বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১০ ১৪৩১   ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

পূর্ণশক্তি নিয়ে ফতুল্লায় মাঠে থাকবে হাতপাখা

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৭:১০ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২১ শুক্রবার

 # কারো রক্তচক্ষুকে ভয় পাবো না-মাসুম বিল্লাহ
 # ১১ তারিখ নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল


নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কাশিপুর ও এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে কাশিপুরে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রার্থী সাইফ উল্লাহ বাদলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী  ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ওমর ফারুক। অপরদিকে এনায়েত নগরে নৌকার প্রার্থী আসাদুজ্জামানের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের আব্দুস সালাম। নির্বাচনের মাঠে শেষ পর্যন্ত ইসলামী আন্দোলনের দুই প্রার্থী মাঠে থাকতে পারেনি। বিভিন্ন চাঁপের কারনে এই দুই প্রার্থী মাঠ থেকে সরে দাড়ালেও শেষ পর্যন্ত  ভোটের বাক্সে যে ভোট পড়েছিল তা ছিল উল্লেখ করার মতোই। 

 

আগামী ২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের  নৌকার প্রার্থী লুৎফর রহমান স্বপনের সাথে,হাত পাখা প্রতীকের প্রার্থী যাকে দেয়া হবে তাকে নিয়ে পুরো জেলা কমিটি নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকবেন ইসলামী আন্দোলন। ফলাফল যা-ই হোক কাউকে কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ।


দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন সুষ্ঠভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। ১১ নভেম্বরের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে কাশিপুর ও এনায়েত নগর ইউনিয়ন পরিষদে,বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রার্থীর বিপরীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীর সাথে সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থীও ছিলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মাঠ থেকে সরে দাঁিড়য়েছিলেন। মাঠে ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দুই প্রার্থী। তারাও নির্বাচনের দুইদিন আগে সরে নীরব হয়ে গিয়েছিলেন।  কিন্তু ভোট গগনার পর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীদের ভোট ছিলো উল্লেখযোগ্য। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীদের এতো ভোট পাওয়ার বিষয়টি ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের নেতাদের অনেকেই চমকে গিয়েছেন। খোদ আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন নেতা বলেন,যদি ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরা শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকতো তাহলে  বুঝা যেতো আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থীরা তাদের নিজ নিজ এলাকায় কতোটা জনপ্রিয় ছিল। তবে তাদের ভাগ্য ভালো ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরা শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকতে পারেনি। রাজনৈতিক অদূরদর্শীতার কারনেই ইসলামী আন্দোলন কাশিপুর ও এনায়েতনগরে নির্বাচন থেকে পিছটান দিয়েছে।


ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের ত্যাগী বেশ কয়েকজন নেতা বলেন,ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগ এক সময় খুবই শক্তিশালী অবস্থানে ছিলো। দিনের পর দিন প্রকৃত নেতাকর্মীরা অবমূল্যায়িত হতে হতে এখন তারা মনোকষ্ট নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে  দল থেকে দূরে অবস্থান করছে। শুধু মাত্র শামীম ওসমান কেন্দ্রীক রাজনীতি করতে গিয়ে যারা আজকে ফতুল্লায় পদ পদবী পেয়েছেন,তারা নিজ নিজ এলাকায় কতোটা জনপ্রিয় তা ভোটের হিসেব দেখলেই বুঝা যায়। অনেকে আবার ভোটের আগে অন্য প্রার্থীদের প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ব্যাপারেও মাঠে নেমেছিলেন। আওয়ামীলীগ সরকার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে  উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করছে। কিন্তু ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগ নেতারা কতোটা জনপ্রিয় তা ফেয়ার নির্বাচনের মাধ্যমে পরীক্ষা দিলে বুঝা যেতো। তাদের একমাত্র ভরসা শামীম ওসমান।  


ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ফতুল্লা শাখার নেতৃবৃন্দ যুগের চিন্তাকে বলেন, কাশিপুরে হাতপাখার প্রতীকের প্রার্থী ওমর ফারুকের উপর নির্বাচনের আগে হামলা করা হয়েছে। সাইফ উল্লাহ বাদলের ছেলে ও তার সহযোগীরা এ ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটায়। থানায় এ ব্যাপারে মামলাও দায়ের করা হয়েছিলো। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এ ব্যাপারে তেমন কোনো ভুমিকা  রাখেননি। নির্বাচনের আগে  ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীদের উপর চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে  হাত পাখার প্রার্থীর জয়ের ব্যাপারে কেন্দ্র থেকে যে নির্দেশনা আসবে তা আমরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবেন বলেও তারা মনোভাব ব্যক্ত করেছেন।


এ ব্যাপারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ যুগের চিন্তাকে বলেন, কাশিপুর ও এনায়েত নগর ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন করতে গিয়ে অনেকটা বেগ পেতে হয়েছে। নির্বাচনের আগে আমাদের প্রার্থীদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। এব্যাপারে কেন্দ্র থেকে চাপ দেয়া হয়েছে।  এবার ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের ফতুল্লা ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ রুবেল হোসেন ও ফতুল্লা থানা শাখার সদস্য আলহাজ্ব শাহজাহান আলীর নাম প্রস্তাব এসেছে। দলীয় সিদ্ধান্তে প্রার্থী ঠিক করে এরপর ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীর জয়ের ব্যাপারে চেষ্টা থাকবে। কারো কোনো রক্তচক্ষুকে ভয় করবে না ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।