শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১   ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

গডফাদার শামীম ওসমান-সেলিম ওসমানের প্রার্থী তৈমূর: আইভি

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৭:৫৪ এএম, ৯ জানুয়ারি ২০২২ রোববার

# উনি সুবিধাবাদী আওয়ামী লীগ করে

# দন্তবিহীন বাঘকে আমরা শক্ত হাতে দমন করতে চাই

# ‘নয় শঙ্কা, নয় ভয়; শহর হবে শান্তিময়’

 

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই; তৈমূর আলম খন্দকার বিএনপিরও প্রার্থী না, জনগণেরও প্রার্থী না, সে গডফাদার শামীম ওসমান, সেলিম ওসমানের প্রার্থী। শামীম ওসমান তাকে প্রার্থী করেছে। যদি সে বিএনপির প্রার্থী হতো তাহলে তার প্রতীক ধানের শীষ হত। গতকাল বন্দরের ২৪ নং ওয়ার্ডের দেউলি চৌরাপাড়া এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

 

আইভী আবারো জোর দিয়ে বলেন, তৈমূর গডফাদার শামীম ওসমানের প্রার্থী। নতুন করে আবার উত্থান হতে শুরু করেছে। আইভী বলেন, গডফাদার এখন দন্তবিহীন গডফাদার। আইভী বলেন, তিনি আমার দলের হলেও আমি উনার সাথে নির্বাচন করেছি ২০১১ সালে। ২০১৬ সালে উনি বিএনপির সাখাওয়াতকে সাপোর্ট দিয়েছেন, আমাকে দেয়নি। উনি নৌকার বিরুদ্ধে ধানের শীষে সিল মেরেছে। উনি ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের নাজমা রহমানের নৌকা কেড়ে নিয়েছে, ভোট বাক্স ছিনতাই করেছে তার ভাই লাঙলে পক্ষে। উনি কিসের আওয়ামী লীগ করে, কেমন আওয়ামী লীগ করে যে; উনি লাঙলের হয়ে তার ভাইয়ের হয়ে নৌকার ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে। উনি সুবিধাবাদী আওয়ামী লীগ করে।

 

আইভী বলেন, আমি সকলের উদ্দেশ্যে বলবো, আবারো নারায়ণগঞ্জে অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গডফাদাররা, সন্ত্রাসীদের চারিপাশে আনাগোনা। আসুন, আমরা অতীতে যেভাবে এদের শক্তভাবে দমন করেছি, ঠিক তদ্রুপভাবে এই দন্তবিহীন বাঘকে আমরা শক্ত হাতে দমন করতে চাই। আমরা হাতিকেও দমন করতে চাই, সন্ত্রাসীদেরও দমন করতে চাই। ভাল মানুষকে লালন করতে চাই। আমার পাশে আসুন, আমাকে সাপোর্ট করে ভোট দিন। আমরা ‘নারায়ণগঞ্জকে ‘নয় শঙ্কা, নয় ভয়; শহর হবে শান্তিময়’ এবং সবুজ শ্যামল নারায়ণঞ্জ, আসুন গড়ি একসাথে’।

 

জনজোয়ার আমার সাথেই সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে মেয়র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, আমি একটা দল করি।তবে আমি সবসময় মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। জনস্রোত আমার সাথেই আছে। জনতাই আমার শক্তি।

 

জনগণের কাছে আগামী ৫ বছরের জন্য আবারো ভোট চাই উল্লেখ করে আইভী বলেন, জনগণ আমার অসমাপ্ত মেঘা প্রকল্পগুলো শেষ করতে আবারো সুযোগ চাই। কাজ করতে চাই। বন্দরের একটা সবচাইতে বড় দাবি ছিল একটা ব্রীজ, যেই ব্রীজটার আমরা নাম দিয়েছিলাম কদম রসুল সেতু। একনেকে ইতিমধ্যে এটি পাশ হয়েছে। করোনার কারণে আমরা একটু পিছিয়ে গিয়েছি। কোরিয়ান একটা কোম্পানী ব্রীজের স্ট্যাডি করে ফেলেছে, টেন্ডারেও চলে গিয়েছে। টেন্ডার হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে এই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করাবো। এটাই বন্দরের মানুষের সবচাইতে বড় প্রাপ্তি। একারণে বন্দরের মানুষের কাছে এবার আরো বেশি করে সুযোগ চাই। এটা আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। বন্দরে আমি প্রচুর খেলার মাঠ করেছি, শিশু পার্ক করেছি, শীতলক্ষ্যার নদীর দুই পাড় বাধাই করে দিচ্ছি।

 

আইভী বলেন, এবার বিজয়ী হলে শীতলক্ষ্যাকে নিয়ে এক প্রকার যুদ্ধই করতে হবে। শীতলক্ষ্যার পানি এতোটাই নোংরা হয়েছে যে দূর থেকেও দুর্গন্ধ আসে। নির্বাচিত হলে শীতলক্ষ্যা নিয়ে কাজ করতে চাই। যেহুতু আমি রাস্তা-ঘাট-ড্রেন -খেলার মাঠ-পার্ক প্রচুর করে ফেলেছি, বর্জ্য ব্যবস্থপনাতেও আমুল পরিবর্তন আসছে, বন্দরে ৭৬ একর জায়গা নেয়া হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অর্থায়নে, জালকুড়িতে ২৩ একর জায়গার উপর বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রজেক্টও শেষ হয়েছে। পিডিবি এই প্রজেক্ট নিয়ে যাবে, আমরা প্রতিদিন ৬০০ টন করে বর্জ্য সাপ্লাই দেব। এই প্রজেক্ট বাস্তবায়ন হলে শহরে ময়লা খুঁজে পাওয়া যাবেনা। এগুলো পুরোপুরি শেষ করার জন্য আমি চাচ্ছি জনগণ আবার আমাকে আরেকবার সুযোগ দিক।  

 

আইভী তার বক্তব্যে বলেন, নির্বাচনে আমি আর এখন কোন অভিযোগ দিতে চাচ্ছিনা। আমি নিয়ম মেনে কাজ করছি। পরিবেশ সুষ্ঠু আছে। নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয়, স্বাভাবিক হয়। পেছন থেকে যারা কলকাঠি নাড়ছে, তারা যেন কিছু করতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে দাবি জানাই। জনতার জোয়ার আমার সাথে আছে।