শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

অনলাইনে পাঠদান এই সংকটকালীণ সময়ে যুগোপযোগী (ভিডিও)

লতিফ রানা 

প্রকাশিত: ৩ অক্টোবর ২০২০  

অনলাইন পদ্ধতি এই সংকটকালীণ সময়ে যুগোপযোগি বলে মনে করেন সরকারি আই.ই.টি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদা আক্তার এবং ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজ নারায়ণগঞ্জ শাখার অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল কাইয়ুম। 

গত বৃহস্পতিবার যুগের চিন্তা আয়োজনে এবং উম্মে সালমা স্বর্ণার সঞ্চালনায় সাপ্তাহিক শিক্ষা বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘শিক্ষাঙ্গন’ অনুষ্ঠানে এধরণের মতামত ব্যক্ত করেন এই অতিথিবৃন্দ। সংকটকালীণ সময়ে শিক্ষা ব্যবস্থা চলমান রাখতে এর কোন বিকল্প নেই বলে অভিমত ব্যক্ত করেন এই দুই শিক্ষক।
 
এসময় মাসুদা আক্তার বলেন, করোনার কারণে বাংলাদেশে গত ১৬মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এর পরই অর্থাৎ ২৩মার্চ থেকে সংসদ বাংলা টেলিভিশনে ‘আমার ঘর আমার স্কুল’ নামে একটি অনলাইন শিক্ষা কর্যক্রমের পদ্ধতি চালু করে। ঐসময় আমাদের স্কুলের কিছু শিক্ষার্থী কিছু বিষয় নিয়ে জটিলতার সম্মুখীন হয়। 

তখন আমরা এপ্রিলের প্রথম থেকে অনলাইন কাযক্রমটা শুরু করি। প্রথমে এটা ছিল একমূখী। সেসময় আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। তাই অনলাইন প্লাটফ্রম বলতে যা বুঝায় সেগুলাতে আমরা শিক্ষার্থীদের তৎক্ষনাত অন্তর্ভূক্ত করতে পারি নাই। তবে ধীরে ধীরে তাদের অংশগ্রহন বাড়তে থাকে। এখন আমরা একটি চলমান অবস্থায় চলে এসেছি। বর্তমানে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
 
তিনি বলেন, আমরা ‘আইইটিজিএইচএস’ স্কুল নারায়ণগঞ্জ নামে একটি ফেসবুক পেজ চালু করেছি। ডিভাইসের অপ্রতুল্যতা থাকায় তাদের একত্রে আনা আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। আমাদের স্কুলটি একটি শ্রমিক এরিয়ায় হওয়াতে তাদের অনেকের কাছেই স্মার্ট ফোন নাই। যেকোন সময় যাতে তারা দেখতে পারে এবং সংসদ টিভি’র ক্লাসগুলো যেন দেখতে সমস্যা না হয় আমরা সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখার চেষ্টা করেছি। আমাদের শিক্ষকদের মাঝেও অনেকে স্কীল ছিলনা। খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে আমরা শিক্ষকদের এর আওতায় নিয়ে আসতে পেরেছি। আমদের কমিটি এক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে। তিনি বলেন, আইসিটি সেক্টরে সরকার সবসময় শিক্ষকদের ট্রেনিং দিয়ে আসছে। সম্প্রতি অনলাইন কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা যে ব্যবস্থাটা চালু করেছি সেক্ষেত্রে বাবা-মার ফোনটাই ব্যবহার করবে। সেহেতু শিক্ষর্থীরা তাদের কাছেই থাকছে। তাই তাদের দেখ-ভালের দায়িত্ব নিতে হবে। তবে অবশ্যই বাবা-মা’র হাতে তাদের নিয়ন্ত্রন থাকতে হবে। যাদের ডিভাইস সংকট আছে বা যারা নেট চালাতে অভ্যস্ত না তাদের জন্য একটু সমস্যা। আশেপাশে যাদের ডিভাইস আছে তারা যদি একটু সহযোগিতা করে তাহলে শিক্ষার্থীদের একটু সহজ হয়।
 
তিনি বলেন, সব ঘটনারই দুইটি দিক থাকে। আমাদের মাথায় রাখতে হবে আমরা একটি সংকটময় সময় কাটাচ্ছি। এসময় শিক্ষা ব্যবস্থা চলমান রাখার জন্য এটা একটা বিকল্প ব্যবস্থা। ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে সরকার কোন ঝুকি নিতে চাচ্ছেনা। 

তিনি বলেন, পরিস্থিতি যদি আরো খারাপের দিকে যায় তাহলে জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে অটো পাসের ব্যবস্থা করা হতে পারে। তবে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে অল্পের মধ্যে পরীক্ষা নেয়ার চিন্তা ভাবনা এখনো সরকারের মাথায় আছে।
 
আব্দুল কাইয়ুম বলেন, মার্চে যখন পুরো জাতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তখন হঠাৎ করেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা আসে। ১৬মার্চ বন্ধ ঘোষণার পর মূলত আমরা ১৭মার্চ থেকেই অনলাইন কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছি। 

বাচ্চাদের কিছু ডিভাইস ম্যানেজ করা সমস্যা ছাড়া আমাদের বড় ধরণের কোন অসুবিধায় পরতে হয়নি। বলা যায় শুরু থেকেই আমরা ভালভাবে কার্যক্রম চালিয়ে নিয়েছি। বর্তমানে আমরা অনেকটাই অভ্যস্ত হয়ে গেছি।
 
তিনিবলেন, প্রতিমাসে সরকারের কাছে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের সম্পৃক্ততার একটি প্রতিবেদন জমা দিতে হয়। স্কুল লেভেল বা প্রাইমারী লেভেলে অনলাইন কার্যক্রম একদম নতুন একটা বিষয়। যারা ব্যবহার শুরু করেছে তারা বিষয়টাকে ভালভাবেই নিয়েছে।
 
তিনি মনে করেন, মোবাইল বা টেকনোলজীতে আসক্ত হওয়াটা এখন খুবই স্বাভাকি একটা বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। এটা অনলাইন ক্লাসের কারণে হয়েছে এটা ঠিক নয়। এমুহুর্তে শিক্ষার সকল কার্যক্রমই মোবাইল ভিত্তিক হয়ে গেছে। 

এখন অনেকক্ষণ মোবাইল ব্যবহারের কারনে তাদের উপর যে চাপের সৃষ্টি হচ্ছে তা আমরা যথাসম্ভব কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। এখন পিতামাতাকে ধরে নিতে হবে যে এটা শিক্ষার একটা অংশ। সেটাকে পজিটিভলি চিন্তা করতে হবে। তাই খুব ক্লোজলি বাচ্চাদের মনিটরিং করতে হবে। এই সংকট আরো কতদিন যাবে তা অনিশ্চিত। 

সেক্ষেত্রে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহন করেছে। এই তিন মাসের মধ্যেও যদি সম্ভব হয়। তাহলেও ছোট সিলেবাসে পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা সরকারের মাথায়ও আছে।
 

এই বিভাগের আরো খবর