বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৩ ১৪৩১   ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

ডিসেম্বরের মধ্যে দেয়া হবে ১০ কোটি টিকা

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ১১:০৭ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ রোববার

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে দেশে ফের অনুষ্ঠিত হবে গণটিকাদান কর্মসূচি। এ দিনের পরিকল্পনা ঘোষণা করতে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ১০ কোটি টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ভার্চুয়ালি এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এর আগে গত ৭ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত প্রথম ধাপে গণটিকা দেওয়া হয়। আর সেপ্টেম্বরে গণটিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়।

 


তিনি জানান, গণটিকাদান কর্মসূচির বিশেষ দিনে ৮০ লাখ টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই কার্যক্রমে অধিকাংশ টিকা দেওয়া হবে সিনোফার্মের। ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন। এই দিনেই টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে। আপাতত একদিনের জন্য ক্যাম্পেইন চলবে। ক্যাম্পেইনে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত টিকাদান চলবে। প্রয়োজনে একাধিক শিফটে টিকা দেওয়া হবে।


এর পাশাপাশি নিয়মিত চলমান কর্মসূচিও চলবে বলে জানান জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, বর্তমানে নিয়মিত কর্মসূচিতেও প্রতিদিন ছয় লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ এই দিনে যারা গ্রামে থাকে, দরিদ্র জনগোষ্ঠী, বয়স্ক- তারা এই কার্যক্রমে টিকা নিতে পারবে। তবে এই কার্যক্রমে শুধু প্রথম ডোজের টিকার দেওয়া হবে। এদিন গর্ভবতী নারী ও দুগ্ধদানকারী মায়েরা টিকা পাবেন না। ইউনিয়ন, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা এলাকায় ৬ হাজারের বেশি কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রম চলবে।


দেশে এখন পর্যন্ত কত টিকা এসেছে সে পরিসংখ্যান তুলে ধরে জাহিদ মালেক বলেন, অনেক দিন ধরেই সরকার টিকা পাওয়ার চেষ্টা করে এসেছে। শুরুতে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে টিকার জন্য চুক্তি হয়। কিছু টিকা সেখান থেকে পাওয়াও গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, তবে মাঝপথে সেটা বন্ধ হয়ে যায়।

 

এরপর চীন থেকে সাত কোটি টিকার চুক্তি হয়েছে। কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় ফাইজারের টিকা আসা শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে টিকা নিয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছি জানিয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত সাড়ে ৫ কোটি ডোজ টিকা হাতে পাওয়া গেছে। এরমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে ৪ কোটি ডোজ। আর হাতে রয়েছে দেড় কোটি ডোজ টিকা।

 

পরিকল্পনার বিস্তারিত জানানোর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। অনেকেই টিকা নিতে নিবন্ধন করে অপেক্ষায় আছেন মাসের পর মাস; তারা টিকাদান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে টিকা নিতে পারবেন কিনা, এমন প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যারা অনেক দিন আগে নিবন্ধন করেছেন কিন্তু টিকা পাননি এবং অপেক্ষায় আছেন, তাদের অবশ্যই আমরা অগ্রাধিকার দেবো। আপনারা জানেন, প্রথম দিকে নিবন্ধন একেবারে অনেক বেশি হয়ে গিয়েছিল। যে কারণে আমাদের একটি জট তৈরি হয়েছিল। কোনও কোনও দিন ২০ থেকে ২৫ লাখ লোকের নিবন্ধনও হয়। এখন আমাদের হাতে পর্যাপ্ত টিকা আছে, আর জট থাকবে না।

 

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের ১০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এটি একটি আনুমানিক হিসাব। এটি নির্ভর করছে টিকাপ্রাপ্তি সাপেক্ষে। ১০ কোটি দেওয়া না হলেও সর্বোচ্চ যত দেওয়া যায়, সে চেষ্টা করা হবে। আশা করছি, মাসে ২ কোটি ডোজ টিকা দিতে পারবো। নভেম্বর-ডিসেম্বরে এটি আরও বাড়বে। টিকা প্রাপ্তিই বড় বিষয়।

 

সরকার প্রতি মাসে দুই কোটি করে করোনার টিকা দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতি মাসে দুই কোটি টিকা দেওয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে; তার মধ্যে প্রায় এক কোটি ডোজ টিকা এই বিশেষ কার্যক্রমের মাধ্যমে দেওয়া হবে। ডিসেম্বর পর্যন্ত আরও অনেক টিকা পাওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে দুই কোটির বেশি টিকা দেওয়াও সম্ভব হতে পারে।

 

করোনার টিকার নিবন্ধন ও সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম চলছে সুরক্ষা অ্যাপ ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। টিকা দেওয়ার পরে সনদ পেতে অনেকেরই ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এবং টিকা সনদে তথ্য বিভ্রাট থাকছে। তাই সুরক্ষা অ্যাপ ও ওয়েবসাইট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ-আলোচনা করেই আইসিটি বিভাগ অ্যাপ পরিচালনা করছে। সনদ পেতে দীর্ঘসূত্রতা ও তথ্য সংশোধনে ভোগান্তি কমাতে উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে সুরক্ষা অ্যাপটি আইসিটি বিভাগই চালাবে।