মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৭ ১৪৩১   ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎ শিল্পীরা  

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৭:০৪ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ রোববার


সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ব বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হতে এখনও ১৯ দিন বাকী থাকলেও ঘরে ঘরে দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা বয়ে বেড়াচ্ছে। দেবী দুর্গাকে স্বাগত জানাতে নগরীর দেওভোগ এলাকায় প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎ শিল্পীরা।

 

 

এবার নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনসহ জেলায় ২২০টি মণ্ডপে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় জাকজমকপূর্ণ ভাবে শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজন চলছে। এবার নারায়ণগঞ্জে সদর থানা এলাকায় ৪২টি, ফতুল্লা থানা এলাকায় ২৮টি, বন্দর থানা এলাকায় ২৮টি, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকায় ৭ টি, সোনারগাঁও  উপজেলায় ৩৩টি, আড়াইহাজার উপজেলায় ৩২টি ও রূপগঞ্জ উপজেলায় ৫০টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে।

 

 

জমজমাট এই পূজোর আয়োজনে সরেজমিনে দেখা যায়, মৃৎ শিল্পীরা কাঁদা-মাটি, থড়-কাঠ সংগ্রহ থেকে শুরু করে, প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। সকাল থেকে রাত অবধি চলছে এই কার্যক্রম। এখন শারদীয় দুর্গোৎসবে মেতে ওঠার অপেক্ষায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

 

 

এ উৎসবকে ঘিরে মৃৎ শিল্পীদের মাঝে দেখা দিয়েছে কর্ম ব্যস্ততা। দিন রাত কাজ করে শিল্পীদের হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। যেন দম ফেলার সময় নেই কারিগরদের।


 
প্রতিমা শিল্পী বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, মা দুর্গার আগমনে আমাদের কাজের চাপ বেড়েছে, যেহেতু সময় ঘনিয়ে আসছে তাই আমাদের চাপও বেশী। গতবারও এমন চাপ ছিলো না আমাদের, তবে এবার প্রতিমা বানাতে আমাদের সকাল থেকে রাত পার হয়ে যাচ্ছে।

 

 

এবার প্রতিমার চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়েছে। অল্প সময়ে বেশী কাজ সামাল দিতে একটু হিমশিম খাচ্ছি বলা চলে। করোনা কালের সময় পার করে আমাদের কাছে প্রচুর প্রতিমা নেয়ার অর্ডার আসছে কিন্তু আমরা অল্প সময়ে সেগুলো পৌঁছেতে পারছি না।


 
মৃৎ শিল্পী টুটুল চন্দ্র দে জানান, বর্তমানে আমাদের প্রতিমা তৈরীর কাজের চাপ অনেকটা বেশী। কারণ খুব শীঘ্রই আসছে আমাদের শারদীয় দুর্গাপূজা। করোনা মহামারির সময় অনেকে পূজা করেনি। কিন্তু এখন চাহিদা বেশী। সব মিলিয়ে আমাদের কাজের চাপ অনেক বেশী।

 

 

তবে আগের বারের থেকে যে পরিমান আশা করেছিলাম সেই তুলনায় অনেক কম অর্ডার আসছে আমাদের। কারণ এবার সবাইর আর্থিক অবস্থা খারাপ। এছাড়া সামনে আমাদের বিশ্বকর্ম পূজা আছে। আশা করি সে সময় আরেকটা চাপ পোহাতে হবে আমাদের।


 
এবার দুর্গাদেবীর আগমন হবে হাতিতে চড়ে ও গমন হবে নৌকায় চড়ে। সনাতনী পঞ্জিকা অনুযায়ী, দুর্গোউৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে আগামী ১ অক্টোবর ষষ্ঠীর। ২ অক্টোবর দেবীর সপ্তমীবিহিত, ৩ অক্টোবর দেবীর মহাঅষ্টমীবিহিত, কুমারী পূজা, সন্ধি পূজা, ৪ অক্টোবর দেবীর নবমীবিহিত এবং ৫ অক্টোবর দশমীবিহিত পূজা সমাপন ও দর্শন বিসর্জন এবং সন্ধ্যা আরত্রিকের পর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ব বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।

 

 

এদিকে  দুর্গাপূজা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে সভা করেছে প্রশাসন। সেখানে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ‘দুর্গাপূজার উৎসবটা বাংলাদেশে খুব গুরুত্বপূর্ন একটা ইভেন্ট। একটি কমিউনাল ক্লেশের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ছোট করার জন্য, সরকারকে হেয় করার জন্য কেও না কেও বসে আছে।’

 

 

তো আমরা এখানে সবার কাজ হচ্ছে ভালো ভাবে একটি উৎসব জাতিকে উপহার দেয়া। যাতে আন্তর্জাতিক ভাবে আমাদের ছোট হতে না হয়। জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, ‘আমরা সামাজিক সম্প্রতিতে বিশ্বাস করি, আমরা ধর্মীয় সম্পৃতিতে বিশ্বাস করি। এটা শুধু আমি চাইলেই হবে না, সকলকে বিশ্বাস করতে হবে। কেউ যদি উস্কানি মূলক কিছু করে ফেলে তাহলে তৎক্ষনাৎ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করুন।’ এন.এইচ/জেসি