শীঘ্রই হচ্ছে আ’লীগের সম্মেলন
যুগের চিন্তা অনলাইন
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৬:২৭ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১ শুক্রবার
# এক দেড় মাসের মধ্যে জেলার সম্মেলন করার নির্দেশ মির্জা আজমের
# ১৮ সেপ্টেম্বর ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে নির্ধারণ হবে সম্মেলনের তারিখ
# পদ হারাতে পারে হাই-বাদল, আসতে পারে নতুন নেতৃত্ব
আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্র। সেই লক্ষ্যে ১৮ই সেপ্টেম্বর মিটিংয়ে বসতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটি। ওয়ার্কিং কমিটির এই মিটিংয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্মেলনের দিন-ক্ষণ চুড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
জানা গেছে, গত ৭ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক ভিপি বাদলের মধ্যে চলমান বিরোধের বিষয়টি অবগত হন মির্জা আজম। মির্জা আজমের সামনেই আব্দুল হাই ও বাদল পরস্পরের প্রতি নালিশ করেন এবং উভয়ের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক ঘটে।
সূত্র জানায়, মির্জা আজম তাদের উভয়কে নিবারণ করেন এবং তাদের প্রতি ক্ষুব্ধ হন। একপর্যায়ে হাই-বাদলকে ১০ মিনিটের সময় বেধে দেন নিজেদের মধ্যে মিমাংসা করে নেয়ার জন্য। নচেৎ, উভয়কেই দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে বলে জানান তিনি। মির্জা আজমের ভাষ্য ছিলো- ‘১০ মিনিটের মধ্যে বিরোধ মিমাংসা না করলে উভয়কে অব্যাহতি দিয়ে কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতিকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদককে ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী করার মাধ্যমে আগামী এক দেড় মাসের মধ্যে জেলার সম্মেলন করা হবে। একপর্যায়ে তারা উভয়ে ঘাবরে যান এবং উভয়ে পৃথক একটি রুমে দরজা বন্ধ করে বসে ১০ মিনিটের মধ্যে নিজেদের মাঝে মিমাংসা করে নেন। তারা মিলে মিশে কাজ করবেন বলে মির্জা আজমকে প্রতিশ্রুতি দেন। অতঃপর আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর জেলার ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং করার জন্য নির্দেশনা দেন মির্জা আজম। কবে নাগাদ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করা হবে তা ওই মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে কেন্দ্রে অবগত করার জন্য বলা হয়।
জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা দৈনিক যুগের চিন্তাকে জানিয়েছেন, ‘১৮ সেপ্টেম্বর ওয়ার্কিং কমিটি মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেবে যে, কবে কোথায় কিভাবে সম্মেলন হবে। যদিও কয়েকটি থানা কমিটি নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। ওই মিটিংয়ে এসব জটিলতা নিরসনে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে শীঘ্রই অনুষ্ঠিত হবে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন।’
জানা গেছে, গত ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর কেন্দ্র থেকে আব্দুল হাইকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সহ-সভাপতি এবং আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে তিন সদস্যের জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিলো। দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় পর ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের পূর্নাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দ্বিবার্ষিক কমিটি হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের মেয়াদ ফুড়িয়েছে আরো বহু আগেই।
এদিকে, জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি হওয়ার পর থেকেই নেতৃবৃন্দরা মেরুকরণের রাজনীতিতে জড়িয়ে বিভক্ত হয়ে পড়ে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচিও তারা পালন করতো পৃথক ভাবে। তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কম হয়নি। তাছাড়া, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সেক্রেটারি দলের অন্যান্যদের সাথে সমন্বয় করে কোন সিদ্ধান্ত নিতো না বলে অভিযোগ নতুন নয়। এমনকি কমিটি ঘটনের প্রায় ৪ বছরে ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং হাতে গোনা মাত্র কয়েকটি হয়েছে। সূত্রগুলো বলছে, আলোচনা-সমালোচনায় বিদ্ধ আব্দুল হাই ও ভিপি বাদল আসন্ন সম্মেলনে তাদের পদ হারাতে পারেন বলে অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এক্ষেত্রে জেলা আওয়ামী লীগে আসতে পারে নতুন নেতৃত্ব।