মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৭ ১৪৩১   ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

সন্ত্রাসী পানি আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৭:৪২ পিএম, ২৭ জানুয়ারি ২০২৩ শুক্রবার

 

সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেডের ব্যবসায়ী সুমন মাহমুদ ও লিমন শেখের উপর হামলা মারধরের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নাসিক ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির অন্যতম সহযোগী কিশোরগ্যাং নেতা আক্তার হোসেন ওরফে পানি আক্তারকে(৩৪) এজাহার নামীয় ও ৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে গত বুধবার রাতে সুমন মাহমুদ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

 

 

এ নিয়ে পানি আক্তারের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্য দাঁড়ালো ১০ টি।  মামলার একমাত্র এজাহার নামীয় আসামি আক্তার হোসেন ওরফে পানি আক্তার সুমিলপাড়া এলাকার মৃত করিম কসাই এর ছেলে। মামলার বাদী সুমন মাহমুদ (৩৮) আটি ওয়াপদা কলোনি এলাকার আব্দুল সাত্তার মোল্লার ছেলে।  

 

 

মামলা উল্লেখ করা হয়েছে, বাদী তার ব্যবসায়ীক অংশিদার কদমতলী এলাকার লাল মোহাম্মদের ছেলে লিমন শেখ (৪২) ও পাইনাদী এলাকার মৃত এলাহি বক্সের ছেলে আল-আমিনকে (৪১) সাথে নিয়ে ২৫ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটায় আদমজী ইপিজেডে যায়। বেলা সাড়ে ৩ টার দিকে মামলার প্রধান আসামি আরো অজ্ঞাত ৫ জনকে সাথে নিয়ে একটি সাদা রঙের প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল যোগে ইপিজেডে প্রবেশ করে ইপিক পোশাক কারখানার উত্তর পাশে হামলা চালায়।

 

 

এ সময় ভয়ে আল-আমিন দৌড়ে পালাতে পারলেও বাদী ও লিমন শেখ পালাতে পারেনি। তাই তারা দুইজনকে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত যখম করে। ব্যবসায়ীক পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই হামলা করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আক্তার হোসেন শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা শাখার সভাপতির। তিনি নাসিক ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির ঘনিষ্ট সহচর। তিনি মতির দাপট দেখিয়ে এলাকায় বীরদর্পে বিভিন্ন অপকর্ম করছে। গড়ে তুলেছে শক্তিশালী একটি কিশোরগ্যাং বাহিনী।

 

 

পানি আক্তার একাই নিয়ন্ত্রন করছে আদমজী ইপিজেডের অসংখ্য কারখানা। ইপিজেডের অন্যান্য ব্যবসায়ীদের উপর হামলা মারধর করা তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে অনেকই ইপিজেডে ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছে। হত্যা, মারামারিসহ আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে এর আগেও নয়টি মামলা হয়েছে। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে মোট মামলা হয় ১০টি। তারপরও পানি আক্তারের দাপট কমছেনা। দিন দিন সে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

 

 

রহস্য জনক কারণে স্থানীয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছেনা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বহু ভোক্তভূগী।অনুসন্ধানে জানা যায়, অভাবের তারণায় একসময় এলাকায় মাদক ব্যবসা করতেন আক্তার হোসেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহবায়ক মতিউর রহমান মতি কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পরই বদলে যায় আক্তারের ভাগ্য। মতির শেল্টারে আদমজী ইপিজেডের বিভিন্ন কারখানায় পানি সরবরাহ করে পানি আক্তার হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠে।

 

 

কাউন্সিলর মতির নাতনিকে বিয়ে করে বেপরোয়া হয়ে উঠে পানি আক্তার। এলাকায় শুরু করে চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম। গুঞ্জন রয়েছে ইপিজেড নিজের নিয়ন্ত্রনে রাখতে কাউন্সিলর মতি ব্যবহার করে পানি আক্তার বাহিনীকে। প্রতিপক্ষের উপর হামলা করে ইপিজেড থেকে বিতারিত করে মতির আধিপত্য ধরে রাখতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে পানি আক্তার বাহিনী।

 

 

পানি আক্তারের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হলেও তার দাপট কমছেনা। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সন্ত্রাসী পানি আকতারের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৪ আগষ্ট, ২৪ আগষ্ট, ২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি, একই সালের ১২ জুলাই, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে, ২৬ এপ্রিল হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়। একই সালের ৩ আগষ্ট মারামারি এবং ডিসেম্বরের ১৩ তারিখ ইপিজেড থেকে ২৫ লক্ষ টাকার মালামাল চুরি ও সর্বশেষ গত ২৫ জানুয়ারি হামলা মারধরের অভিযোগসহ মোট ১০টি মামলা হয়েছে।