মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১০ ১৪৩১   ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জালকুড়িতে ৩৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৯:৩৬ পিএম, ৪ জুন ২০২১ শুক্রবার

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। স্বিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়িতে অবস্থিত ২৩.২৯ একর জমির উপর নির্মান করা হচ্ছে এই প্ল্যান্ট। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ব্যায় করা হচ্ছে ৩৪৫ কোটি ৯১ লাখ ৩১ হাজার টাকা। সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, এরই মাঝে এই প্রকল্পের প্রায় নব্বই শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই বছরের ডিসেম্বর মাসেই সিটি করপোরেশনকে কাজ বুঝিয়ে দেবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

 

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকায় বর্জ্য নিয়ে আর কোনো সমস্যা থাকবে না। বরং এই প্রকল্পে প্রতি দিন যে পরিমাণ বর্জ্য লাগবে তাতে প্রতি দিন পার্শবর্তী ফতুল্লা থেকে অথবা ঢাকা সিটি করপোরেশন থেকে ১শ টন বর্জ্য আনতে হবে। আর এই বর্জ্য ব্যাবহার করে উৎপাদন করা হবে বিদ্যুৎ। সিটি করপোরেশন সূত্র আরো জানিয়েছে এই প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ মন্ত্রী এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়রের মাঝে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। অধিগ্রহনকৃত ২৩.২৯ একর জায়গার মাঝে ১০ একর জায়গায় ওয়েস্ট টু এনার্জি প্লান্ট নির্মান করবে বিদ্যুৎ মন্ত্রনালয়।  

 

এদিকে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের এই বর্জ্য ব্যাবস্থাপনা প্লান্টের জন্য যে ৩৪৫ কোটি ৯১ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা ব্যায় করা হচ্ছে তার পূরোটাই দিয়েছে সরকার। এই টাকার মাঝে জমি অধিগ্রহন করতে খরচ হয়েছে প্রায় দুইশ কোটি টাকা। বাকী টাকা খরচ করে এরই মাঝে প্রকল্পের আওতায় ২.১৮ কিলোমিটার রাস্তা, ২ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন, ৩৭১৭ বর্গ কিলোমিটার অফিস ভবনের চারিপাশে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মান করা হয়েছে। শিগগিরই প্রকল্পের বাকী কাজ শুরু করা হবে। প্রকল্পটি চালু হলে কেবল মাত্র বিদ্যুৎই পাওয়া যাবে না, বর্জ্য অপসারনের মতো গুরুতর সমস্যার সমাধান হবে। সম্পূর্ণ সিটি করপোরেশন হতে প্রতিদিন ৬০০ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারন করলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকা হবে একটি সুপরিচ্ছন্ন নগরী।

 

গোটা জেলা শহরের একটি মারাত্বক সমস্যার সমাধান হবে। প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী যে দশটি মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন তার মাঝে এটি অন্যতম একটি প্রকল্প। কারন এই প্রকল্পটির সাথে জরিত সিটি করপোরেশনের জনস্বাস্থ্য এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা। এই প্রকল্পের আওতায় আরো নির্মান হবে বায়ো গ্যাস প্লান্ট, রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট, কম্পোষ্ট প্ল্যান্ট, লিচিড পন্ড, গ্রিন পন্ড, গ্রে ওয়াটার পন্ড, গ্যারেজ, ওয়েটিং রুম সহ আরো বহু স্থাপনা। প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। এই বছরের ডিসেম্বর মাসেই প্রকল্পটি বুঝে পাবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন।

 

এরপর শুরু হবে বিদ্যুত প্রকল্প নির্মাণ এবং বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট নির্মাণ এবং রিসাইক্লিং কারখানা নির্মানের কাজ। আর এসব কাজের জন্য নতুন বরাদ্ধ আসবে। ফলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আওতায় এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হলে একেবারে বদলে যাবে চিত্র। নারায়ণগঞ্জে বর্জ্য নিয়ে আর কোনো সমস্যাই থাকবে না। বরং বর্জ্য থেকে উৎপাদন করা হবে বিদ্যু ও গ্যাস। রিসাইক্লিনিং এর মাধ্যমে উৎপাদন করা হবে কম্পোষ্ট সার। প্রকল্পটিতে উন্নত প্রযুক্তির ব্যাবহার হবে। বাকী টেকনিক্যাল কাজগুলি করবে একটি চায়নিজ কোম্পানী।