রাজউকের প্লট, কৃষিজমি সবই আছে তৈমূরের
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৫:০২ পিএম, ২২ ডিসেম্বর ২০২১ বুধবার
বিএনপি নির্বাচনে না এলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নাসিক নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহবায়ক এড. তৈমূর আলম খন্দকার। ২০১১ সালের নির্বাচনেও আনারস প্রতীকে লড়েছিলেন তৈমূর, ভোট পেয়েছিলেন মাত্র সাতহাজার।
২০১৮ সালের নির্বাচনে রূপগঞ্জে বিএনপির দলীয় মনোনয়নপত্র পেলেও প্রার্থী হতে পারেননি। এবার সিটি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তৈমুর আলম খন্দকারের হলফনামার তথ্যানুযায়ী, স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার পেশায় আইনজীবী। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে মামলা রয়েছে ১০টি। অতীতে মামলা ছিল ২০টি। হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেছেন, তার বিরুদ্ধে যেসব মামলা রয়েছে তা রাজনৈতিক কারণে দায়ের করা হয়েছে।
ব্যক্তিগত পর্যায়ে কেউ তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেননি বর্তমানে এ মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে যেসব মামলা রয়েছে, তার মধ্যে পাঁচটিই বিচারাধীন, তিনটি উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত ও দুটি চার্জ শুনানির পর্যায়ে রয়েছে। এসব মামলা ২০১৩ থেকে ২০১৮ সালে নারায়ণগঞ্জ, ফতুল্লা, রূপগঞ্জ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়ের হয়েছে। প্রায় সব মামলায় তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, হাঙ্গা-দাঙ্গামা করা, বেআইনি সমাবেশে অংশ নেওয়াসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। অতীতে তার বিরুদ্ধে ২০টি মামলা দায়ের হয়। ১৯৯৭ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ওইসব মামলা হয়েছিল।
সেগুলোর মধ্যে অন্তত সাতটি দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে দায়ের করা হয়। অতীতের ২০টি মামলার মধ্যে দুটি হাইকোর্টে বিচারাধীন ও সাতটি রাষ্ট্র কর্তৃক প্রত্যাহার করা হয়। অবশিষ্ট মামলাগুলোর চারটি উচ্চ আদালতে স্থগিত ও বাকিগুলোতে অব্যাহতি পেয়েছেন।
তৈমুর আলম খন্দকারের বার্ষিক আয় ৮ লাখ টাকার বেশি। বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা থেকে ভাড়া পেয়ে থাকেন ৫ লাখ ৭৪ হাজার ১৪১ টাকা, শেয়ার/সঞ্চয়পত্র/ ব্যাংক আমানত থেকে আয় ২ হাজার ৫০০ টাকা ও আইন পেশা থেকে পান ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা। তার নগদ টাকার পরিমাণ ৫ লাখ টাকা ও স্ত্রীর আছে দুই লাখ টাকা। তার ৫ ভরি স্বর্ণ ও স্ত্রীর ১২ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। এই পাঁচ ভরি স্বর্ণের পুরোটাই উপহার পেয়েছেন। এছাড়া আসবাবপত্র, টিভি, ফ্রিজ, কম্পিউটার ইত্যাদি রয়েছে। এছাড়া রাজউক থেকে পাওয়া ৫ কাঠার প্লট ও ২৭৬ বর্গমিটার আয়তনের নির্মাণাধীন বাড়ি রয়েছে তার। যৌথ মালিকানায় থাকা ২০০ শতাংশ কৃষিজমি ও ৩০ শতাংশ অকৃষিজমির ২২ শতাংশ মালিকানাও আছে তার। এ প্রার্থীর কোনো ব্যাংক লোন ও দায়দেনা নেই।
২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন তৈমুর আলম খন্দকার। ওই নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামায় বিসিকে একটি প্লট এবং স্ত্রীর নামে রাজধানীর সেগুনাবাগিচায় দুটি ফ্ল্যাট ও তোপখানার মেহরাব প্লাজায় একটি স্যুট ছিল বলে উল্লেখ করেছিলেন। বিসিকের ওই প্লটটির দাম এক লাখ ২৪ হাজার টাকা ও স্ত্রীর দুটি ফ্ল্যাট ও একটি স্যুটের দাম ৩৬ লাখ ৩২ হাজার টাকা উল্লেখ করেছিলেন। এবারের হলফনামায় ওইসব সম্পদ উল্লেখ করেননি তিনি। তবে স্ত্রীর নামে ৩১৪ বর্গমিটার আয়তনের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, বিসিকের প্লটটি বিক্রি করে দিয়েছি। স্ত্রী তার পৈতিৃক সূত্রে যে দুটি ফ্ল্যাট ও একটি স্যুট পেয়েছেন তা তার নামের আয়করে দেখানো হয়েছে। তিনি বলেন, আগেও পৈতৃক সম্পদ বিক্রি করে নির্বাচন করেছি, এবারও তাই করব।