শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০   ২০ রমজান ১৪৪৫

খোরশেদের বিয়ে ও চরিত্রহননের ঘটনা সত্য, আদালতে চার্জশীট

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৯:৪৪ পিএম, ৯ জুলাই ২০২১ শুক্রবার

# ২০২০ সালের ২ আগস্ট বিয়ে করেন কাঁচপুরে


# দেনমোহর হয় ৫ লাখ টাকা, প্রথম স্ত্রীর ভয়ে ঘটনা লুকান দুইজন

 

নন্দিত কীভাবে নিন্দিত হয় তার যেন জ্বলন্ত উদাহরণ নাসিক ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। তিনি নিজেই তার লেখা এক কবিতা পদাবলীতে উল্লেখ করেছেন, “সুন্দরের মাঝে কুৎসিত বসবাস, সঙ্গী হতাশা আর দীর্ঘ নিঃশ্বাস। নিকষ কালো জোৎস্না রাত, চারিদিক জুড়ে শুধুই বিষাদ।

 

তুমি কি পদ্মপুকুর, নাকি বহমান নদী? তাতে কোন ক্ষতি নেই, আমায় ভালোবাসো যদি। মেয়ে তুই বোকা, ভ্যালেন্টাইনের নামে এতো বড় ধোকা?” কবিতার মতনই ভালোবাসা ও বিয়ের ফাঁদ পেতে নারীর চরিত্রহরণের কুপ্রচেষ্টায় এবার নিজেই ধরাশায়ী হয়েছেন কাউন্সিলর খোরশেদ। কেননা, কাউন্সিলর খোরশেদের বিরুদ্ধে ২য় স্ত্রী দাবি করা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাঈদা আক্তার ওরফে সায়েদা শিউলীর দায়ের করা মামলায় অভিযোগের প্রত্যেকটি বিষয়ে সত্যতা ও প্রমাণাদি পেয়ে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো.তরিকুল ইসলাম। ৫ জুলাই আদালতে এই চার্জশীট দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। 

 

থানা পুলিশ ও চার্জশীট সূত্রে জানা যায়, কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ (৪৭) ও আরটিএন ফেরদৌসি আক্তার (রেহেনা মুসকান) এর বিরুদ্ধে ৬নং স্বাক্ষী, আসামী দুজনের দেয়া বক্তব্য, শিউলীর সাথে খোরশেদের ছবি ও ম্যাসেঞ্জারে কথোপকথনের ছবি ও  ম্যাসেঞ্জারের কথোপকথনের এর প্রিন্ট কপি ৭২ পাতাসহ নানা আলামতসহ আদলতে চার্জশীট প্রদান করা হয়।   

 

চার্জশীটে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, সায়েদা শিউলী একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। তিনি বাংলাদেশ সিএনজি অনার্স এসোসিয়েশন নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের সভাপতি। তিনি গার্মেন্ট, হোসেয়ারীসহ বিভিন্ন এক্সপোর্ট ইমপোর্ট এর ব্যবসা করেন। তিনি এফবিসিসিআই এবং বিজিএমই’র সদস্য। তিনি খোরশেদ  ও রেহেনা মুসকানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন সে প্রসঙ্গে তদন্তকারী কর্মকর্তার বক্তব্য, মামলাটি গোপনে ও প্রকাশ্যে তদন্তকালে প্রাপ্ত স্বাক্ষ্যপ্রমাণে ও স্থানীয় লোকদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সায়েদা শিউলী এর মামলার ১নং আসামী মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের ছোট বেলা থেকে পরিচয়।

 

এমতাবস্থায় মামলার বাদিনীর  বিয়ে হয়ে যায়। সেখানে তাঁর তিন সন্তান। স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় সায়েদা শিউলীর বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। পরবর্তীতে খোরশেদ বিভিন্ন সময় প্রস্তাব দিলে সায়েদা শিউলী তাতে রাজি না হওয়ায় খোরশেদ ফেসবুকে, মেসেঞ্জারেসহ ফোনে একাধিকবার বিয়ের প্রস্তাব দিতে থাক। ২০২০ সালের ২ আগস্ট সায়েদা শিউলীর কাঁচপুরে অবস্থিত এসএস ফিলিং স্টেশনে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক ৫ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য্য করে কয়েক স্বাক্ষীর মোকাবেলায় খোরশেদ সায়েদা শিউলীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের সময় বিয়ের কাজী খোরশেদ নিজেই নিয়ে আসে। খোরশেদের পূর্বের স্ত্রী ও সন্তান আছে বিধায় বিয়ের বিষয়টি শিউলী ও খোরশেদ দুজনই গোপন রাখে। বিয়ের পর খোরশেদ শিউলীকে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ঘোরাফেরাসহ শারীরিক সম্পর্ক করে থাকত।

 

পরবর্তীতে বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে খোরশেদ শিউলীর সাথে সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। ঠিক এসময় ব্যবসায়িক কাজে শিউলী দুবাই চলে যায়। এবং দুবাই থাকাকালীন সময়ে হঠাৎ চলতি বছরের গত ২৪ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে শিউলীর এক নিকটাত্মীয় তাকে ফোন করে জানায় খোরশেদ তার ফেসবুক আইড থেকে লাইভে এসে শিউলীর নামে কুৎসা রটনা করছে। খোরশেদ তার বিরুদ্ধে নানা মানহানীকর বক্তব্য দেয়। এছাড়া নানা মিথ্যা রটনাও তিনি করেন।   

 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চার্জশীটে বলেন, মামলাটি সার্বিক তদন্তে স্বাক্ষ্য প্রমাণে জব্দকৃত আলামত ও জব্দকৃত আলামতের আইটি বিশেষজ্ঞের মতামত পর্যালোচনা এবং ঘটনা ও ঘটনার পারিপার্শিকর্তার আলোকে মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, আরটিএন ফেরদৌসি আক্তার (মুসকান রেহানা) দুজনের বিরুদ্ধে সায়েদা শিউলীর আনা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে।