শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১   ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

এনায়েতনগর-ফতুল্লা-কুতুবপুরে জলজটে নাকাল মানুষ

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ১০:০২ পিএম, ৩ জুন ২০২১ বৃহস্পতিবার

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের ফতুল্লা থানার তিনটি ইউনিয়ন এলাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এই তিনটি ইউনিয়ন হলো এনায়েতনগর, ফতুল্লা এবং কুতুবপুর ইউনিয়ন। এই তিনটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এখন পরিস্থিতি এতোটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে সাধারন মানুষের বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পরেছে। আর এই তিনটি ইউনিয়নের মাঝে ফতুল্লা ও কুতুবপুর পুরোটাই রয়েছে ডিএনডি বাধের ভেতরে। আর এনায়েতনগরের ৯নং ওয়ার্ড তথা উত্তর মাসদাইর ও গাবতলী এলাকা রয়েছে ডিএনডি বাধের ভেতরে।

 

ফলে ডিএনডির অভ্যন্তরে গোটা এলাকাই বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে এবং স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া এনায়েতনগর ইউনিয়নের মুসলিম নগর এবং মাসদাইর এলাকায়ও স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এসব এলাকায় বৃষ্টি হলে পানি সরছেনা। হাঁটু পানির নিচে ডুবে থাকছে সব রাস্তাঘাট, স্কুল, মসজিদ সহ সব কিছু। মানুষের ঘরে ঘরে এবং দোকানপাটের ভেতরেও পানি জমছে। ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি।

 


এদিকে এই তিনটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা হলেন এনায়েতনগরে আসাদুজ্জামান, ফতুল্লায় লুৎফর রহমান স্বপন এবং কুতুবপুরে মনিরুল আলম সেন্টু। এসব জলাবদ্ধতা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকরা এই তিন চেয়ারম্যানের সাথে আলাপ করলে তারা জলাবদ্ধতা নিরসনে অসহাত্ব প্রকাশ করেন। কারন এসব এলাকার বেশির ভাগ উন্নয়ন কাজ করছে এলজিআরডি সহ বিভিন্ন সরকারী সংস্থা। কিন্তু তারা পরিকল্পিত কোনো উন্নয়ন করছেন না। তারা পানি নিস্কাশনের ব্যাবস্থা না করেই রাস্তা বানাচ্ছে। বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি কোথা দিয়ে নামবে রাস্তা বানানোর সময় সেটা এসব সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারদের মাথায় থাকছে না। ফলে যা হবার তাই হচ্ছে। চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে মানুষ।  

 

এদিকে প্রতি বছরই বর্ষা এলে ডুবে থাকছে ফতুল্লা আর কুতুবপুরের অথিকাংশ এলাকা। এই দুটি ইউনিয়ন ডিএনডি বাধের ভেতরে হওয়ায় মানুষ আশা করেছিলো ডিএনডির জলাবদ্ধতা নিরসনে যে মোটা অংকের বাজেটের কাজ হচ্ছে তাতে তাদের এই দূর্দশার লাগব হবে। কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে ডিএনডির ফতুল্লা এলাকা নাকি এই প্রজেক্টের ভেতরেই নেই। আর কুতুবপুর থাকলেও সেখানেও জলাবদ্ধতা হচ্ছে। তাই চরম হতাশায় ভুগছে এসব এলাকার মানুষ।
এদিকে এলাকার জনগণকে এই জলজট থেকে বাঁচাতে না পারার কারণে তীব্রভাবে সমালোচিত হচ্ছেন তিন ইউনিয়নের তিন চেয়ারম্যান। মানুষ আসাদুজ্জামান, স্বপন আর মনিরুল আলম সেন্টুর সমালোচনা করছেন। আর সবেচেয়ে বেশি সমালোচিত হচ্ছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান।

 

এসব ইউনিয়নের ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষের মতে শামীম ওসমান হলেন একজন দাপুটে এমপি। তিনি কথাও কম বলেন না। নিজের এলাকা ডুবে থাকলে অন্যের সমালোচনা করতে পছন্দ করেন এই এমপি। তবে এখন সোস্যাল মিডিয়ার যুগ। তাই সাধারণ মানুষ নিজের মোবাইলে ছবি তুলে তা ফেসবুকে আপলোড করছেন এবং এগুলো যে শামীম ওসমানের এলাকা সেটা পরিস্কারভাবেই লিখছেন। এককথায় শামীম ওসমান যে উন্নয়নে ব্যর্থ হচ্ছেন সেটা বলার জন্য এখন আর তেমন কিছুর প্রয়োজন পড়ছে না। তার ব্যর্থতার কারণেই আজ চরম দুর্ভোগে পতিত হয়েছে তার এলাকার লাখ লাখ মানুষ।  

 

অপরদিকে তিন চেয়ারম্যান সাহস করে শামীম ওসমানের কাছে তাদের এলাকার সমস্যাগুলি কখনোই তুলে ধরেননি। বরং জি হুজুর মার্কা এই সকল চেয়ারম্যানরা উল্টো শামীম ওসমানের গুনগান গেয়ে ব্যস্ত থেকেছেন। তাই এমপি ও এই তিন চেয়ারম্যানের ব্যর্থতার কারণে ফতুল্লার তিন ইউনিয়নের মানুষের দুঃখের কোনো সীমাপরিসীমা নেই।