পথশিশুদের বিশ্রামাগার বন্ধ আ.লীগ কার্যালয়
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
পথশিশুদের বিশ্রামাগার বন্ধ আ.লীগ কার্যালয়
২০২৪ সনের ৫ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগের পতন ঘটে। সেই থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা মহানগর আওয়ামী লীগ অফিস বন্দ হয়ে রয়েছে। কিন্তু গত ১ বছরে আওয়ামী লীগের কোন নেতাকর্মী তাদের কার্যালয়ের সামনে এসে কথা বলার সাহস পায়নি। অথচ বিগত সময়ে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের বাঘা বাঘা নেতারা বড় বড় কথা বলেছে।
এছাড়া বিগত সাড়ে ১৫ বছরে নারায়ণগঞ্জ জেলা মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয় প্রতিনিয়ত নেতাকর্মীদের চলাচলে মুখরিত ছিল। এমনকি শেখ হাসিনা পদত্যাগের দিনও জেলা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পার্টি অফিসের কার্যালয়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকে প্রতিরোধ করতে অবস্থান নেন। এই অবস্থান কর্মসূচিতে নেতৃত্ব প্রদান করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই।
কিন্তু ২০২৪ সনের ৫ আগষ্ট দুপরের পর যখন জানাজানি হয় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, তখন সারাদেশের তুলনায় নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও পালিয়েছে। তার এেক বছর সময় অতিবাহিত হলেও আওয়ামী লীগের কাউকে দেখা যায় নাই। কিন্তু দল যখন ক্ষমতায় ছিল তখন সাবেক এমপি শামীম ওসমান সহ তার গুন্ডা পান্ডারা বড় বড় কথা বলে বেরাতেন। কিন্তু বিপদের সময় ত্রাাই আগে পালিয়েছে।
এদিকে এক বছর আগেও যেখানে জেলা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয় নেতাকর্মীদের পদচারনায় উজ্জীবিত ছিল আজ সেই অফিসের দরজা টিন দিয়ে আটকানো রয়েছে। জেলা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে বঙ্গবন্ধুর মুরালের ঢালাই করা অংশে এখন শহরের টোকাইদের বিশ্রাম আড্ডা খানায় পরিনত হয়েছে। এক বছর অতিবাহিত হতে যাচ্ছে আর ১৩ দিন পড়ে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কারো সাহস হলো না তাদের কার্যালয়টি কেউ খুলবে।
তবে আওয়ামী লীগ অফিসের দরজা থেকে শুরু সব কিছু লুট হয়ে যাওয়ায় দরজার সামনে কোনরকম টিন দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে। যাতে করে ভিতওে কেউ প্রবেশ করতে না পারে। অথচ আওয়ামী লীগের অফিসকে রক্ষা করার জন্য তাদের দলীয় কোন নেতাকর্মী এগিয়ে আসে নাই। এতে করে আওয়ামী লীগের করুণ দৈন্যদশা পাওয়া যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে সহিসংতার রূপ নিলে নারায়ণগঞ্জ শহরের ২নং রেল গেইট এলাকায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর কার্যালয়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় । এছাড়া গত বছরের ৫ আগষ্টের দিন এক মুহুর্তে আওয়ামী লীগের দলীয় অফিস তছনছ করে ফেলে। অফিসের ভিতরে আগুন জালিয়ে সবকিছু পুরে ফেলার পাশাপাশি এসি, ফ্যান সহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভেঙে ফেলে।
অপরদিকে পার্টি অফিস থেকেই এক সময় হুঙ্কার বা বড় গলায় আওয়ামীলীগের নেতারা দাবি করতেন আওয়ামীলীগের ঘাঁটি নারায়ণগঞ্জের মাটি। আর গত এক বছরের ব্যবধানে বিগত সময়ে আওয়ামীলীগের দৈন্যদশা লুকিয়ে ছিল সেটাই স্পষ্ট হয়েছে এই তাণ্ডবের মধ্যে দিয়ে। এমনকি কোন প্রতিবাদী কর্মকান্ড দায়িত্বশীল নেতাদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়নি। উল্টো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখন হত্যা মামলায় আসামী হয়ে র্জজরিত রয়েছেন।
সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা এবং মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক দুর্বলতা ভয়ঙ্করভাবে ফুটে উঠেছে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সহিসংতার সময়। এই সহিসংতার সময় নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের উপর যে তাণ্ডবগুলো পরিচালিত হয়েছে যেমন: নারায়ণগঞ্জ শহরের ২নং রেল গেইট এলাকায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়েছে।
কিন্তু নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই এবং সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো: শহীদ বাদল এবং নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা তাদের নেতৃত্বে বা তাদের নির্দেশনায় এই সহিসংতার প্রতিরোধ দূরথাক প্রতিবাদও করতে পারেনি। কোন প্রকার কমিটি হলে পাল্টা কমিটি প্রতিবাদ বিদ্রোহমূলক আচরণ পার্টি অফিসে তালা এর কোনটিই করতে ভুলেন নাই নেতাকর্মীরা। দলের বিপদের মুহুর্তে কোন নেতাকর্মীর দেখা মিলে না। সেই সাথে এক সময়ে দাপুটে থাকা দলের কার্যালয় খোলার সাহস পেলনা গত ১ বছরে।


