
শিবু মার্কেট-পোস্ট অফিস সড়ক যেন মৃত্যুকূপ
ফতুল্লার শিবু মার্কেট থেকে পোস্ট অফিস পর্যন্ত সড়কটি এখন চলাচলের অযোগ্য। ‘রাস্তা’ বললে আসলে ভুল হবে। এ যেন বিশাল গর্ত আর কাদায় ভরা এক ভয়ঙ্কর পথ! প্রতিদিন হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও পথচারীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অথচ এই রাস্তাটি সরকারি এলজিইডির আওতাভুক্ত, কিন্তু কর্তৃপক্ষের নজর নেই বললেই চলে। বর্ষা তো দূরের কথা, সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় জমে হাঁটু সমান পানি। রাস্তার গর্তগুলো তখন পানির নিচে লুকিয়ে থেকে তৈরি করে প্রাণঘাতী ফাঁদ। ছোটখাটো দুর্ঘটনা এখন রোজকার ঘটনা। রিকশা উল্টে যাওয়া, বাইকারদের পড়ে যাওয়া কিংবা পথচারীদের কাদায় হুমড়ি খাওয়া যেন এখন সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই রাস্তার দুই পাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন শত শত ভারী যানবাহন এই রাস্তায় চলাচল করে। গর্ত আর কর্দমাক্ত রাস্তা দিয়ে এসব গাড়ি চলাচলের কারণে রাস্তার অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, এলজিইডির দায়িত্বহীনতা ও গাফিলতিতে জনগণ চরমভাবে ক্ষুব্ধ। স্থানীয়রা বলছেন, বারবার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এমনকি রাস্তা সংস্কারের কোনো পরিকল্পনাও চোখে পড়ছে না। ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “এই রাস্তায় নামলে মনে হয় মৃত্যু ফাঁদে পা দিচ্ছি। আর কবে এলজিইডি সজাগ হবে?”
জনগণের প্রশ্ন, শিল্প এলাকা হয়েও কেন এই অবহেলা? সরকার কি শুধু ঢাকায় রাস্তা বানিয়ে দায়িত্ব শেষ করেছে? এলজিইডি কি ঘুমিয়ে আছে?
স্থানীয়রা দ্রুত এই রাস্তার পূর্ণ সংস্কার এবং এলজিইডির জবাবদিহিতা দাবি করছে। না হলে, জনগণের আন্দোলনের ঝড় ঠেকানো আর সম্ভব হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে এলাকাবাসী।
আরও এক বাসিন্দা বলেন, “আমাদের জীবন যেন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। রিকশা, ভ্যান তো চলেই না, হেঁটে চলতেও ভয় লাগে। কেউ দেখার নেই!”
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই রাস্তাটি অনেকটাই নতুন ছিল। কিন্তু চট্টগ্রাম থেকে ফতুল্লায় সরাসরি মাটির নিচ দিয়ে তেলের পাইপলাইন নেওয়ার জন্য কয়েক দফায় রাস্তাটি কাটা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, সেই প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেরই রাস্তাটি পুনঃনির্মাণ করার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিনেও তা করা হয়নি। অন্যদিকে এলজিডিও এ বিষয়ে রয়েছে চরম উদাসীন।
স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই রাস্তার দুই পাশে রয়েছে কয়েকশ’ শিল্প প্রতিষ্ঠান। এইসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত লাখ লাখ শ্রমিক এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। কিন্তু রাস্তার এমন দুরবস্থায় গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা, হেঁটে চলাটাই অসম্ভব হয়ে উঠেছে।” এতে আশপাশের কয়েকটি এলাকার কয়েক লাখ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। অবিলম্বে এ রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন সবাই।
তবে এ বিষয়ে সদর উপজেলা প্রকৌশলী সারোয়ারকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি কোনো কল রিসিভ করেননি।