বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১   ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

পাঁচ ইউনিয়নকে নাসিকে সংযুক্তকরণে শামীম ওসমানের বাধা

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৮:৫৩ পিএম, ১১ মে ২০২২ বুধবার

# এলজিইডি মন্ত্রীকে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর চিঠি

 

আবারও ফতুল্লা থানার চারটি ইউনিয়নকে এবং নারায়ণগঞ্জ সদর থানার গোনগর ইউনিয়নকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত করায় বাধা দান করলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। সূত্রমতে জানা গেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রচেষ্ঠায় ফতুল্লা থানার কাশীপুর, এনায়েতনগর,

 

ফতুল্লা, কুতুবপুর এবং গোগনগর ইউনিয়ন এলাকাকে যখন সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত করার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত তখন শামীম ওসমান এই বিষয়টি জানতে পেরে গত ২৪ এপ্রিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে একটি বিভ্রান্তিকর চিঠির মাধ্যমে এসব ইউনিয়নকে সিটি করপোরেশনের আওতায় না নেয়ার জন্য অনুরোধ করেন।

 

শুধু তাই নয় শামীম ওসমান দাবি করেন এসব ইউনিয়নকে সিটি করপোরেশনের আওতায় নিলে নাকি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি ঘটবে। শামীম ওসমান তার চিঠিতে আরো দাবি করেন, তিনি নাকি ফতুল্লার ইউনিয়নগুলিতে সিটি করপোরেশনের তুলনায় বেশি উন্নয়ন করেছেন।

 

এমনকি তার নির্বাচনী এলাকার সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকাকে সিটি করপোরেশনে নেয়ার কারনে নাকি সেখানে তেমন কোনো উন্নয়ন হয় নাই। তাই সিদ্ধিরগঞ্জের মানুষ ক্ষুব্দ। যদিও সিটি করপোরেশনের নেয়ার কারনে সিদ্ধিরগঞ্জে বিগত তিনটি নির্বাচনে মেয়র আইভী বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন এবং তিনি বিগত দুটি নির্বাচনে নৌকা প্রতিক নিয়ে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন।

 

শুধু তাই নয় দিনে দিনে সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামী লীগের মেয়র আইভীর জনপ্রিয়তা আরো বাড়ছে। তাই শামীম ওসমান যে দাবি করেছেন তা বাস্তবতার সাথে কোনোই মিল নেই সেটা নিশ্চয়ই জানেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ সকারের প্রধানমন্ত্রী নিজেও।  বাস্তবতা হলো শামীম ওসমানের এই চিঠি পূরোটাই নিরেট মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়।

 

ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ থাকায় আর গোগনগর সিটি করপোরেশন হওয়ায় উন্নয়নের যে কি পার্থক্য হয়েছে সেটা স্থানীয় সরকার মন্ত্রী একবার সরেজমিন পরিদর্শন করলেই দেখতে পাবেন। সিদ্ধিরগঞ্জের তুলনায় ফতুল্লায় আসলে কোনো উন্নয়নই হয়নি। আইভী মেয়র হওয়ার পর সিদ্ধিরগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।

 

সিদ্ধিরগঞ্জে তিনি এতো ব্যাপক উন্নয়ন করেন যে ওই এলাকায় সব ড্রেনই পরিকিল্পিত ভাবে আরসিসি ঢালাই করা হয়েছে। বিপরিতে ফতুল্লায় আরসিসি ড্রেন করাতো দূরের কথা কোনো ড্রেনেজ ব্যাবস্থাই গড়ে তোলেননি শামীম ওসমান। তাই বছর প্রায় ছয় মাস গোটা ফতুল্লা থানা এলাকা বৃষ্টির পানিতে ডুবে থাকে।

 

ফতুল্লার এনায়েতনগর, ফতুল্লা এবং কুতুবপুর ইউনিয়নের অনেক এলাকায় প্রায় সারা বছরই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। যা কিনা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কোনো এলাকায় দেখা যায় না। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন তার তিন থানা এলাকায় অন্তত দশটি মেঘা প্রকল্প বাস্তাবায়ন করেছেন এবং করে চলেছেন। এমন একটি মেঘা প্রকল্পও ফতুল্লায় দেখা যাবে না। বরং ফতুল্লার মানুষ মনে করেন উন্নয়নের নামে তাদের এলাকায় লুটপাট হয়েছে। কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

 

ফতুল্লার রাস্তাঘাটগুলির পরিকল্পিত কোনো উন্নয়ন করা হয়নি এবং প্রশস্থ করা হয়নি। এছাড়া ফতুল্লায় কোনো বর্জ্য ব্যাবস্থাপনা নেই এবং নেই কোনো মশক নিধন কর্মসূচি। যার ফলে বিপুল জনবসতিপূর্ণ ফতুল্লা থানা এলাকার মানুষ চরম দূর্ভোগের মাঝে বসবাস করছেন।

 

তাই ফতুল্লাবাসী আশা করেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন এবং সমবায় মন্ত্রী যতো তারাতারি সম্ভব শামীম ওসমানের এই মিথ্যা চিঠিকে আমলে না নিয়ে ফতুল্লার চারটি ইউনিয়ন এবং গোগনগরকে সিটি করপোরেশনের আওতায় নেবেন বলে আশা করছেন ফতুল্লার অধিকাংশ মানুষ।