ছাত্রলীগের পদে থেকে শত কোটি টাকার মালিক শরীফ-মান্নান
যুগের চিন্তা রিপোর্ট :
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৭:২৩ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০২৪ শনিবার
# শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজিতে প্রভাব ছিল
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর একে একে নারায়ণগঞ্জের দলের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। অনেকেই বিদেশে পাড়ি জমান। দেশে আত্মগোপনে থাকা সাবেক সংসদ সদস্যসহ ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন অসংখ্য নেতাকর্মী। এছাড়া দলটির ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে আওয়ামী লীগ। গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ একটানা ক্ষমতায় থাকাবস্থায় নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে যায় গডফাদার শামীম ওসসমানের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতারা। গত ২৩ অক্টোবর সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এদিকে নারায়ণগঞ্জের ছাত্রলীগের নেতাদের নানা অপকর্ম বেরিয়ে আসছে। এছাড়া অনেকেই চাদাঁবাজি টেন্ডারবাজিতে জরিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ফতুল্লা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু মো. শরিফুল হক এবং সাধারণ সম্পাদক এম এ মান্নান। জানা যায়, তাদের হয়রানিতে অতিষ্ঠ ছিলেন ফতুল্লার সাধারণ মানুষ। ফতুল্লা এলাকাটি শিল্প অঞ্চল হওয়ায় গামেন্টস মালিকদের থেকে অল্প টাকায় জুট সেক্টরে আধিপত্য ছিল ছাত্রলীগের এই দুই নেতার। বিশেষ করে ফতুল্লা ডিআইটি মাঠ হাট ছিল ফতুল্লা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু মো. শরিফুলের নিয়ন্ত্রনে।
এছাড়া বালুর ব্যবসার আড়ালে ফতুল্লারে বালু মহল থেকে চাদাঁবাজি করে বেরাতেন। সেই সাথে জায়গা দখল করে ভুমিদস্যুতা, বিচার শালিস, জুট সেক্টর নিয়ন্ত্রণ, ফতুল্লার তেল চোরকারবারিতে ছিল তার বিশাল আধিপত্য। এছাড়া শরীফুলের শেল্টারে জুয়েল হোসেন ফতুল্লায় মাদক সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। প্রতিটি সেক্টর থেকে মাসে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন তিনি। তবে তিনি শামীম ওসমানের শ্যালক এহসানুল হক নিপুর হাত ধরে ফতুল্লার ছাত্রলীগের সভাপতির পদ বাগিয়ে নেন। আর এতে করে তার ভাগ্য খুলে যায়। অপরদিকে ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ মান্নানের বিরুদ্ধে স্কুলের শিক্ষকতার সাথে পরকীয়া প্রেম সহ ভুমিদস্যুতা, চাদাঁবাজি, বালু মহলে প্রভাব বিস্তার রয়েছে। এছাড়া স্কুল কমিটিতে থেকে বিদ্যালয়ের টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া ফতুল্লা মুসলিম নগর এলাকায় অসহায় মানুষের জায়গা জোর করে দখল করে নাম মাত্র টাকা দিয়ে দিতেন, আর তা নিতে চাইলে নাম মাত্র টাকাও দিতেন না। এতে করে অল্প টাকার ক্রয় করা জায়গা বেশি দামে বিক্রি করে বিশাল টাকার মালিক বনে গেছেন। সেই সাথে চাদাঁবাজিতে পটু ছিলেন ফতুল্লা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম মান্নান সাবেক এমপি শামীম ওসমানের সাথে ঘনিষ্ঠতা রেখে ফতুল্লার মুসলিমনগর এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তার মুল কাজ ছিল জায়গা সম্পত্তিতে বেজাল লাগিয়ে সেই জায়গা আত্মসাত করা। ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে তারা ফতুল্লার মানুষের কাছে ছিলেন এক আতঙ্কের নাম।
এছাড়া কমিটি বাণিজ্য উপজেলায় তদবির করাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদেরকে হুমকি দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরির অপচেষ্টা করেন তারা। এরপর আর শেষ রক্ষা হয়নি। গত ৫ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে তোপের মুখে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। সেই থেকে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি, নেতৃবৃন্দ ছাত্রলীগের পদে থেকে কোটিপতি বনে যাওয়া ব্যক্তিরা এখন পালিয়ে আত্মে গাপনে রয়েছে। কিন্তু তাদের অপকর্ম এখন একের পর এক বেরিয়ে আসছে।