বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১   ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

কর্ম আলাদা ফলও ভিন্ন, একজন প্রশংসিত অপরজন সমালোচিত

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৮:৩৩ পিএম, ৯ জুন ২০২১ বুধবার

একজন টানা সতেরো বছরের বেশি সময় ধরে রাতদিন একাকার করে গণমানুষের কল্যাণে কাজ করে চলেছেন, আর অপরজন ব্যাস্ত থেকেছেন রাজনীতির নামে ষড়যন্ত্র আর চাঁপাবাজি নিয়ে। একজন সারাক্ষণ তার এলাকার উন্নয়নের মাস্টার প্ল্যান তৈরী করা এবং সেই মাস্টার প্ল্যান বাস্তাবায়ন করার জন্য সর্ব শক্তি নিয়োগ করে কাজ করে চলেছেন। বিপরিতে অপরজন ব্যস্ত রয়েছেন কাকে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করবেন আর কাকে পুনর্বাসিত করবেন সেই তালে এবং নিজের ও পরিবারের আখের গোছানোর কাজে।

 

ফলে, শেষ পর্যন্ত যা হবার তাই হয়েছে। একজনের এলাকার মানুষ এখন বেশ স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপন করছেন। আর অপরজনের এলাকা এরই মাঝে ‘ডুবন্ত নগরীর’ তকমা পেয়েছে। তার গোটা এলাকা পরিণত হয়েছে ডোবা নালায়। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানকে নিয়ে এমনই আলোচনা সমালোচনা চলছে। মেয়র আইভী বিগত দিনে যে কাজ করেছেন তার সুফল সাধারন মানুষ পাচ্ছে। তিনি এই নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার দায়িত্ব নেয়ার আগে এই শহর ছিলো সাধারণ মানুষের চলাচলের অনুপযোগী। তখন একটি ভগ্ন চেহারার ছিলো নারায়ণগঞ্জ। ফলে তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম সাত বছরে নারায়ণগঞ্জকে শহরে নির্মাণ করেছেন।

 

টানা সাত বছর তিনি নারায়ণগঞ্জ পৌর সভার মেয়র থাকা কালে এই শহরের রাস্তাঘাট আর ড্রেনেজ ব্যাবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। বসবাসের অযোগ্য নগরীকে করেছেন বসবাস উপযোগী নগরী। এরপর নারায়ণগঞ্জ শহরের সাথে বন্দর আর সিদ্ধিরগঞ্জকে জুড়ে গঠন করা হলো নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। আর টানা দশ বছর ধরে আইভী এই সিটি করপোরেশনের মেয়র। এই সিটি করপোরেশনের তিনটি থানা এলাকা জুড়ে তিনি এই দশ বছরে কি ধরণের উন্নয়নের মহাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছেন তার স্বাক্ষী গোটা সিটি করপোরেশন এলাকার মানুষ। তাই সিটির মানুষ এখন বলছেন তারা ভাগ্যবান তাই আইভীর মতো মেয়র পেয়েছেন।

 

বিপরিতে ফতুল্লার মানুষ বলছেন তারা হতভাগ্য তাই শামীম ওসমানের মতো এমপি পেয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ সিটির আর ফতুল্লার মানুষের মতে দুই নেতার মাঝে আরো একটি বড় পার্থক্য হলো আইভী সরেজমিন গিয়ে মানুষের দু:খ দুর্দশা দেখেন এবং লাঘব করেন। আর শামীম ওসমান কোথাও যান না। কোথায় আসলে কি সমস্যা আছে সেটা তিনি জানেনও না। তার চেলারা যা বলেন তাই শোনেন তিনি। বাস্তবতার সাথে যার কোনো মিল থাকে না। এছাড়া উন্নয়ন নিয়ে আইভী খুবই আন্তরিক। কিন্তু শামীম ওসমান মোটেও আন্তরিক নন।

 

ফলে যা হবার তাই হয়েছে। আইভীর এলাকার মানুষ স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপন করছে। আর বিপরিতে শামীম ওসমানের এলাকার মানুষ চরম দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন। তার এলাকার একটি বড় অংশের রাস্তাঘাট বাড়িঘর বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে। অথচ তিনি সব সময় শত শত কোটি টাকার উন্নয়নের গল্প শুনিয়ে আসছেন। শামীম ওসমানের ফতুল্লা অঞ্চলে এখন কি যে অবস্থা তাতো প্রতিদিনই সোস্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশ হচ্ছে। প্রচার হচ্ছে সচিত্র প্রতিবেদন।

 

বিপরীতে আইভীর সিটি করপোরেশন এলাকায় দেখা যাচ্ছে বিপরীত চিত্র। তিনি রাস্তাঘাট আর ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি দশটি মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। যার সুফল এরই মাঝে মানুুষ পাচ্ছে এবং কিছু দিনের মধ্যে পুরোপুরি সুফল ভোগ করা শুরু করেছেন। তাই আইভী আগের মতোই এখনো ব্যপক প্রশংসিত হচ্ছেন বিপরীতে শামীম ওসমান হচ্ছেন তীব্রভাবে সমালোচিত। তারা দুইজনেই তাদের কৃতকর্মের ফল ভোগ করছেন বলে নারায়ণগঞ্জ সিটি আর ফতুল্লার অধিকাংশ মানুষ মনে করেন।