হাসপাতালগুলোতে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর চাপ
ডেঙ্গুর পাশাপাশি নানা রকমের জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু সহ প্রায় সকল বয়সের মানুষ। চিকিৎসকরা বলছে ঋতু পরিবর্তনের কারণে জ্বর, কাশি ও ঠান্ডাজনিত রোগে বেশী আক্রান্ত হচ্ছে শিশু সহ মধ্য বয়স্করা। প্রতিদিন জ্বর, কাশি ও ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে নারায়ণগঞ্জের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক গুলো রোগীর সংখ্যা বেড়েছে তিনগুণ।
নারায়ণগঞ্জের ১০০শয্যা জেনারেল ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের প্রধান গেট দিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়ে নারী-পুরুষের র্দীঘ লাইন। সকাল থেকেই টিকেট কেটে বহির্বিভাগে ডাক্তার দেখাতে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন অনেকে। এদিকে সকাল থেকে শত শত রোগী দেখছেন বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দুপুর সাড়ে বারটায় দেখা যায়, হাসপাতালের নিচতলা থেকে দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত ডাক্তারের প্রতিটি কক্ষের সামনে রোগীদের দীর্ঘ লাইন। লাইনে থাকা বেশির ভাগ রোগী প্রতি ১০০জনের মধ্যে ৮০জনই জ্বরে আক্রান্ত।
এদিকে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা সুমি সাহা নামে একজন জানান, গত দু’দিন ধরে শরীরে অনেক জ্বর। নাপা সহ বিভিন্ন ঔষধ ফার্মেসি থেকে খেয়েছি। কিন্তু জ্বর কমছে না, তাই আজকে হাসপাতালে মায়ের সাথে এসেছি ডাক্তার দেখাতে। সকাল ১১টার দিকে এসেছি, লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কেটেছি, এখন ডাক্তার দেখাবো, সেখানেও অনেক লাইন। এই গরমে লাইনে দাঁড়িয়ে শরীর আরও খারাপা লাগছে। তাই মাকে লাইনে দাঁড় করিয়ে আমি এখানে বসে আছি।
দেওভোগ ভোলাইল এলাকা থেকে আসা ৫৫ বয়সের আব্দুল হালিম মিয়া জানান, তিন দিন ধরে জ্বর, এখন পরীক্ষা করে দেখি ডেঙ্গু হয়েছে। তাই হাসপাতালে ভর্তি হবো।
এবিষয়ে জেনারেল ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা.জহিরুল ইসলাম জানান, এই বছরের সাত মাসে আমাদের হাসপাতালে প্রায় একশ নয় জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। কিন্তু এই জুলাই মাসেই ২৩ দিনের মধ্যে প্রায় ৫০জন রোগী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে।
আমাদের বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার রোগী চিকিৎসা নিতে আসছে। তার মধ্যে জ্বর, ঠান্ডা ও কাশি রোগী প্রচুর বেড়ে গিয়েছে। সেখান থেকে গড়ে প্রতিদিন প্রায় তিনশ থেকে চারশত রোগী ডেঙ্গু জ্বরের পরীক্ষা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এই জ্বর থেকে মানুষকে বাঁচতে হলে জ্বর যখন শুরু হয়, তখন বেশি করে পানি, খাবার স্যালাইন, ডাবের পানি, লেবুর সরবত এগুলো খেতে হবে। সাথে সাথে ডেঙ্গু রোগ প্রতিহত করতে হলে আমাদের মশারি টাঙ্গিয়ে ঘুমাতে হবে এবং আমাদের বাড়ির আশে-পাশে ড্রান ও জমানো ময়লা পানি পরিষ্কার পরিচ্ছন রাখতে হবে।
কোথাও যাবে কোন পানি জমা না থাকে এই দিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। এছাড়াও আমাদের হাসপাতালে যেসকল রোগী ভর্তি আছে তাদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমান ঔষধ ও খাবার স্যালাইন রয়েছে।


