পঞ্চবটি পাঁচতলা কলোনি ভবনের বেহাল দশা
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকার কোলঘেঁষে অবস্থিত শিল্প মন্ত্রণালয়ের পাঁচতলা কলোনি। প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে নির্মিত এ কলোনিতে পাঁচ তলা বিশিষ্ট মোট ছয়টি ভবন রয়েছে, যেখানে রয়েছে ১৮০টি ফ্ল্যাট। বরাদ্দপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবর্তে বর্তমানে এসব ভবনে বসবাস করছে প্রায় চার হাজার নিম্ন আয়ের মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ভবনগুলো এখন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়লেও বাধ্য হয়ে এখানে থাকছেন অসহায় পরিবারগুলো।
সরেজমিনে দেখা যায় প্রতিটি ভবনের অবস্থাই নাজুক। বহু স্থানে প্লাস্টার ফুলে উঠে খসে পড়েছে, বিভিন্ন জায়গায় রড বেরিয়ে আছে। দেয়ালে ফাটল এতটাই বিস্তৃত যে দূর থেকেও তা স্পষ্ট দেখা যায়। কাঠামোর ভেতরেও দুর্বলতা অনুভূত হচ্ছে। বাহিরে সামান্য রং করে ভবনগুলোকে নতুন দেখানোর চেষ্টা করা হলেও ভেতরের দুরবস্থা আড়াল করা যাচ্ছে না। ভবনগুলোর বয়স এবং বছরের পর বছর সংস্কার না হওয়ায় পরিস্থিতি দিন দিন বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভবনগুলো এতটাই দুর্বল যে সামান্য ভূমিকম্পেও দুলে ওঠে। সম্প্রতি দেশে হওয়া মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পের সময় কলোনি এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। ভবনের ভেতরে থাকা একজন বাসিন্দা জানান, ভূমিকম্পের সময় তিনি ভেবেছিলেন“এখনই ভবনটা ভেঙে পড়বে এবং আমরা বাঁচব না।”
আল্লাহর রহমতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি, কিন্তু ভবিষ্যতে এমন সৌভাগ্য নাও থাকতে পারে বলে তার আশঙ্কা। একসময় এ কোয়ার্টারে বসবাসকারী একজন সাবেক বাসিন্দা জানান, ভবনগুলোর ঝুঁকি বিবেচনায় তিনি পরিবারকে নিয়ে গ্রামে চলে গেছেন। তার মতে, এখানে থাকা মানে প্রতিদিন মৃত্যুভয় নিয়ে বাঁচা। অন্যদিকে যারা ভাড়ায় থাকছেন তারা অনেকেই কম খরচে থাকার কারণে বাধ্য হয়ে এসব ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে থাকছেন।
এ বিষয়ে ফতুল্লা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মাইনুদ্দিন বলেন, পাঁচতলা কলোনির ভবনগুলোর অবস্থা সত্যিই ভয়াবহ। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দেয়ালের ফাটল, সিঁড়ির নাজুক দশা, বেরিয়ে থাকা রড সব মিলিয়ে পুরো ভবনগুলো এখন মানুষের জন্য বড় ঝুঁকি। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, প্রয়োজন হলে ভবনগুলো খালি করে বাসিন্দাদের বিকল্প স্থানে সরিয়ে সংস্কার বা নতুন ভবন নির্মাণ করতে হবে। না হলে বড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হতে পারে পুরো এলাকা
গণপূর্ত ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি স্থানীয়দের দাবি ভবনগুলো জরুরি ভিত্তিতে পরিদর্শন করে ঝুঁকির মাত্রা নির্ধারণ করা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। কারণ আরেকটি মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হলে এসব ভবন ধসে পড়ে শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এই বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ গণপুর্ত বিভাগের একাধিক কর্মকর্তাদের ফোন দিলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
স্থানীয়দের দাবি, অতিসত্বর সুখী পূর্ণি ভবনগুলো মেরামত কিংবা নতুন করে স্থাপন করা হোক।


