মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৭ ১৪৩১   ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিw

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৯:২৬ পিএম, ২১ জুলাই ২০২২ বৃহস্পতিবার

 

বিদ্যুৎ সংকট ও এর জন্য দায়ীদের শাস্তির দাবিতে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত।
বিদ্যুৎ সংকট ও এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদমিনারে আজ বিকেলে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি, নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সমাবেশ ও পরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংগঠনের সদস্য সচিব ধমিান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় আহ্বায়ক রফিউর রাব্বির সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদের জেলা আহ্বায়ক নিখিল দাস, সিপিবির জেলা সম্পাদক বিমল দাস, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সংগঠক অঞ্জন দাস, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি হাফিজুর রহমান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহামুদ হোসেন, ন্যাপ শহর কমিটির সহ সভাপতি গোবিন্দ সাহা, সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা প্রমূখ।

সমাবেশে রফিউর রাব্বি বলেন, আজকের বিদ্যুৎ সংকটের জন্য সরকার বিশ্বমন্দা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে অজুহাত হিসেবে হাজির করলেও এর প্রকৃত কারণ সরকারের দুর্নীতি ও ভুলনীতি। গত এক যুগে সরকার ধীরে ধীরে এ সংকটটি নিজেই তৈরী করেছে। ২০১০ সালে সরকার আইন করে দুই বছরের জন্য রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের নামে বিশেষ গোষ্ঠীকে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা ছাড়া বেসরকারী ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুযোগ করে দেয়। পরে তার সময় বাড়িয়ে পাঁচ বছর করলেও এখনো তা অব্যাহত রয়েছে। রেন্টাল-কুইক রেন্টালে বিশ্বের বহু দেশ দেউলিয়া হওয়ার উদাহরণ থাকার পরেও সরকার আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নিয়ে জ্বলানী খাতকে তখন হুমকীর
মুখে ফেলেছে। দেশে গ্যাস উত্তোলনের কার্যক্রম বন্ধ রেখে বিদেশ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য উচ্চমূল্যে ফার্নেশ তেল আমদানী শুরু করে চলেছে। সরকার গত বছর ৫০ লাখ টন ফার্নেশ তেল আমদানী করেছে। আর এ ফার্নেশ তেলের ৪৫ লাখ টনই বেসরকারী ভাবে আমদানী করা হয়েছে। গত দশ বছরে সরকার বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকী দিয়েছে ৫২ হাজার ২৬০ কোটি টাকা অথচ বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও বেসরকারী কোম্পানী গুলোকে সরকার বসিয়ে বসিয়ে দিয়েছে ৫১ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা। অন্যদিকে সক্ষমতা থাকার পরেও সরকারী বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বসিয়ে রেখে রেন্টাল, কুইক রেন্টাল থেকে বিদ্যুৎ কিনে চলেছে। গ্যাসের অভাব দেখিয়ে ভোলা সহ বিভিন্ন সরকারী বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রেখে উচ্চদামে রেন্টাল-কুইকরেন্টাল থেকে বিদ্যুৎ কিনছে। সরকার বিশেষ ব্যক্তিদের অনৈতিক সুবিধা দেয়ার জন্য দেশের জ্বালানী খাতকে এভাবে হুমকীর মুখে দাঁড় করিয়েছে। আর বারে বারে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করে তা জনগণের কাঁধে চাপানো হয়েছে। মানুষ যাতে এ সবের বিরুদ্ধে আদালতে যেতে না পারে তার জন্য ২০১০ সালে সরকার আত্মঘাতী জ্বালানী আইন করেছে। দুই বছরের জন্য বলা হলেও সে আইন আজো অব্যাহত আছে। এখন তারা বলছে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য এ আইনের প্রয়োজন আছে।

নিখিল দাস বলেন, সরকার নিজেদের লোকদের অনৈতিক সুবিধা দেয়ার জন্য রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করে জনজীবনকে দুর্বিসহ করে চলেছে। বিমল দাস বলেন, কিছুদিন আগে সরকার উৎসব করে জানান দিল দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। তা হলে আজকে এ সংকট কেন? সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকারের দুর্নীতি ও ভুল-নীতির দায় জনগণ নেবে না। জ্বালানী খাতকে এভাবে সংকটে ফেলার সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষেভ মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে।