শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০   ১৯ রমজান ১৪৪৫

আটকে যাবে ‘ত্রিশঙ্কু’, জয়ী হবে আইভী

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৭:০১ পিএম, ২৬ নভেম্বর ২০২১ শুক্রবার


আটকে যাবে ‘ত্রিশঙ্কু’, জয়ী হবে আইভী
#২০১৬ সালে কেন্দ্রে আইভীর নাম না পাঠালোও নৌকার প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি
# সকল ষড়যন্ত্র ভেদ করে চূড়ান্ত বিজয় হয় আইভীর

অনেকটা দিশেহারার মতোই তাদের অবস্থা। কি করতে কি করবেন তা অনেক সময় বুঝে উঠতে পারছেনা। লক্ষ্য একটাই পথ আটকে দেয়া। পথের মধ্যে কাঁটা বিছিয়ে দিয়ে রক্তাক্ত করা আইভীকে। কিন্তু যতোবারই চক্রটি  তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে গিয়েছে ততোবারই আটকে গেছে। আর তাদের এ আটকে যাওয়াকে অনেকে ‘ত্রিশঙ্কুর’ মতো অবস্থার সাথেও তুলনা করেছে অনেকে। যতোই পথে বাধা সৃষ্টি করা হউক না কেনো আইভী তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে ঠিকই পৌঁছে যায়। আর আটকে থাকেন এই জেলায় হর্তাকতা বলে নিজেদের নিয়ে যারা দম্ভোক্তি  করেন তারা। গেলবার ঢাকঢোল পিটিয়েও আইভীকে আটকানো যায়নি। এবারও একই ষড়যন্ত্র। তবে তাদের অবস্থা এবারও ভারতীয় পুরানে উল্লেখ করা রাজা ‘ত্রিশঙ্কু’র মতোই হবে বলে ধারণা করছে তৃণমূল আওয়ামীলীগ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ।  
ভারতীয় পুরান থেকে জানা যায়,ত্রিশঙ্কু নামে একজন রাজা ছিলেন। তিনি তার জীবিত অবস্থায় তিনি স্বর্গে  যাবেন বলেন ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এ কাজের জন্য তিনি বিশ্বামিত্রের শরনাপন্ন হয়েছিলেন। তপোবলে বিশ্বামিত্র রাজা ত্রিশঙ্কুকে আকাশ পথে স্বর্গের উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেন। রাজা ত্রিশঙ্কুর স্বর্গে যাওয়াকে স্বর্গের অনেক দেবতা ভালো চোখে দেখেননি। সব দিক মিলিয়ে দেবরাজ ইন্দ্রের মাধ্যমে অন্য দেবতারা ‘ত্রিশঙ্কু’কে পৃথিবীতে ঠেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন। ত্রিশঙ্কু পৃথিবীতে নামতে শুরু করেন। তার আর স্বর্গ দেখা হলোনা !  বিশ্বামিত্র ঘটনাটি দেখে তিনিও ত্রিশঙ্কুকে স্বর্গের দিকে ঠেলতে শুরু করেন। দুই দিকের ঠেলাঠেলিতে ত্রিশঙ্কু পৃথিবী ও স্বর্গের মাঝামাঝি অবস্থানে ঝুলে থাকেন। তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন কোনদিকে যাবেন। এ অবস্থায় ত্রিশঙ্কু এখনো ঝুলে আছেন।


নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগে অনেক তুখোড় রাজীনীতিবিদ রয়েছে। তবে এর মধ্যে  অনেকেই দলের ভিতরে থেকেই মন মর্জি মতো জেলা আওয়ামীলীগের কার্যক্রম পরিচালনা করতে চায় বা কর্তৃত্ব ফলাতে চায়। তবে শেষ পর্যরাত তা আর হয়ে উঠে না। এ ঘটনা একদিনের নয়,এটা চলে আসছে যুগের পর যুগ ধরে। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। মেয়র আইভী প্রশ্নে যখন জেলার তৃণমূল নেতৃবৃন্দ এক হয়ে আশার আলো দেখছেন,আর ঐ সময় একটি বলয় থেকে নিজেরাই স্বর্গ  দেখার স্বপ্নে বিভোর হয়ে রয়েছে। ২০১১ সালে সিটি নির্বাচনে স্বর্গ দেখতে গিয়ে একজন আটকে গিয়েছিলেন ত্রিশঙ্কুর মতো। কিন্তু এরপরও তিনি স্বগর্গ দেখতে চান। নিজে স্বর্গের স্বাধ না পেলেও অন্যকে স্বর্গ দেখানোর চ্যালেঞ্জ নেন। যা বোকামি ছাড়া আর কিছু নয় বলে অনেকে মনে করেন নগরবাসী।


হকার ইস্যু, দেবোত্তর সম্পতি, আইভীর পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে ঢাল ঢোল পিটিয়ে আইভীকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করতে চাচ্ছে অনেকে। ২০১৬ সালেও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আইভীর নাম বাদ দিয়ে ৩ জনের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিলো নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দেয়ার জন্য। কিন্তু সেই নির্বাচনেও আইভী সমস্ত বেড়াজাল ছিন্ন করে নৌকা প্রতীক ছিনিয়ে নিয়ে এসেছিলেন। আর ‘ত্রিশঙ্ক’ু শুধু চেয়ে চেয়ে দেখেছেন আইভী জয়। এবারও আইভী ঠেকাতে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছে চক্র। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয় আইভীরই হবে। শেষ পর্যন্ত এই চক্র সিটি নির্বাচনে আইভীর নৌকার পক্ষে সেøাগান দেয়, নাকি তারা অন্য কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থীর হয়ে মাঠে কাজ করে তাও শেষ পর্যন্ত দেখতে আর কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে হবে নগরবাসীর।