শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১   ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শ্রমিক নেতার নাম ব্যবহার করে বেপরোয়া আজিজুল

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৮:২৫ পিএম, ১৮ নভেম্বর ২০২২ শুক্রবার


# কেউ যদি চাঁদাবাজি করে থাকে তাকে পুলিশে দিন : উপ-পরিচালক


নারায়ণগঞ্জে দিনের পর দিন বেড়েই চলছে ব্যাটারি চালিত অবৈধ অটো রিকশার অনুমোদন না থাকলেও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় এই সকল অনিবন্ধিত পরিবহন দাবড়ে বেড়াচ্ছে। আর এই সকল অনিবন্ধিত অটো মিশুক চালানোর সুযোগ করে দেয় কিছু চিহ্নিত চাঁদাবাজ।

 

 

যারা টাকার বিনিময়ে প্রতিটা র‌্যাটারি চালিত অটো রিকশা চালককে একটি নাম্বার প্লেট দিয়ে থাকে। বিশেষ করে ফতুল্লায় এই চাঁদাবাজদের একটি বিশাল চক্র রয়েছে যার নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন ফতুল্লার কুখ্যাত চাঁদাবাজ বরিশাইল্লাহ আজিজুল।

 

 

বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে চাঁদাবাজি করে বরাবরই তিনি ফতুল্লায় বেশ আলোচনায় রয়েছেন। এমনকি ফতুল্লায় তাকে চাঁদাবাজদের রাজা বলা হয়। এক সময় তিনি সামান্য অটো চালক থাকলেও বর্তমানে এই পরিবহন চাঁদাবাজি করেই তিনিই এখন অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন।

 

 

জানা যায়, বাংলাদেশ শ্রমিকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কাওছার আহমেদ পলাশের নাম ভাঙিয়ে বছরের পর বছর চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে এই চিহ্নিত চাঁদাবাজ।

 

 

তার এই চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি যুগের চিন্তাকে জানান, “শ্রম অধিদপ্তর থেকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা অটো-রিকশা চালক শ্রমিক ইউনিয়ন সংগঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আর আমার কাছে সকল কাগজ পত্র আছে; আপনারা দেখতে চাইলে আমি দেখাতে পারবো ১০০০ বার দেখাতে পারবো।”

 

 

এ বিষয়ে শ্রম অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মহব্বত হোসাইন যুগের চিন্তাকে জানান, “শ্রম অধিদপ্তর থেকে কোন ধরনের ব্যাটারি চালিত রিকসা ও অটোর  অনুমোদন দেওয়া হয়না। আমাদের এখান থেকে সংগঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। যদি কেউ এই অনুমোদনের নামে চাঁদাবাজি করে তাহলে সে অপরাধ করেছে; আপনারা তাকে পুলিশে দিন।”

 

 

এক সূত্রে জানা যায়,এই অটো চালক আজিজুল বিভিন্ন গ্যারেজের অটো চালকদের নিয়ে ফতুল্লায় একটি সংগঠন গড়ে তোলে। আর এই সংগঠনটি প্রত্যেকটি পাড়া মহল্লায় যে সকল অটো চালক রয়েছে তাদেরকে নির্দেশনা দেন এই ফতুল্লায় অটো চালাতে হলে প্রতিদিন ৩০ টাকা ও মাসে ৩০০ টাকা চাঁদা দিতে হবে।

 

 

তার এই কথা কিছু কিছু অটো চালক মেনে নিলেও; বেশির ভাগ অটো চালকরা তার এই কথার বিরোধ জানালেও কোন লাভ হয়নি। যে সকল অটো চালকরা তার কথা মানেনি সেই সকল অটো চালকদের গাড়ির সিট নিয়ে যাওয়া হতো। কোন দিক না পেয়ে; নিরুপায় হয়ে তার কথা মেনে নিয়ে, দৈনিক আজিজুলকে চাঁদা দিচ্ছে অটো চালকরা।

 

 

শুধু তাই নয়, এই ফতুল্লায় মধ্যে অটো চালাতে হলে আগে ৩০০০ থেকে ৫০০০ টাকা দিয়ে রোড পারমিটের জন্য চাঁদাবাজ আজিজুলের কাছ থেকে প্লেট নিতে হবে। আর যে এই অটোর প্লেট নিতে পারবেনা সে এই ফতুল্লায় অটো চালাতে পারবে না।

 

 

তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই তাকে চাঁদা দিয়ে এই রোডে অটো চালাতে হতো। আর এই সকল অটো চালকরা চাঁদাবাজ আজিজুলের কাছে এক প্রকার জিম্মি বলেই চলে। এই পরিবহন চাঁদাবাজ বরিশাইল্লাহ আজিজুল দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

 

 

কোন ভাবেই থামানো যাচ্ছেনা, এই চিহ্নিত চাঁদাবাজ আজিজুলকে। চাঁদাবাজী করার কারণে বেশ কয়েকবার আজিজুল পুলিশের কাছে গ্রেফতারও হন। সর্বশেষ গত বছরের ৫ অক্টোবর র‌্যাব-১১’র হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন।

 

 

কিন্ত কে শোনে কার কথা, বারবার জেল খাটার পরেও এখনো বদলায়নি; এই চাদাঁবাজ আজিজুল। একে একে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় সমান হলেও সেটা নিয়ে তার নেই কোন ভাবনা। তার শুধুৃ একটাই লক্ষ্যে কিভাবে চাঁদাবাজি করে অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়া যায়।

 

 

শুধু চাঁদা নিয়েই থেমে থাকেননি এই চাঁদাবাজ; বিভিন্ন সময় তার রিরুদ্ধে যাওয়া অটোচালকদের ওপর চলে তার নির্যাতন । এমনকি জানা গেছে চালকদের নির্যাতন করার জন্য তার রয়েছে টর্চার সেল।

 

 

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক) সার্কেল নাজমুল হাসান ও ফতুল্লা থানা অফিসার ইনচার্জ রিজাউল হক দিপু জানান, “যেহেতু আপনারা তথ্য দিয়েছেন তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির কোন অভিযোগ পেলে; অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সহকারে দেখবো।” এন.এইচ/জেসি