শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০   ১৯ রমজান ১৪৪৫

তারেক রহমানের কাছে নালিশ

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৬:১৯ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ সোমবার

# নালিশ পেয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তারেক রহমান

# নারায়ণগঞ্জের কমিটি নিয়ে কেন্দ্রেও দুটি পক্ষ হয়েছে

 
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ১০টি ইউনিট কমিটি গঠনে অনিয়ম ও অগঠনতান্ত্রিক কার্যক্রমের বিষয়ে নালিশ গিয়েছে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে। বিশেষ করে, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মামুন মাহমুদ এবং তার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগসহ তথ্য প্রমাণ পৌছেছে তারেক রহমানের হাতে। এসব অভিযোগের বিষয়ে কেন্দ্রের কয়েকজন নেতাকে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনাও দিয়েছেন তারেক রহমান। বিএনপির একাধিক সূত্র দৈনিক যুগের চিন্তাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  
 

জানা গেছে, ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নারায়ণগঞ্জে যোগ্য ও ত্যাগীদের নিয়ে শক্তিশালী কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেয়া হয় জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাড. তৈমুর আলম খন্দকার এবং সদস্য সচিব মামুন মাহমুদের কাঁধে। কিন্তু সেই দায়িত্ব পালনে নানা বিতর্কের জন্য দিয়েছেন তারা। বিশেষ করে, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মামুন মাহমুদ নিষ্ক্রিয় ও বিতর্কিতদের কমিটিতে আনতে গিয়ে চারিদিক থেকেই সমালোচনা কুড়িয়েছেন। তাই তৈমুরের তুলনায় মামুন মাহমুদের বিতর্কের পাল্লা ক্রমশই ভারি হচ্ছে। নেতাকর্মীদের অভিযোগ, যোগ্য ও ত্যাগীদের বাদ দিয়ে বিশেষ একটি সিন্ডিকেটের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য অর্থের বিনিময়ে বিতর্কিতদের পদায়ন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন মামুন মাহমুদ। ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভও করেছেন নেতাকর্মীরা। একই সাথে মামুন মাহমুদের অনিয়ম ও তার সিন্ডিকেটের অপতৎপরতার বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদগুলো অভিযোগ আকারে তারেক রহমানের কাছে পৌছেছে।
 

বিএনপির বিশ্বস্ত সূত্রগুলোর দাবি, নারায়ণগঞ্জের সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম আজাদ ও শহিদুল ইসলাম বাবুলকে ম্যানেজ করে চলছেন মামুন মাহমুদ। শুধু কী তাই? দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কবির রিজভী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও বরিশালের সাবেক এমপি কেন্দ্রীয় নেতা আলালসহ হেভীওয়েট একাধিক নেতাকে বশে এনেছেন মামুন মাহমুদ। কেন্দ্রীয় নেতাদের বশে আনা ক্ষেত্রে তাকে সহায়তা করে যাচ্ছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফতুল্লার শাহ-আলম, রূপগঞ্জের কাজী মনির, মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু ও আড়াইহাজারের নজরুল ইসলাম আজাদসহ কতিপয় নেতা। তারা প্রত্যেকেই অর্থবৃত্তের মালিক। তাদের দ্বারা কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে সক্ষতা গড়ে তোলার পাশাপাশি নির্বাহী কমিটির এই সদস্যদের প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়নের জোড়ালো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মামুন মাহমুদ।
 

সূত্রের দাবি, মামুন মাহমুদ ও কেন্দ্রের একাংশের নেতাদের বিষয়ে উত্থাপিত এসব অভিযোগ নিয়ে বর্তমানে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যেই দুটি পক্ষ হয়েছে। মামুন মাহমুদের পক্ষে কেন্দ্রীয় নেতা সালাম ও বাবুলের ম্যানেজ হওয়ার বিষয়ে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা মিলন, এ্যানি ও খোকন সহ আরো কয়েকজন নেতা। মূলত, তাদের মাধ্যমেই মামুন মাহমুদের সিন্ডিকেট ও অনিয়মের বিষয়ে তারেক রহমানের কাছে নালিশ গিয়েছে বলে দাবি করছে সূত্রটি। এর প্রেক্ষিতেই ওই নালিশ আমলে নিয়ে বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন তারেক রহমান।
 

জানা গেছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর তারেক রহমানের সাথে অনলাইনে মিটিং ডাকা হয়েছিলো। ওই মিটিংয়েই কমিটির অনুমোদন দেয়ার কথা ছিলো। সেই লক্ষে তৈমুর আলম খন্দকার এবং মামুন মাহমুদ তাদের মতো করে পৃথক খসড়া কমিটি প্রস্তুত করেছিলো। কিন্তু এর আগেই সিন্ডিকেট ও অনিয়মের বিষয়ে তারেক রহমানের কাছে অভিযোগ যাওয়ায় সেদিনের মিটিংয়ে অংশই নেননি তারেক রহমান।