শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১   ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করেনা মৌমিতা-গ্রীন অনাবিল-বন্ধু পরিবহন

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৭:২৫ পিএম, ১৮ নভেম্বর ২০২১ বৃহস্পতিবার

নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকার বিভিন্ন রুটে চলাচল করছে গ্রীন অনাবিল, মৌমিতাসহ কয়েকটি পরিবহন সংস্থার বাস। অনুমতি না থাকলেও এসব বাস প্রবেশ করছে শহরে, বাড়ছে যানজট। এভাবে অনুমোদন ছাড়াই যানচলাচলের ব্যাপারে জাতীয় নিরাপদ সড়ক চাই দিবসে আলোচনা সভায় খোদ আপত্তি তুলেছেন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ নিজেই। তিনি বলেন, শহরের চাষাঢ়া যানজটের মূল্যেই হল অনাবিল, মৌমিতা, বন্ধু পরিবহন। এই সকল পরিবহনের অর্ধেকই নাই। বডি তো খোয়ে খোয়ে পরে। গাড়ির ভিতরে সিট নাই, গাড়ির সামনে মাথাভাঙ্গা। আমার মনে হয় এই বাসগুলোর কোন ফিটনেস নাই। সকল বাস গুলোর কারণে যানজট সৃষ্টি হয়।


জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ টু চন্দ্রা রুটে মৌমিতা ট্রান্সপোর্ট ও নারায়ণগঞ্জ টু গাজীপুর রুটে নিয়মিতভাবে চলাচল করছে গ্রীন অনাবিল নামের দুই কোম্পানির বাস। আর নারায়ণগঞ্জ টু চিটাগং রুটে চলাচল করছে বন্ধু পরিবহন। রুট পারমিট ও ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে রাস্তার মাঝখান থেকে যাত্রী উঠানো-নামানো করে আসছে। ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে বড়-ছোট দুর্ঘটনা। হাতেগোনা কিছু সংখ্যক বাসের অনুমোদন নিয়ে এক একটি কোম্পানি শতাধিকের বেশি বাস পরিচালনা করছে এ রুটে। শহরের মধ্যে কোনো নির্দিষ্ট বাসস্ট্যান্ড না থাকা ও বাসের সংখ্যা বেশি হওয়ায় অবৈধভাবে রাস্তার দুইপাশে এলোমেলোভাবে বাসগুলো দাঁড় করিয়ে রাখায় সরু রাস্তা আরও সরু হচ্ছে।


 কোথাও কোথাও অবৈধভাবে কাউন্টার স্থাপন করে চলছে যাত্রী তোলা ও নামানো। ফলে নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর, আমলাপাড়া, চাষাঢ়া, রাইফেলস ক্লাব, নতুন কোর্ট, শিবু মার্কেট, জালকুড়ি ও সাইনবোর্ড এলাকায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। পরিবহন সংস্থাগুলোর চালক, হেলপার, সুপারভাইজাররাও স্বীকার করলেন এই যানজট তৈরি হওয়ার কথা।
 আরও জানাগেছে, ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জে চলাচলের জন্য মৌমিতা পরিবহনের ৩০টি বাসকে অনুমোদন দেওয়া হলেও চলছে ১৫০টিরও বেশি। পরিবহন সংস্থা গ্রীন অনাবিলও মানছে না নিয়মকানুন। নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা পর্যন্ত পরিবহন দুটির রুট পারমিট রয়েছে। কিন্তু নিয়ম লঙ্ঘন করে চলাচল করছে শহরের মেট্রো হল পর্যন্ত। এ দুটির পাশাপাশি আরো কিছু সংস্থার বাসও চলছে বেআইনিভাবে।


 নারায়ণগঞ্জ বিআরটিএ কার্যালয়ের তথ্য মতে, ১৯৭১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ বিআরটিএ থেকে রেজিস্ট্রেশন করা গাড়ির সংখ্যা মোট ১১ হাজার ৮০২। এর মধ্যে বাসের সংখ্যা ২২০, অটোরিকশা ৬০০১, মোটরসাইকেল ২৮৫, প্রাইভেটকার ১৮৩, পিকআপ ভ্যান ১৯৭, ট্যাংকলরি ২২০, ট্রাক ৮৪০ এবং  ট্রাক্টর ৩৫২টি। কিন্তু বাস্তবে এর কোনোটিই ঠিক নেই। রেজিস্ট্রেশন করা তালিকার কয়েকগুণ বেশি পরিবহন চলাচল করছে নারায়ণগঞ্জের সড়কে।


 এবিষয়ে বিআরটিএ নারায়ণগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) সৈয়দ আইনুল হুদা চৌধুরী বলেন, মৌমিতা, গ্রীন অনাবিল পরিবহনের রুট পারমিট সাইনবোর্ড পর্যন্ত। তারা নারায়ণগঞ্জ শহরের মধ্যে প্রবেশ করছে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ফিটনেস ও পারমিটহীন গাড়ি মামলা করে ডাম্পিং ও জরিমানার আওতায় আনা হবে।
 এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ চাষাঢ়া ট্রাফিক ইন্সপেক্টর  শেখ মো. ইমরান হোসেন বলেন, শহরে যনজট নিরসনে সর্বোত্র দায়িত্ব পালন করছে ট্রাফিক পুলিশ। প্রতিদিনই আমরা মৌমিতা, গ্রীন অনাবিল পরিবহনকে বৈআইনী ভাবে চাষাঢ়া মোড়ে গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী উঠা- নামার অপরাধে প্রতি নিয়ত মামলা ও জরিমানা করা হচ্ছে। আর নারায়ণগঞ্জে প্রচুর যানবাহন সব গুলো শহর মুখি তাই চাষাঢ়ায় প্রায় সময়েই যানজট সৃষ্টি হয়ে থাকে।