বাবু ও সরকার আলমের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট
যুগের চিন্তা অনলাইন
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৭:০৬ পিএম, ৮ মে ২০২২ রোববার
নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুলে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ম্যানেজিং কমিটির দুই সদস্যকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করা হয়েছে। অভিযুক্ত দুইজন হলেন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বিএনপি নেতা সরকার আলম ও ওয়াহেদ সাদত বাবু। এর মধ্যে বাবুকে গত ১৩ এপ্রিল ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার করেছিল সদর মডেল থানা পুলিশ।
পরদিন বাবু আদালত থেকে জামিন পান। আর ১৯ এপ্রিল সরকার আলম আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। ২৯ এপ্রিল আদালতে দায়ের করা চার্জশীটে চারজনকে সাক্ষী করা হয়েছে। ঘটনার মাত্র ১৮ দিনেই পুলিশ আদলতে চার্জশীট দাখিল করলো। আদালতে চার্জশীট দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, মামলার ধার্য তারিখে এটি আদালতে উপস্থাপন করা হবে। ঘটনার শিকার হওয়া শিক্ষক মাহবুবুর রহমান গত ১১ এপ্রিল সদর মডেল থানায় জিডি করেন। পরে সেটাই মামলায় রূপান্তরিত হয়। মামলায় উল্লেখ করা হয়, স্কুলের অভিভাবক প্রতিনিধি সরকার আলম অনৈতিকভাবে ভর্তি বাণিজ্য করতে না পেরে আমার উপর ক্ষুদ্ধ হয়ে ১০ এপ্রিল দুপুর দেড়টায় স্কুল মাঠে শারীরিকভাবে আমাকে মারধর ও লাঞ্ছিত করে আমার হাত পা কেটে নেয়ার হুমকি দেয়।
অপর অভিভাবক প্রতিনিধি ওয়াহিদ সাদত বাবু একই কারণে আমার দাঁড়ি টেনে ছিঁড়ে ফেলা এবং দা দিয়ে কুপিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। হাই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অপেক্ষমান শিক্ষার্থীদের ভর্তির দায়িত্ব শিক্ষক মাহবুবুর রহমানের উপর অর্পন করেন। তিনি হাই স্কুলের বিজ্ঞানের শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি।
মূলত এই দায়িত্ব ইতোপূর্বে প্রধান শিক্ষক পালন করতেন। মাহবুবুর রহমান কেন এই দায়িত্ব নিলেন সেই নিয়েই সরকার আলম, বাবু তার উপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। ১০ এপ্রিল সকালে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা নিয়ে তর্ক বিতর্কের এক পর্যায়ে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সরকার আলম ও ওয়াহেদ সাদত বাবু শিক্ষক মাহবুবুর রহমানকে স্কুল মাঠে শিক্ষার্থীদের সামনেই লাঞ্ছিত করেন।
পরে পুরোনো ভবনের অফিস রুম থেকে টেনে হিচড়ে এবং ধাক্কা দিতে দিতে প্রধান শিক্ষকের রুমে নিয়ে আসে। এরপর রুমের সামনে তাকে মারধর ও লাঞ্ছিত করা হয়। খবর পেয়ে প্রধান শিক্ষক তার ক্লাসরুম থেকে ছুটে এসে এই দৃশ্য দেখতে পায়। এদিকে শিক্ষককে মারধর লাঞ্ছনার খবর ছড়িয়ে পড়লে ১১ এপ্রিল সকাল থেকে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে স্কুলটির শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।
এসময় তারা স্কুলের অভ্যন্তরে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকেন। ১৩ এপ্রিল রাতে বাবুকে গ্রেপ্তার করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় আনা হয়। ১৪ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান মুন্সির আদালতে হাজির করা হলে তাকে জামিন দেওয়া হয়।
দ্রুততম সময়ে আদালতে আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন লাঞ্ছিত স্কুল শিক্ষক মাহাবুবুর রহমান। তিনি বলেন, যেমনি করে দ্রুত চার্জশীট দাখিল করা হয়েছে, ঠিক একই ভাবে দ্রুততার সঙ্গে আসামীদের শাস্তি নিশ্চিত হলে এ সমাজে শিক্ষকদের নিরাপত্তা ও সম্মান নিশ্চিত হবে।