Logo
Logo
×

বিশেষ সংবাদ

অবশেষে সংস্কার হচ্ছে ওসমান আলী স্টেডিয়াম

Icon

লতিফ রানা

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৩, ০৯:০৭ পিএম

অবশেষে সংস্কার হচ্ছে ওসমান আলী স্টেডিয়াম
Swapno

 

# আড়াইশত কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে : প্রতিমন্ত্রী
# ২০০৪-এ আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ম্যাচে যাত্রা শুরু
# ২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভারত টেস্ট ম্যাচই সর্বশেষ ম্যাচ
# হঠাৎ ভিতরে তাকালে কোন জলাশয় বা নর্দমাযুক্ত ডোবা মনে হবে

 

 

ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)’র অনুমোদিত অন্যতম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম নারায়ণগঞ্জের খান বাহাদুর ওসমান আলী স্টেডিয়াম। যা নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লায় অবস্থিত। তাই একে অনেকে আবার ফতুল্লা স্টেডিয়াম নামেও চেনে। স্টেডিয়ামটি নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের প্রথম পুরুষ এবং নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের দাদা খান বাহাদুর ওসমান আলীর নামে এই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয়।

 

২৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন আন্তর্জাতিক এই ভেন্যুটিতে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপ, বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার স্মরণীয় টেস্টসহ বেশ কিছু হাইভোল্টেজ ম্যাচের সাক্ষী হয়ে আছে। কিন্তু ২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভারত টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচের পর জলাবদ্ধতার কারণে খেলা সম্ভব হয়নি বাংলাদেশের বিপক্ষে ক্রিকেট বিশ্বের পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার প্রস্তুতি ম্যাচ। পণ্ড হয়ে যায় সে ম্যাচটি। সেই থেকে ডোবায় পরিণত হওয়া এই আন্তর্জাতিক মর্যাদা পাওয়া স্টেডিয়ামে খেলা সম্ভব হয়নি আর কোন ম্যাচ।

 

তবে এবার সুখবর দিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। অযত্ন, অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার ফলে পরিত্যক্ত হয়ে দীর্ঘদিন পানির নিচে তলিয়ে থাকা ফতুল্লার এই স্টেডিয়ামটির সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এর জন্য প্রায় আড়াইশ’ কোটি টাকা বরাদ্দও হয়েছে বলে জানান তিনি। গতকাল শনিবার শেখ রাসেল পার্কে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে মন্ত্রী এমন তথ্য জানান।

 

২০০০ সালে ফতুল্লার রামারবাগ এলাকায় এই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করার পর এই স্টেডিয়ামে ২০০৪-এ আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ম্যাচের মাধ্যমে প্রথম যাত্রা শুরু করে। এর পর ২০০৬ সালের ৯ এপ্রিল বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের মাধ্যমে টেস্ট ম্যাচের যাত্রা শুরু হয়। এই স্টেডিয়ামটি ২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড-পাকিস্তানের প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ এবং ২০১৪ সালে এশিয়া কাপের অন্যতম প্রধান ভেন্যু ছিল।

 

এখানকার আউটার স্টেডিয়ামটি তৈরি করতে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করতে হয়েছে বলে জানা গেছে। এখানে ঢাকা বিভাগীয় ক্রিকেটের আসর, নারায়ণগঞ্জ প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটসহ আরও অন্যান্য আসর বসতো নিয়মিত। এই স্টেডিয়ামে সর্বশেষ ২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভারত টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এর পর থেকেই আর কোন ম্যাচ খেলা সম্ভব হয়নি এই মাঠে। বছরের পর বছর পানিতে তলিয়ে থেকে এখানে বর্তমানে একটি ভুতুড়ে পরিবেশের বিরাজ করছে।

 

মাঠটি সংস্কারের মাধ্যমে আবারও খেলার উপযোগী করে তোলার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠে। বিভিন্ন মিডিয়ায়ও এই বিষয় নিয়ে একাধিক সংবাদ ও প্রতিবেদন প্রচার করা হয়। স্টেডিয়ামের শুধু মূল অংশই নয়, এখানকার আউটার স্টেডিয়ামও আছে পানির নিচে। এখানকার প্যাাভিলিয়নসহ স্টেডিয়ামের পুরু কাঠামোই ধীরে ধীরে ধ্বংসের মুখে পতিত হচ্ছে।

 

ময়লার গন্ধে এর আশেপাশের এলাকা দিয়েও যাতায়াত দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর বর্ষা মৌসুমেতো কথা-ই নেই। তবে এর ভেতরকার পানি বের করার জন্য কখনও কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। এখানকার কর্তৃপক্ষকেও নির্বিকার থাকতে দেখা গেছে। গত প্রায় আট বছর যাবৎ এই স্টেডিয়ামটি পানির নিচে পড়ে থাকলেও বিষয়টি নিয়ে কারও কোন মাথা ব্যাথা নেই বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

 

সূত্র মতে ২০১৫ সালে এই মাঠে সর্বশেষ বাংলাদেশের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল। কিন্তু মাঠটি পানির নিচে তলিয়ে থাকায় অনেকটা বাজেভাবে পণ্ড হয়েছিল এই বহুল প্রত্যাশিত ম্যাচটি। মাঠের সেই পনিতে ডুবে থাকা দৃশ্যটি শুধু নারায়ণগঞ্জ বা বাংলাদেশ নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বাজেভাবে প্রচার হয়েছিল। যা নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য খুবই কষ্টকর ছিল।

 

বর্তমানে এর ভিতরকার দৃশ্যতো আরও ভয়ানক। এর ভিতরকার অবস্থা দেখে কারও বুঝার উপায় নেই যে এটি একটি স্টেডিয়াম। হঠাৎ করে ভিতরে তাকালে কোন জলাশয় বা নর্দমাযুক্ত ডোবা মনে হবে। তাই দীর্ঘদিন পর হলেও বিষয়টি নিয়ে একটি পজিটিভ ঘোষণা আসায় আবারও নতুন করে আশা বাধছে নারায়ণগঞ্জের মানুষ। তবে বিষয়টি যেন দ্রুত দৃশ্যমান হয়ে বাস্তবে রূপ নেয় সেটাই নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রত্যাশা।এস.এ/জেসি
 

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন