শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১   ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

পাল্টাতে পারে এনায়েতনগর ইউপি’র সমীকরণ

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৬:৫৩ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার

ঘনিয়ে আসছে ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিন। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ডিসেম্বরে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নে চলছে বিভিন্ন প্রার্থীদের নির্বাচনী সালাম। সেই সাথে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কর্মীরাও ব্যানার ফেস্টুন করে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। তবে এনায়েতনগর ইউনিয়নের চিত্র কিছুটা ভিন্ন। বর্তমান চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামানের ব্যানার ফেস্টুন তেমন দেখা না গেলেও এই ইউনিয়নে জটিল সমিকরন অপেক্ষা করছে। 

 

আগামী ইউপি নির্বাচনে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লিটন নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। তবে তিনি কোন দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করবেন না। সেই  ক্ষেত্রে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি একটি বিশেষ সিগন্যালের অপেক্ষায় রয়েছেন। তিনি সিগন্যাল পেলে এনায়েতনগরের অবস্থা কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের গেল বারের নির্বাচনের মতো হয়েও যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। 

 

২০১৬ সালে এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়েছিলেন তৎকালীন ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আসাদুজ্জামান। সেই নির্বাচনে  আওয়ামীলীগের  মনোনয়ন দৌড়ে মাসদাইরের মতিউর রহমান মতি শেষ পর্যন্ত টিকতে পারেনি। অপরদিকে মাঠে থেকে কাজ করেছিলেন তৎকালীন এনায়েতনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লিটন। এলাকায় প্রচার প্রচারনাও চালিয়েছিলেন পুরোদমে। তবে হরিহর পাড়ায় একটি গনসংযোগের প্রাক্কালেই তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাড়ায়। ঐ গনসংযোগের পর তিনি আর কোনো সভা সেমিনার করেননি। অর্থাৎ তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। 

 

এনায়েতনগরে আসাদুজ্জামানের সাথে বিএনপির  ধানের শীষের প্রার্থী  আলমগীর হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ছিলেন প্রয়াত নাছির উদ্দিন চেয়ারম্যানের ছেলে অ্যাড.জাহিদ হাসান রুবেল। ঐ নির্বাচনে রুবেল ও  আলমগীরের সাথে আসাদুজ্জামানকে প্রতিদ্বন্ধীতা করতে হয়েছে। অনেকটা বেগ পেতে হয়েছে আসাদুজ্জামানকে। কাশিপুর,বক্তাবলী ও কুতুবপুরের মতো সহজ ছিলনা এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। এবারের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি থেকে প্রার্থীতা দেয়ার কথা রয়েছে। তবে তা এখনো নিশ্চিত হয়নি। 

 

অপরদিকে সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লিটন রয়েছেন বিশেষ একটি জায়গা থেকে গ্রিণ সিগন্যাল পাওয়ার অপেক্ষায়। ঐ সিগনাল পেলে নৌকার সাথে নির্বাচনের মাঠে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট যুদ্ধে অবতীর্ন হবেন তিনি। আর ঐ সিগন্যাল পেলে  এনায়েতনগরের নির্বাচন কুতুবপুরের মতো হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।  তবে লিটন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পর মাঠে থাকবেন নাকি আবার পিছু হটবেন তা নিয়েও রয়েছে নানা কথা। অপরদিকে আসাদুজ্জানের নৌকা প্রতীক পাওয়া নিয়েও এখনো  শংকা। কিং মেকারখ্যাত মোহাম্মদ আলীর ভাতিজা হাবিবুর রহমান লিটন। 

 

যদি নৌকা প্রতীকের আসাদুজ্জামান মনোনয়ন পান, আর  যদি লিটন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকেন তাহলে এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের সমিকরণ ভিন্নদিকে মোড় নিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সেই ক্ষেত্রে লিটনকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পূর্বের কৌশল অবলম্বন করলে নৌকার প্রার্থীর পথ অনেকটা সুগম হতে পারে বলে  মনে করেন আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ। অপরদিকে আসাদুজ্জামান শেষ পর্যন্ত নৌকা প্রতীক পাবেন  তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি তার শিবিরের লোকজন। 

 

এব্যাপারে এনায়েতনগর ইউনিয়নের একজন বিএনপি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগামী ইউপি নির্বাচন সুষ্ঠ হবে কিনা,তা যতোক্ষণ নিশ্চিত না হবে ততোক্ষণ পর্যন্ত কোনো প্রার্থী নির্বাচন করে শান্তি পাবে না। শুধু এনায়েতনগরই নয়, বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ আগামী ইউপি নির্বাচনে  প্রার্থী দেয় কিনা তা দেখার বিষয়।