বন্দরে মাদক সম্রাটের সঙ্গে দারোগার ছবি ভাইরালে তোলপাড়
যুগের চিন্তা অনলাইন
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৪:৪৭ পিএম, ১৭ মে ২০২১ সোমবার
লকডাউনে ইয়াবাসহ পুলিশের কাছে মাদকসহ গ্রেপ্তারকৃত প্রায় এক ডজন মামলার আসামি কামতাল কদন্ত কেন্দ্রের পুলিশের এক এসআই’র সঙ্গে ছবি তুলে ফেইজবুকে ভাইরালের ঘটনায় বন্দরে ব্যাপক তালপার সৃষ্টি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পুলিশের সঙ্গে সখ্যতা করে ওই মাদক কারবারি “চিড়ইপাড়া” এলাকায় র্নিবিঘেœ ইয়াবা ও গাঁজা বিক্রি করে যাচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। পুলিশের সঙ্গে ফেইজবুকে ছবি ভাইরাল হওয়া মাদক কারবারির নাম আব্দুল হালিম ভূঁইয়া। বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দ চিড়ইপাড়া এলাকার পুলিশের তালিকাভ’ক্ত মাদক ব্যবসায়ী আয়নাল হকের ছেলে। আয়নাল হক, নারায়ণগঞ্জ জেলার তালিকাভূক্ত কুখ্যাত মাদক কারবারি। ইতিপূর্বে তাকে ধরিয়ে দিতে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষনা করেছিলেন জেলা পুলিশ সুপার।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, পুলিশের তালিকাভূক্ত চিহিৃত মাদক স¤্রাট খ্যাত বন্দরের লাঙ্গলবন্দ চিড়ইপাড়া এলাকার কয়েকটি মাদক কারবারি পরিবারের মধ্যে আয়নাল হকের একটি পরিবার। এই পরিবারের আয়নাল তার স্ত্রী হালিমা, ছেলে আব্দুল হালিম, আরো দুই বোনসহ ৫ সদস্য সবাই ইয়াবাসহ মাদক কারবারি। চিড়ইপাড়া এলাকার পিতা আয়নাল হক, পূত্র আব্দুল হালিম পিতা-পূত্রের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় একাধিক মাদক মামলা থাকায় পুলিশের তৎপরতায় ক্রসফায়ারের ভয়ে বিশেষ কৌশলে বিদেশে পালিয়ে যায়। পুলিশের ধরপাকড়াও অভিযান তৎপরতা কমে যাওয়ায় দেশে ফিরে হালিম অটোরিকশার আড়াঁলে পুনরায় ইয়াবা ও গাঁজা খুচরা-পাইকারি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
২০২০ সালে ২০ ডিসেম্বর সোনারগাঁ থানা পুলিশ হালিমকে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে আদালতে সোর্পদ করে। ৪ মাস কারাভোগের পর জামিনে এসে কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আজিজুল হকের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে চিড়ইপাড়া এলাকায় প্রকাশ্যে ফেরি করে বিক্রি করছে মরন নেশা ইয়াবা ও গাঁজাসহ নানা প্রকার মাদকদ্রব্য। এসআই আজিজুলের সঙ্গে চিড়ইপাড়া এলাকার মাদক স¤্রাট আয়নাল হকের পরিবারের সখ্যতার কারণে হালিমের সঙ্গে আস্তে আস্তে ঘনিষ্টতা সৃষ্টি হয়। এই ঘনিষ্টতা সম্পর্কে এসআই আজিজুল ইসলামের সঙ্গে চিহিৃত একজন মাদক কারবারি আব্দুল হালিম তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে ছবি তুলে (অনফঁষ ঐধষরস ইুঁরধ) নামে ফেইজবুক আইডিতে অপলোড করা হয়। ছবি ভাইরাল হওয়ার পর থেকে রমজান জুড়ে এসআই আজিজের বিরুদ্ধে মাদক কারবারিদের সখ্যতাসহ নানা অপকর্মের অভিযোগে নানা সমালোচনার ঝড় বইছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ভাড়াটিয়া জানান, দুই বছর যাবত চিড়ইপাড়া কলোনীতে ভাড়া থাকেন। মাদক কারবারি হালিম কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের দারোগা আজিজের সঙ্গে সম্পর্ক থাকায় মাদক সেবনকারিদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। নানা সমস্যার সম্মখীনে পড়লেও এই এলাকার ভাড়াটিয়া হিসাবে প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না । আয়নাল হক তার ছেলে হালিম চিড়ইপাড়া এলাকায় খুচরা বিক্রেতাদের হাতে তুলে দেয় ইয়াবাসহ মাদকদ্রব্য। স্থানীয় ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদ ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য নবীর হোসেন জানান, চিড়ইপাড়া কলোনী এলাকাটি মুছাপুর ও ধামগড় দুই ইউনিয়নে বিভক্ত। চিড়ইপাড়া এলাকার ১২ একর সরকারি সম্পত্তি ওপর ছিন্নমূল ভুমিহীন পরিবার এখানে আসার পর থেকে মাদকদ্রব্যসহ সমাজ বিরোধী কর্মকান্ড চলে আসছে। আশপাশের স্থানীয় বাসিন্দারা এসব কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কথা বললেই অনেকেই নাজেহাল করেছে মাদক ব্যবসায়ীরা ও তাদের সহযোগীরা। মাদকের ছড়াছড়ি ও মুহুর্তের মধ্যে দাঙ্গাহাঙ্গামা সৃষ্টি। এসব কারণে স্থানীয় লোকজন চিড়ইপাড়া কলোনী মানুষ কাছ থেকে এরিয়ে চলেন।
এ ব্যাপারে এসআই আজিজুল স্থানীয় চিড়ইপাড়া মাদক কারবারি হালিমের সঙ্গে সখ্যতার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কে মোবাইলে ছবি তুলে ফেইজবুকে ছড়িয়েছে। আমি তা জানি না, হালিমকে ছবি কেটে দিতে বলছি। নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-অঞ্চল) মো. শেখ বিল্লাল জানান, মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে পুলিশ সদস্যের ছবি ফেইজবুকে ভাইরাল বিষয়টি তদন্ত পূর্বক দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।