মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৭ ১৪৩১   ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

ক্রেতা সংকটে পঞ্চবটির লেপ-তোষকের দোকান

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৮:০৮ পিএম, ২২ নভেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার

 

পৌষ আর মাঘ, ঋতু পরিক্রমায় এ দুই মাস শীতকাল। এদিকে কার্তিক চলে গেছে আর অগ্রহায়ণও গেল বলে। তবে তাপমাত্রা এখনও নিচে না নামলেও শীত কিন্তু উপস্থিত। এখনো শীতের আমেজ দিনে হালকা হলেও শেষ রাতে কিন্তু বেশ সরব হয়ে ওঠে এই শীত। আর এই শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় লেপ-তোষকের।

 

 

লেপ-তোষক না থাকলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়া অনেকটা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই শীতকে বরণের প্রস্তুতি চলছে পঞ্চবটি বিভিন্ন বেডিংয়ের দোকানে। কিন্তু আশানুরূপ ক্রেতা সংকটের কথা জানা যায় পঞ্চবটির বেডিং স্টোর গুলো ঘুরে।

 

 

আজ ২১ নভেম্বর (সোমবার) পঞ্চবটির লেপ তোষকের দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে প্রায় প্রত্যেকটি দোকানেই ক্রেতা শূন্য। এখানকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, যদিও শীত চলে আসছে। তারপরও লেপ তৈরির জন্য ক্রেতা তেমন একটা আসছেন না। তাই আমাদের কারিগরদের সেরকম ব্যস্ততা নেই।

 

 

তাছাড়া লেপ তৈরির উপকরণের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি শীত নিবারণের বিকল্প হিসেবে অনেকে এখন কম্বল ব্যবহার করেন। যার কারণে লেপের সেই চাহিদাও আগের মত নেই। এখানকার লেপ তোষকের বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

 

 

একজন কারিগর জানান, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকাটাই অনেক কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তাই তারা লেপ তৈরির কথা ভাবতে পারছেন না। তাদের একটাই ভাবনা দুমুঠো খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকা। শীত নিবারণের জন্য তারা লেপ বানাতে আসছেন না।

 

 

চাহিদা থাকা না থাকার ব্যাপারে তিনি আরো বলেন, শীতে গত বছর যেরকম ঠান্ডা লেগেছিল এ বছরও ঠিক তেমনি ঠান্ডা লাগবে। আবার শীত নিবারণের জন্য মানুষের লেপ তোষকের চাহিদা গত বছর যেমন ছিল এ বছরও ঠিক তেমনি আছে কিন্তু অর্থের অভাবে অনেকেই অনেক কিছু কিনতে পারেন না। তাই অনেকে নতুন করে লেপ বানাচ্ছেন না। পুরাতন লেপ ব্যবহার করছেন।

 

 

কাপড় ও তুলার দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকই নতুন লেপ না বানিয়ে পুরাতন লেপ রোদে দিয়ে শীতের জন্য প্রস্তুত রাখছেন। একজন ব্যবসায়ী জানান, অগ্রহায়ণ মাস শেষ হতে চললেও এখনো পুরোপুরি ভাবে শীতের দেখা নেই। সেই সাথে জিনিসপত্রের দামও বেড়ে গেছে।

 

 

কার্পাস তুলার কেজি ছিল ২৫০ টাকা। দাম বেড়ে এখন হয়েছে ৩৫০ টাকা। গামের্ন্টসের তুলার দাম কেজিতে ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ১৫০ টাকা হয়েছে। লেপ ও লেপের কাভার তৈরির কাপড়ের গজ ৬০ টাকা। সব মিলিয়ে বতর্মানে একটি লেপ তৈরি করতে ২ হাজার ৭০০ টাকা খরচ হচ্ছে।

 

 

আগে লেপ বানাতে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা খরচ হতো। একদিকে শীত নেই। অন্যদিকে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় লেপ তৈরির কাজ কমে গেছে। শেষে তিনি বলেন, বর্তমানে লেপের বিকল্প কম্বল ও ফাইবার দিয়ে তৈরি হচ্ছে ‘কমফোর্ট’। এসব কম্বল আর ম্যাট্রেসের কারণে মানুষ বেশি টাকা খরচ করে লেপ না বানিয়ে এগুলো কিনে ব্যবহার করছেন।

 

 

আগে যেখানে ৬০ থেকে ৭০ পিস লেপ তৈরি করতাম। এখন সেখানে ৮ টা থেকে ১০ টা লেপ বানানো হচ্ছে। এখানকার কয়েকজন কারিগরের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, দিনে দিনে সবকিছুর চাহিদা বাড়ছে। আবার সবকিছুরই দামও বাড়ছে। কিন্তু চাহিদা আর এই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে সংগতি রেখে আমাদের মজুরি কিন্তু বাড়েনি।