শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০   ১৯ রমজান ১৪৪৫

হেফাজত নেতার ফেরদৌসুরের মাধ্যমে তৈমূরকে প্রার্থী বানান

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৯:১১ এএম, ১২ জানুয়ারি ২০২২ বুধবার

নারয়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আইভীকে সরানোর জন্য গত  এক বছর আগে থেকে ক্ষমতাসীন দলের একটি পক্ষ মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করে সভা সমাবেশ করায়। একই সাথে তারা আইভীকে ঘায়েল করার জন্য তখন থেকেই একজন শক্তিশালী প্রার্থী খুজে।

 

অবশেষে যখন নাসিক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয় সকল জল্পনা কল্পনাকে অবসান ঘটিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের উত্তর বলয়ের অংশের প্রভাবশালি নেতা জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক তৈমূর আলম খন্দকারকে খুঁজে পান। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন উঠেছে ক্ষমতাসিন দলের আইভী বিরোধী গ্রুপটি বিভিন্ন সুবিধা দেয়ার কথা বলে তৈমূরকে নির্বাচনে আনে। তাদের পক্ষ হতে মহনগরের হেফাজত নেতা মাওলানা ফেরদৌসুর রহমানের মাধ্যমে তৈমূরের সাথে সকল কথা বার্তা শেষ করে বলে জানান একাধিক সূত্র।

 

এই হেফাজত নেতা মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান ২৮ মার্চ হেফাজত তাণ্ডব, ৪ এপ্রিল মামুনুল হক কাণ্ড এমনকি ফেব্রুয়ারিতে মসজিদ-মাদ্রাসা ভেঙে ফেলার অভিযোগ তুলে আইভীকে শীতলক্ষ্যায় ভাসিয়ে দেয়ার হুমকি দেন। কিন্তু ওই প্রভাবশালী মহলটিই তাকে ছায়া দিয়ে রক্ষা করে। মামুনুল হক কাণ্ডে তাকে শুধু ঘন্টাখানেক জিজ্ঞাসাবাদ করার সুযোগ পায় র‌্যাব। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই বিশৃঙ্খল বক্তব্য দেয়ার জন্য হেফাজত নেতা মাওলানা আউয়ালসহ এই হেফাজত নেতা মাওলানা ফেরদৌসুর রহমানকে গ্রেফতারের দাবি জানালেও অদৃশ্য ঈশারায় তাকে আইনের আওতায় আনতে পারেনি প্রশাসন।


 
গত বছরে নাসিক সাবেক মেয়র আইভীকে ঘায়েল করার জন্য ওসমান বলয়ের অনুসারীদের দিয়ে মেয়রের বিরুদ্ধে মসজিদ, মাদরাসা জায়গা দখল সহ বিভিন্ন অভিযোগে সভা সমাবেশ করায়। তাদের  মাঝে মহানগর হেফাজতের সাবেক সভাপতি ফেরদাউসুর রহমানকে দিয়ে সভা করে মেয়রের বিরুদ্ধে মসজিদের জায়গা দখলের অভিযোগ তুলেন। যা মেয়র নিজে এই অভিযোগকে মিথ্যা বলেন জানান। নগরবাসীও তাদের সভাকে প্রত্যাখান করে। তবে আইভীকে ঘায়েল করার ওসমান অনুসারীদের সব ধরনের চেষ্টা বিফলে যায়।  


 
এদিকে একাধিক সূত্র জানান, মহানগর হেফাজত নেতা ফেরদাউসের সাথে জেলা আওয়ামীলীগের উত্তর বলয়ের সাথে গভীর প্রেম ভালোবাসা রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে তার মাধ্যমে কথা বার্তা বলে আর্থিক সুবিধা সহ বিভিন্ন সুবিধা দেয়া হবে বলে তৈমুরকে প্রার্থী করেন ক্ষমতাসিন দলের একটি অংশ। একই সাথে বিএনপি নেতা তৈমুরের ভাই মহানগর যুবদলের সাবেক আহবায়ক খোরশেদকে জয়ী করার কথা দেন। নাসিক ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী খোরশেদের বিপক্ষে হেভিওয়েট প্রার্থী ছিলেন ওসমানদের অনুসারি মহানগর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি রবিউল হোসেন। কিন্তু অদৃশ্য ইশারায় তিনি তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। আর এজন্য তিনি দল থেকে বহিস্কার হন। আর এতেই নগরীর সচেতন মহল বুঝতে বাকি নেই কাকে জিতানোর জন্য এই নেতাকে বসানো হয়।
 
এদিকে আইভী আবারো নির্বাচিত হয়ে নাসিক মেয়র পদে হ্যাট্রিক করেন, তাহলে আইভী বিরোধীরা কিছুটা বেকায়দায় পড়ে যাবে। বিশেষ করে তাদের শহর কেন্দ্রিক আধিপত্য বিস্তারসহ আর্থিক, রাজনৈতিক ও পারিবারিক দাপট অনেকটাই বাধাগ্রস্ত হবে। ইউনিয়ন নির্বাচনে আইভীর কোন অস্তিত্ব বা ভূমিকা না থাকায় সেখানে সেই পক্ষটি খুব সহজেই তাদের কাজ হাসিল করতে পারলেও সিটি নির্বাচনে আইভী কাউকে ছেড়ে কথা বলবেন না বলে আগে থেকেই সংকেত দিয়ে রেখেছেন। তাই আইভী বিরোধীদের বিভিন্ন ছক ফ্লপ করার পর এখন শেষ চেষ্টা (মরণ কামড়) হবে কাউকে বলির পাঠা বানিয়ে আইভীকে হারানো। কেননা ২০১১ সনের নির্বাচনে আইভীর সাথে হারে সেই মহলটি সরকার দলীয় একাধিক নেতা এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

 

একই সাথে তারা জানান আইভীকে ঘায়েল করার জন্য এবার তারা  হেফাজত নেতা মাওলানা ফেরদৌসুর রহমাে মাধ্যমে সকল কথা বার্তা বলার মাধ্যমে আইভীর বিরুদ্ধে তৈমুরকে নামান বলে জানায় একাধিক সূত্র। আর এজন্য তাদের মাঝে গোপনে দফায় দফায় বৈঠক হয়। তাই সচেতন মহলের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে তাহলে ক্ষমতাসিন দলের উত্তর বলয়ের নেতারা হেফাজত নেতা ফেরদৌসুরের মাধ্যমে সকল ছক একে কাজ করছেন।