শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০   ২০ রমজান ১৪৪৫

আরো সহজ বিজয় হতে পারে আইভীর

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৫:০০ পিএম, ৮ মে ২০২১ শনিবার

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন আগামী নির্বাচনে শক্ত কোনো প্রতিদ্ব›দ্বী থাকছেন না আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভীর। কারণ আগামী নির্বাচন বয়কট করবে বিএনপি। এরই মাঝে বিএনপি ঘোষণা দিয়েছে এই সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না তারা। তাই এই সিটির আগামী নির্বাচনে বিএনপির কোনো প্রার্থী থাকছে না। ফলে মেয়র আইভী যদি আবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান তাহলে আসন্ন নির্বাচনে সহজেই তিনি বৈতরণী পার হবেন বলে মনে করছে নারায়ণগঞ্জ শহরের রাজনৈতিক সচতেন মহল।


এদিকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের মাঝে এবার মনোনয়ন চাওয়ার কথা ছিলো নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি এডভোকেট সাখাওয়াৎ হোসেন খান এবং অপর সহসভাপতি ও বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলের। বিএনপির এই দুই নেতার মাঝে মুকুল নারায়ণগঞ্জ শহরে জনগণের দোয়া ও সমর্থন চেয়ে পোষ্টার লাগিয়েছিলেন। মনোনয়ন চাওয়ার জন্য সাখাওয়াতও প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু বিএনপি কেন্দ্রীয়ভাবে সকল স্থানীয় সরকার নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দেয়ার পর তারা দুইজনেই চুপসে গেছেন।

 

তাই এ বিষয়ে মতামত জানতে গতকাল এডভোকেট সাখাওয়াৎ হোসেন খানকে টেলিফোন করা হলে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে দেশে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না। তবুও বিগত দিনে বিএনপি সব স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। কিন্তু সরকার সারা দেশে সব নির্বাচনে জোর জবরদস্তি জারি রেখেছে। কোথাও জনগণকে ভোট দিতে দেয়া হচ্ছে না। তাই বিএনপি এই সরকারকে ক্ষমতায় রেখে আর কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আর আমি যেহেতু বিএনপির রাজনীতি করি তাই দল যে স্বিদ্ধান্ত নেবে সেটাই আমার সিদ্ধান্ত। দলীয় সিদ্ধান্তের বাহিরে আমার ব্যক্তিগত কোনো সিদ্ধান্ত থাকতে পারে না। তাই দল যদি মনোনয়ন দেয় এবং নির্বাচন করতে বলে তাহলে করবো আর দল বয়কট করলে বয়কট করবো।


এদিকে মেয়র আইভীর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলি জানিয়েছে, এই শহরে একটি মহল সব সময়ই মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এই মহলটি সব সময় চায় মেয়র পদে আইভী যেনো মনোনয়ন না পান। এর আগে শামীম ওসমান নিজে মাঠে নেমে আইভীকে মনোনয়ন বঞ্চিত করেছিলেন। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্র বিভ্রান্ত হয়ে আইভীকে মনোনয়ন না দিয়ে শামীম ওসমানকে মনোনয়ন দিয়েছিলো। পরে সেই নির্বাচনে এক লাখের বেশি ভোটে শামীম ওসমানকে হারিয়ে দিয়েছিলেন আইভী।

 

ফলে আইভীকে নিয়ে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে বেশ উচ্চ ধারনার সৃষ্টি হয় এবং গত নির্বাচনে তাকেই দেয়া হয় দলীয় মনোনয়ন। তবে বিগত নির্বাচনে শামীম ওসমান মাঠে নামিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে। দলবল নিয়ে আনোয়ার হোসেনের জন্য মনোনয়ন চেয়েছিলেন শামীম ওসমান। কিন্তু এতে অপমানিত হন আনোয়ার হোসেন। প্রধানমন্ত্রী আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলেন আইভীকে মনোনয়ন দেয়ার জন্য। ফলে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি আইভীকে মনোনয়ন দেন এবং আনোয়ার হোসেনকে প্রত্যাখান করেন। তাই ধারণা করা হচ্ছে আগামী নির্বাচনেও আইভীই পাবেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন।

 

কারণ একজন মেয়র হিসাবে আইভী যেভাবে এই সিটির ব্যাপক উন্নয়ন করে চলেছেন তাতে তাকে মনোনয়ন না দেয়ার কোনো কারণ নেই বলেই মনে করেন সবাই। যদিও মেয়র আইভী বার বার বলছেন মনোনয়নের মালিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তিনি মনোনয়ন দিলে আইভী নির্বাচন করবেন, না দিলে করবেন না। তবে যে যাই বলুক নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল মনে করেন আবারও আইভীই পাচ্ছেন মনোনয়ন এবং বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে তার বিজয় হবে আরো সহজ।