল্লা ও কুতুবপুর ইউনিয়নের বহু এলাকায় পানি জমে আছে। এছাড়া ফতুল্লায় চোখে পরার মতো তেমন কোনো উন্নয়নই হচ্ছে না।

 

তাই ফতুল্লার অনেকে মনে করেন শামীম ওসমান যে মাপের এমপি তিনি যদি আন্তরিক হতেন তাহলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতো। তাছাড়া অতীতে বহু বছর আগেই শামীম ওসমান নির্বাচনের আগে বলেছিলেন তিনি এমপি নির্বাচিত হলে ফতুল্লাকে তিনি সর্বোচ্চ উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যাবেন। অথচ তিনি বার বার এমপি হয়েছেন কিন্তু ফতুল্লায় একটি হাসপাতাল বা বিশ^বিদ্যালয় গড়ে তুলতে পারেননি। তিনি এমন কিছু করার চেষ্ঠাও করেননি। বক্তাবলীতে একটি সেতু নির্মানের কথা বলেছিলেন শামীম ওসমান কিন্তু সেটার কাজের কোনো অস্তিত্বই নেই। কয়েক বছর আগে এই সেতু নির্মাণের জন্য সয়েল টেস্ট করা হয়েছিলো। কিন্তু এরপর এই সেতুর আর কোনো কাজ চোখে পরেনি।

 

এছাড়া এলাকার কোথায় কি সমস্যা আছে শামীম ওসমান কখনো তা সরেজমিন পরিদর্শন করেননি। তাই তিনি হয়তো জানেনই না আসলে কোথায় কি ধরণের উন্নয়ন প্রয়োজন। এছাড়া ফতুল্লা থানা এলাকায় বিপুল সংখ্যক মানুষ বসবাস করলেও এখানে কোনো ময়লা ব্যাবস্থাপনা নেই। ফলে সেখানে সেখানে মানুষ ঘর গৃহস্তালির ময়লা ফেলছে। এতে নোংরা হচ্ছে গোটা এলাকা।


বিপরীতে মেয়র আইভী সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করে চলেছেন। তিনি নিজে বার বার সরেজমিন গিয়ে উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করছেন। সিদ্ধিরগঞ্জের অলিতেগলিতে সব রাস্তা পাকা করার পাশাপাশি তিনি রাস্তার পাশে নির্মান করছেন পরিকল্পিত ডিপ ড্রেন যা কিনা এলাকাবাসীকে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে বাঁচাবে। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ খালের উন্নয়নে প্রায় একশো কোটি টাকার বেশি খরচ করছেন। এই খালকে ঘিরে বিশাল এলাকায় উন্নয়নের মহাযজ্ঞ চলছে। খালটির সৌন্দর্য্যবর্ধন করা হচ্ছে। খালের দুই পাশে নির্মাণ করা হচ্ছে রাস্তা এবং ওয়াকওয়ে।

 

খালের উপর নির্মাণ করা হচ্ছে ছয়টি ব্রিজ। ফলে এই খালের নির্মান কাজ শেষ হলে গোটা এলাকাটি একটি পর্যটন এলাকা হিসাবে গড়ে উঠবে। সিদ্ধিরগঞ্জ এরই মাঝে একটি পরিকল্পিক সুন্দরতম এলাকা হিসাবে গড়ে উঠেছে। ফলে একই সংসদীয় এলাকা হওয়া সত্বেও মেয়র আইভীর আন্তরিক প্রচেষ্ঠার ফলে গোটা সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকাটি একটি উন্নত নগরী হিসাবে গড়ে উঠছে। তাই নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন এলাকার জনগন মনে করেন সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের ব্যার্থতার কারণেই পিছিয়ে পড়ছে ফতুল্লা থানা এলাকা।